ভারতের নাম বদলাতে কত টাকা খরচ হতে পারে?

  • Update Time : ১০:১৩:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / 128

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ‘ইন্ডিয়া’ নাম বাদ দিতে চায়, এমন গুঞ্জন বেশ আগে থেকেই প্রচলিত। সম্প্রতি ভারতীয় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দুটি নথি সামনে আসতেই এই জল্পনার পালে নতুন করে হাওয়া বইতে শুরু করেছে।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শক্তিধর দেশ ভারত। দেশটির ইংরেজি নাম ‘ইন্ডিয়া’। দেশের নাম ভারত নাকি ইন্ডিয়া? কোনটা থাকবে, নাকি দুটোই? অবশ্য দেশটির সংবিধানে বর্তমানে ইন্ডিয়া ও ভারত দুটি নামই উল্লেখ আছে। শেষ পর্যন্ত যদি বিজেপি সরকার দেশের নাম পরিবর্তন করেই তাহলে কত টাকা খরচ হবে, সে বিষয়াটিও আলোচনায় আসছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টিবিষয়ক আইনজীবী ও ব্লগার ড্যারেন অলিভার এক বিশেষ মডেল ব্যবহার করে ভারতের নাম পরিবর্তন করলে কত টাকা খরচ হতে পারে তার একটি হিসাব দিয়েছেন।

তার মতে, শেষ পর্যন্ত যদি সত্যিই নাম পরিবর্তন করা হয়, তাহলে ভারতকে একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। দেশের নথিপত্র, বই-পুস্তক, অনলাইন বা ডিজিটাল জগতের অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হবে। আর এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রায় ১৪ হাজার কোটি ভারতীয় রুপি খরচ হতে পারে। যার পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় হিসাব করলে দাঁড়ায় প্রায় ১৮ হাজার ৪৮ লাখ কোটি টাকা।

২০২৩ সালের ৩১ মার্চ ভারতের সবশেষ অর্থবছর শেষ হয়েছে। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে প্রায় ২৩ লাখ ৮৪ হাজার কোটি রুপি রাজস্ব সংগ্রহ করেছে ভারত সরকার। ফলে ১৪ হাজার কোটি রুপি খরচ করা বিজেপি সরকারের জন্য তেমন বড় কোনো বিষয় না।

তবে দেশের নাম পরিবর্তনের কারণে কয়েক শতাব্দী ধরে গড়ে উঠা ভারতের ব্র্যান্ড ভ্যালু মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এক এক্সবার্তায় কংগ্রেস নেতা শশি থারু বলেন, ইন্ডিয়া নাম বাদ দেওয়া হলে বহু বছর ধরে গড়ে উঠা ব্র্যান্ড ভ্যালুর অনেক ক্ষতি হবে। আর এ ক্ষতির পরিমাণ এত বেশি যে তা পরিমাপ করা অসম্ভব।

বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম টাইমস নাওয়ের বরাতে বলা হয়, আগামী ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে দেশের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে একটি রেজুলেশন আনতে পারে নরেন্দ্র মোদির সরকার। ওই রেজুলেশনে দেশটির নাম আনুষ্ঠানিকভাবে শুধু ভারত করা হতে পারে।

সংবাদমাধ্যম টাইমস নাও জানায়, আসন্ন জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশ্ব নেতাদের নৈশভোজে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে আয়োজক দেশটির কর্মকর্তারা। ওই নিমন্ত্রণপত্রে ‘প্রেসিডেন্ট অব ভারতের’ পক্ষে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এ ধরনের নিমন্ত্রণপত্রে আগে ‘প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়া’ লেখা হতো।

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর নথি নিয়ে আলোচনার রেশ কাটতে না কাটতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাষ্ট্রীয় নথিতে ‘প্রাইম মিনিস্টার অব ভারত’ লেখা আরেকটি নথি সামনে আসে। নাম বদলের এই জল্পনার মধ্যেই নতুন মাত্রা যোগ করে মোদির নতুন পরিচয়ে লেখা এই নথি।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ভারতের নাম বদলাতে কত টাকা খরচ হতে পারে?

