খাদ্য মজুতের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা ১৪ বছরের কারাদণ্ড

  • Update Time : ০৯:১৪:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩
  • / 134

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কোনো ব্যক্তি সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত পরিমাণের অধিক পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মজুত করিলে বা মজুত সংক্রান্ত সরকারের কোনো নির্দেশনা অমান্য করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনুর্ধ্ব ১৪ বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।

মজুতদারির বিষয়ে এমন কঠোর বিধান রেখে ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন ২০২৩’ আইন মন্ত্রিসভায় উঠছে সোমবার। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

প্রস্তাবিত আইনে উৎপাদন বা বিপণন সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য হইতে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে উক্তরুপ জাতের উপজাত পণ্য হিসেবে উল্লেখ না করিয়া ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করেন; খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে হইতে কোনো স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অপসারণ করিয়া বা পরিবর্তন করিয়া উৎপাদন করেন বা বিপণন করেন; বা খাদ্যদ্রব্যের সহিত মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উপাদন মিশ্রণ করিয়া উৎপাদন করেন বা বিপণন করেন; খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ইস্যূকৃত খাদ্যশষ্য ব্যবসার লাইসেন্স ব্যতীত বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স দ্বারা কোনো ব্যবসা পরিচালনা বা লাইসেন্সে উল্লিখিত পরিমাণের অধিক পরিমাণ খাদ্যশষ্য বিপণন করেন তাহা হইলে উহা হবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনুর্ধ্ব ২ বছর কারাদণ্ড বা অনুর্ধ্ব ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

সরবরাহ সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি পুরাতন খাদ্যদ্রব্য পলিমিং বা অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্যের সহিত মিশ্রণ করিয়া; সরকার কর্তৃক খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহকালে সরকারি গুদামে রক্ষিত খাদ্যদ্রব্য বৈধ বা অবৈধভাবে সংগ্রহ করিয়া, দেশে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্য বা সরকারি গুদামের পুরাতন বা বিতরণকৃত সিল বা বিতরণ করা হয়েছে এইরুপ চিহৃযুক্ত খাদ্যদ্রব্য ভর্তি বস্তা বা ব্যাগ; আংশিক বা সম্পূর্ণরুপে খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণগত বা গুনগত পরিবর্তন করিয়া অথবা অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি গুদামে সরবরাহ করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি অনুর্ধ্ব ২ বছরের কারাদণ্ড বা অনুর্ধ্ব ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

বিতরণ, স্থানান্তর, ক্রয় বা বিক্রয় সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়ে আইনে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত বিতরণকৃত সিল বা বিতরণ করা হইয়াছে এইরুপ চিন্তাযুক্ত সিল ব্যতীত সরকারি গুদামের খাদ্যদ্রব্য ভর্তি বস্তা বা ব্যাগ বিতরণ, স্থানান্তর, ক্রয় বা বিক্রয় করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি অনুর্ধ্ব ২ বছরের কারাদণ্ড বা অনুর্ধ্ব ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

বিভ্রান্তি সৃষ্টি সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন সম্পর্কিত কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ, প্রচার বা বিতরণ করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি ৫ বছর কারাদণ্ড বা অনুর্ধ্ব ১৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

কর্তব্য পালনে বিরত থাকা বা কর্তব্য পালনে বাধা প্রদানের বিষয়ে বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন শ্রমিক, কর্মচারী, ঠিকাদার, মিল মালিক, ডিলার বা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্য ঊৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন বা এতদ্সংক্রান্ত কোনো কর্মসম্পাদনে নিজে বিরত থাকিলে বা সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তিকে তাহার কর্তব্য পালনে বিরত থাকিতে বাধ্য বা প্ররোচিত করিলে বা তাহাদের মধ্যে অসন্তোষ বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করিলে, উহা হইবে একটি অপরাধ।’ এই অপারাধে ১ বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

