১২ জেলাকে আজ গৃহহীন মুক্ত ঘোষণা করবেন প্রধানমন্ত্রী
- Update Time : ১০:২০:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ অগাস্ট ২০২৩
- / 113
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে আজ (৯ আগস্ট) ২২ হাজার ১০১টি বাড়ি হস্তান্তরের মধ্যদিয়ে আরও ১২টি জেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন। এই ১২টি জেলাসহ সম্পূর্ণ গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত জেলার মোট সংখ্যা দাঁড়াবে ২১টিতে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারগুলোর মধ্যে বাড়ি বিতরণের ঘোষণা দেবেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মোহাম্মদ তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘আশ্রয়ণ প্রকল্প বিশ্বে একটি অনন্য প্রকল্প, কারণ পৃথিবীর আর কোনো দেশে এতো বিপুল সংখ্যক ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের মাঝে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বাড়ি বিতরণ করা হয়নি।’
আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের চতুর্থ পর্যায়ের আওতায় এটি দ্বিতীয় ধাপ। গত ২২ মার্চ প্রথম ধাপে ৩৯ হাজার ৩৬৫টি বাড়ি বিতরণ করা হয়। ২০২১ সালের ২৩ জানুয়ারি প্রথম পর্যায়ে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, একই বছরের ২০ জুন দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫৩ হাজার ৩৩০টি এবং মুজিববর্ষের সময় তৃতীয় পর্যায়ে দুই ধাপে মোট ৫৯ হাজার ১৩৩টি বাড়ি বিতরণ করা হয়েছে। আজ বুধবার আরও ২২ হাজার ১০১টি ঘর বিতরণের মাধ্যমে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের অধীনে মোট সংখ্যা দাঁড়াবে দুই লাখ ৩৮ হাজার ৮৫১টি।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে তিন উপজেলায় ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সুবিধাগ্রহীতাদের মাঝে বাড়িসহ জমি হস্তান্তর করবেন।
প্রধানমন্ত্রী খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার বারাসত সোনার বাংলা পল্লী আশ্রয়ণ প্রকল্প, পাবনার বেড়া উপজেলার চাকলা আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প এবং নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আমানউল্লাহপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের সুবিধাগ্রহীতাদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করবেন। প্রকল্পের আওতায় ভূমিহীন ও গৃহহীনরা দুই দশমিক দুই শতাংশ জমিতে ভালো মানের টিনশেড আধা-পাকা বাড়ি পাবেন।
তোফাজ্জেল হোসেন মিয়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ময়মনসিংহ, শেরপুর, দিনাজপুর, ঠাকুরগাঁও, নওগাঁ, নাটোর, পাবনা, কুষ্টিয়া, পিরোজপুর ও ঝালকাঠিকে গৃহহীন-ভূমিহীন মুক্ত জেলা হিসেবে ঘোষণা করবেন। এর আগে তিনি পঞ্চগড় ও মাগুরাসহ আরও নয়টি জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীন মুক্ত জেলা ঘোষণা করেন। নদীভাঙন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনো কারণে এসব এলাকায় কেউ গৃহহীন ও ভূমিহীন হলে তাদের জমিসহ বাড়ি দেওয়া হবে। জমির মালিকানা স্বামী-স্ত্রী উভয়কে দেওয়া হয় এবং জমির রেজিস্ট্রেশন ও মিউটেশনও স্বামী-স্ত্রীর নামে দেওয়া হয়। সরকার শুধু খাস জমিতে প্রকল্পের জন্য বাড়ি নির্মাণ করছে না, বাড়ি নির্মাণের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কাছ থেকে জমি কেনা হচ্ছে। এ লক্ষ্যে ব্যক্তি পর্যায়ের অনুদানও পাওয়া যায়।’
যাদের বাড়ি নেই, জমি আছে, তাদের জন্য সরকার কবে থেকে বাড়ি নির্মাণ শুরু করবে—এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, ‘এখন সরকার এই প্রকল্পের আওতায় শুধু ভূমিহীন ও গৃহহীনদের বাড়ি দিচ্ছে এবং এই প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর যাদের বাড়ি নেই বা যাদের বাড়ি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে, তাদের জন্য বাড়ি নির্মাণ শুরু করবে।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে গৃহহীনদের পুনর্বাসন কর্মসূচি চালু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর পদাঙ্ক অনুসরণ করে তাঁর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের বাড়ি ও জমির মালিকানা দেওয়ার উদ্যোগ নেন। আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ১৯৯৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত মোট আট লাখ ২৯ হাজার ৬০৭ পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। পুনর্বাসিত মানুষের সংখ্যা ৪১ লাখ ৪৮ হাজার ৩৫ জন (আনুমানিক একটি পরিবারে পাঁচজন ব্যক্তি হিসেবে)। বাসস