বাংলাদেশ-ফ্রান্স সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারত্বে উন্নীত হবে: প্রধানমন্ত্রী

  • Update Time : ১০:৪৪:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / 119

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে পৌঁছাবে। ফ্রান্স আমাদের জন্য কৌশলগত সম্পদ ও উন্নত প্রযুক্তিতে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র খুলে দিচ্ছে।

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রোর সম্মানে আয়োজিত ভোজসভায় শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ইন্দো-প্যাসিফিক এবং এর বাইরেও সকলের অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য কৌশলগত সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যেতে পারে বলে আমি আত্মবিশ্বাসী। বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের একাধিক সংকট মোকাবিলায় আমাদের অংশীদারত্ব একটি অর্থবহ শক্তি হতে পারে। স্বাধীনতার পর থেকে ফ্রান্স বাংলাদেশের বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী। আমরা দায়িত্বশীল ব্যবসা পরিচালনার দিকে আলোকপাত করে একটি শক্তিশালী বাণিজ্য অংশীদারত্ব গড়ে তুলেছি।

ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে যোগদান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে দ্বিপাক্ষিক সফরে আজ রাতে ঢাকায় এসেছেন ম্যাঁক্রো।

এই ভোজসভায় ফরাসি প্রেসিডেন্টকে আতিথ্য দিতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত ও সম্মানিত বোধ করছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি ২০২১ সালের নভেম্বরে এলিসি প্যালেসে আপনার উষ্ণ আতিথেয়তার কথা স্মরণ করছি। আমি আনন্দিত যে আপনি আমার ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের জনগণ আপনাকে (ফরাসি প্রেসিডেন্ট) এবং আপনার প্রতিনিধিদলকে এখানে স্বাগত জানাতে তার সঙ্গে ভোজসভায় যোগ দিয়েছে। ফ্রান্স আমাদের হৃদয় ও কল্পনায় একটি বিশেষ স্থানে রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁরা ফরাসি প্রেসিডেন্টের জন্য বাংলাদেশের অদ্বিতীয় জনপ্রিয় খাবার কাচ্চি বিরিয়ানির স্বাদ নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। উভয় জাতিই আমাদের রন্ধনপ্রণালী, সংস্কৃতি এবং ভাষাগত ঐতিহ্যের জন্য অত্যন্ত গর্বিত। আমাদের দুই জনগোষ্ঠীকে একে অপরের কাছাকাছি আনতে আমাদের দুটি সংস্কৃতির মধ্যে আরও পদ্ধতিগত পন্থা এবং সংমিশ্রণকে উন্নীত করার সময় এসেছে। তাঁর পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফরাসি বিপ্লবের চেতনায় গভীর ভাবে অনুপ্রাণিত ছিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর আত্মনিয়ন্ত্রণের সংগ্রামে স্বাধীনতা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের মূল্যবোধের প্রসারে তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম (১৯৭১ সালের ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে) এর প্রতিফলন ঘটেছে। মি. প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সে আপনি যে সাহসী সংস্কার করেছেন তার জন্য আমরা আপনাকে সাধুবাদ জানাই। আমরা আপনাকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বিশুদ্ধ বাতাসের নিঃশ্বাস হিসাবে দেখি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বাধীনতার আহ্বান আন্দ্রে মারলোর মতো বিশ্ব বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে প্রতিধ্বনিত হয়েছিল যারা আমাদের উদ্দেশ্যে সাধনে লড়াই করার জন্য অনেক তরুণকে সংগঠিত করেছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের জন্য আপনার (ফরাসি প্রেসিডেন্ট) গুরুত্ব আরোপ মূলত আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ভোজ সভাস্থলে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফুলের তোড়া দিয়ে ম্যাঁক্রোকে স্বাগত জানান। এ সময় জাতির পিতার ছোট কন্য ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। পিঁয়াজুসহ ধুমায়িত ইলিশ এবং সমুচা, স্যুপ, রুটি এবং মাখন দিয়ে ম্যাঁক্রোকে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়। ম্যাক্রোর খাদ্য তালিকায় প্রধান উপাদান ছিল খাসির মাংসের কাচ্চি বিরিয়ানি, গরুর কাবাব, চিকেন কোর্মা, ঐতিহ্যবাহী লুচি ও রোস্টেড লবস্টার। ডেজার্ট আইটেমের মধ্যে ছিল পাটি সাপটা পিঠা, মিষ্টি দই, রসগোল্লা, তাজা ফল, পানীয় ও আনারের জুস, তাজা জুস, জল, কোমল পানীয়, চা ও কফি। বাসস

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বাংলাদেশ-ফ্রান্স সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারত্বে উন্নীত হবে: প্রধানমন্ত্রী

Update Time : ১০:৪৪:১৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ ও ফ্রান্সের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একটি কৌশলগত অংশীদারিত্বে পৌঁছাবে। ফ্রান্স আমাদের জন্য কৌশলগত সম্পদ ও উন্নত প্রযুক্তিতে সহযোগিতার নতুন ক্ষেত্র খুলে দিচ্ছে।

হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাতে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁক্রোর সম্মানে আয়োজিত ভোজসভায় শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ইন্দো-প্যাসিফিক এবং এর বাইরেও সকলের অভিন্ন সমৃদ্ধির জন্য কৌশলগত সম্পর্কের দিকে এগিয়ে যেতে পারে বলে আমি আত্মবিশ্বাসী। বর্তমান বিশ্বে যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন ও জীবনযাত্রার ব্যয়ের একাধিক সংকট মোকাবিলায় আমাদের অংশীদারত্ব একটি অর্থবহ শক্তি হতে পারে। স্বাধীনতার পর থেকে ফ্রান্স বাংলাদেশের বিশ্বস্ত উন্নয়ন সহযোগী। আমরা দায়িত্বশীল ব্যবসা পরিচালনার দিকে আলোকপাত করে একটি শক্তিশালী বাণিজ্য অংশীদারত্ব গড়ে তুলেছি।

ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনে যোগদান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে দ্বিপাক্ষিক সফরে আজ রাতে ঢাকায় এসেছেন ম্যাঁক্রো।

এই ভোজসভায় ফরাসি প্রেসিডেন্টকে আতিথ্য দিতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত ও সম্মানিত বোধ করছেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি ২০২১ সালের নভেম্বরে এলিসি প্যালেসে আপনার উষ্ণ আতিথেয়তার কথা স্মরণ করছি। আমি আনন্দিত যে আপনি আমার ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছেন। বাংলাদেশের জনগণ আপনাকে (ফরাসি প্রেসিডেন্ট) এবং আপনার প্রতিনিধিদলকে এখানে স্বাগত জানাতে তার সঙ্গে ভোজসভায় যোগ দিয়েছে। ফ্রান্স আমাদের হৃদয় ও কল্পনায় একটি বিশেষ স্থানে রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁরা ফরাসি প্রেসিডেন্টের জন্য বাংলাদেশের অদ্বিতীয় জনপ্রিয় খাবার কাচ্চি বিরিয়ানির স্বাদ নেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন। উভয় জাতিই আমাদের রন্ধনপ্রণালী, সংস্কৃতি এবং ভাষাগত ঐতিহ্যের জন্য অত্যন্ত গর্বিত। আমাদের দুই জনগোষ্ঠীকে একে অপরের কাছাকাছি আনতে আমাদের দুটি সংস্কৃতির মধ্যে আরও পদ্ধতিগত পন্থা এবং সংমিশ্রণকে উন্নীত করার সময় এসেছে। তাঁর পিতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফরাসি বিপ্লবের চেতনায় গভীর ভাবে অনুপ্রাণিত ছিলেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু তাঁর আত্মনিয়ন্ত্রণের সংগ্রামে স্বাধীনতা, সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের মূল্যবোধের প্রসারে তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম (১৯৭১ সালের ৭ মার্চে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে) এর প্রতিফলন ঘটেছে। মি. প্রেসিডেন্ট, ফ্রান্সে আপনি যে সাহসী সংস্কার করেছেন তার জন্য আমরা আপনাকে সাধুবাদ জানাই। আমরা আপনাকে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বিশুদ্ধ বাতাসের নিঃশ্বাস হিসাবে দেখি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বাধীনতার আহ্বান আন্দ্রে মারলোর মতো বিশ্ব বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে প্রতিধ্বনিত হয়েছিল যারা আমাদের উদ্দেশ্যে সাধনে লড়াই করার জন্য অনেক তরুণকে সংগঠিত করেছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, কৌশলগত স্বায়ত্তশাসনের জন্য আপনার (ফরাসি প্রেসিডেন্ট) গুরুত্ব আরোপ মূলত আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ‘সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, কারো সঙ্গে বৈরিতা নয়’এর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

ভোজ সভাস্থলে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফুলের তোড়া দিয়ে ম্যাঁক্রোকে স্বাগত জানান। এ সময় জাতির পিতার ছোট কন্য ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানা উপস্থিত ছিলেন। পিঁয়াজুসহ ধুমায়িত ইলিশ এবং সমুচা, স্যুপ, রুটি এবং মাখন দিয়ে ম্যাঁক্রোকে নৈশভোজে আপ্যায়িত করা হয়। ম্যাক্রোর খাদ্য তালিকায় প্রধান উপাদান ছিল খাসির মাংসের কাচ্চি বিরিয়ানি, গরুর কাবাব, চিকেন কোর্মা, ঐতিহ্যবাহী লুচি ও রোস্টেড লবস্টার। ডেজার্ট আইটেমের মধ্যে ছিল পাটি সাপটা পিঠা, মিষ্টি দই, রসগোল্লা, তাজা ফল, পানীয় ও আনারের জুস, তাজা জুস, জল, কোমল পানীয়, চা ও কফি। বাসস