Update Time : ১০:১৩:১৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার ‘ইন্ডিয়া’ নাম বাদ দিতে চায়, এমন গুঞ্জন বেশ আগে থেকেই প্রচলিত। সম্প্রতি ভারতীয় রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর দুটি নথি সামনে আসতেই এই জল্পনার পালে নতুন করে হাওয়া বইতে শুরু করেছে।

দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম শক্তিধর দেশ ভারত। দেশটির ইংরেজি নাম ‘ইন্ডিয়া’। দেশের নাম ভারত নাকি ইন্ডিয়া? কোনটা থাকবে, নাকি দুটোই? অবশ্য দেশটির সংবিধানে বর্তমানে ইন্ডিয়া ও ভারত দুটি নামই উল্লেখ আছে। শেষ পর্যন্ত যদি বিজেপি সরকার দেশের নাম পরিবর্তন করেই তাহলে কত টাকা খরচ হবে, সে বিষয়াটিও আলোচনায় আসছে।

দক্ষিণ আফ্রিকার ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টিবিষয়ক আইনজীবী ও ব্লগার ড্যারেন অলিভার এক বিশেষ মডেল ব্যবহার করে ভারতের নাম পরিবর্তন করলে কত টাকা খরচ হতে পারে তার একটি হিসাব দিয়েছেন।

তার মতে, শেষ পর্যন্ত যদি সত্যিই নাম পরিবর্তন করা হয়, তাহলে ভারতকে একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। দেশের নথিপত্র, বই-পুস্তক, অনলাইন বা ডিজিটাল জগতের অনেক কিছু পরিবর্তন করতে হবে। আর এসব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রায় ১৪ হাজার কোটি ভারতীয় রুপি খরচ হতে পারে। যার পরিমাণ বাংলাদেশি টাকায় হিসাব করলে দাঁড়ায় প্রায় ১৮ হাজার ৪৮ লাখ কোটি টাকা।

২০২৩ সালের ৩১ মার্চ ভারতের সবশেষ অর্থবছর শেষ হয়েছে। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে প্রায় ২৩ লাখ ৮৪ হাজার কোটি রুপি রাজস্ব সংগ্রহ করেছে ভারত সরকার। ফলে ১৪ হাজার কোটি রুপি খরচ করা বিজেপি সরকারের জন্য তেমন বড় কোনো বিষয় না।

তবে দেশের নাম পরিবর্তনের কারণে কয়েক শতাব্দী ধরে গড়ে উঠা ভারতের ব্র্যান্ড ভ্যালু মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা। এক এক্সবার্তায় কংগ্রেস নেতা শশি থারু বলেন, ইন্ডিয়া নাম বাদ দেওয়া হলে বহু বছর ধরে গড়ে উঠা ব্র্যান্ড ভ্যালুর অনেক ক্ষতি হবে। আর এ ক্ষতির পরিমাণ এত বেশি যে তা পরিমাপ করা অসম্ভব।

বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) সংবাদমাধ্যম টাইমস নাওয়ের বরাতে বলা হয়, আগামী ১৮ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর পার্লামেন্টের বিশেষ অধিবেশনে দেশের নাম পরিবর্তনের বিষয়ে একটি রেজুলেশন আনতে পারে নরেন্দ্র মোদির সরকার। ওই রেজুলেশনে দেশটির নাম আনুষ্ঠানিকভাবে শুধু ভারত করা হতে পারে।

সংবাদমাধ্যম টাইমস নাও জানায়, আসন্ন জি-২০ সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশ্ব নেতাদের নৈশভোজে অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণপত্র পাঠিয়েছে আয়োজক দেশটির কর্মকর্তারা। ওই নিমন্ত্রণপত্রে ‘প্রেসিডেন্ট অব ভারতের’ পক্ষে নৈশভোজের আয়োজন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। এ ধরনের নিমন্ত্রণপত্রে আগে ‘প্রেসিডেন্ট অব ইন্ডিয়া’ লেখা হতো।

রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর নথি নিয়ে আলোচনার রেশ কাটতে না কাটতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির রাষ্ট্রীয় নথিতে ‘প্রাইম মিনিস্টার অব ভারত’ লেখা আরেকটি নথি সামনে আসে। নাম বদলের এই জল্পনার মধ্যেই নতুন মাত্রা যোগ করে মোদির নতুন পরিচয়ে লেখা এই নথি।