এর আগে ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল মন্ত্রিসভা নীতিগতভাবে এই খসড়া আইনটির অনুমোদন দেয় এবং এটি আরও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


খাদ্য মজুতের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড বা ১৪ বছরের কারাদণ্ড

Update Time : ০৯:১৪:৪৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ এপ্রিল ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কোনো ব্যক্তি সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপন দ্বারা নির্ধারিত পরিমাণের অধিক পরিমাণ খাদ্যদ্রব্য মজুত করিলে বা মজুত সংক্রান্ত সরকারের কোনো নির্দেশনা অমান্য করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বা অনুর্ধ্ব ১৪ বৎসরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবে।

মজুতদারির বিষয়ে এমন কঠোর বিধান রেখে ‘খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন (ক্ষতিকর কার্যক্রম প্রতিরোধ) আইন ২০২৩’ আইন মন্ত্রিসভায় উঠছে সোমবার। সংশ্লিষ্ট সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

প্রস্তাবিত আইনে উৎপাদন বা বিপণন সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো অনুমোদিত জাতের খাদ্যশস্য হইতে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যকে উক্তরুপ জাতের উপজাত পণ্য হিসেবে উল্লেখ না করিয়া ভিন্ন বা কাল্পনিক নামে বিপণন করেন; খাদ্যদ্রব্যের মধ্যে হইতে কোনো স্বাভাবিক উপাদানকে সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে অপসারণ করিয়া বা পরিবর্তন করিয়া উৎপাদন করেন বা বিপণন করেন; বা খাদ্যদ্রব্যের সহিত মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর কৃত্রিম উপাদন মিশ্রণ করিয়া উৎপাদন করেন বা বিপণন করেন; খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ইস্যূকৃত খাদ্যশষ্য ব্যবসার লাইসেন্স ব্যতীত বা মেয়াদোত্তীর্ণ লাইসেন্স দ্বারা কোনো ব্যবসা পরিচালনা বা লাইসেন্সে উল্লিখিত পরিমাণের অধিক পরিমাণ খাদ্যশষ্য বিপণন করেন তাহা হইলে উহা হবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনুর্ধ্ব ২ বছর কারাদণ্ড বা অনুর্ধ্ব ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

সরবরাহ সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি পুরাতন খাদ্যদ্রব্য পলিমিং বা অন্য কোনো খাদ্যদ্রব্যের সহিত মিশ্রণ করিয়া; সরকার কর্তৃক খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহকালে সরকারি গুদামে রক্ষিত খাদ্যদ্রব্য বৈধ বা অবৈধভাবে সংগ্রহ করিয়া, দেশে উৎপাদিত খাদ্যদ্রব্যের পরিবর্তে আমদানিকৃত খাদ্যদ্রব্য বা সরকারি গুদামের পুরাতন বা বিতরণকৃত সিল বা বিতরণ করা হয়েছে এইরুপ চিহৃযুক্ত খাদ্যদ্রব্য ভর্তি বস্তা বা ব্যাগ; আংশিক বা সম্পূর্ণরুপে খাদ্যদ্রব্যের পরিমাণগত বা গুনগত পরিবর্তন করিয়া অথবা অন্য কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে সরকারি গুদামে সরবরাহ করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি অনুর্ধ্ব ২ বছরের কারাদণ্ড বা অনুর্ধ্ব ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হইবেন।

বিতরণ, স্থানান্তর, ক্রয় বা বিক্রয় সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়ে আইনে বলা হয়, কোনো ব্যক্তি খাদ্য অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত বিতরণকৃত সিল বা বিতরণ করা হইয়াছে এইরুপ চিন্তাযুক্ত সিল ব্যতীত সরকারি গুদামের খাদ্যদ্রব্য ভর্তি বস্তা বা ব্যাগ বিতরণ, স্থানান্তর, ক্রয় বা বিক্রয় করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তার জন্য তিনি অনুর্ধ্ব ২ বছরের কারাদণ্ড বা অনুর্ধ্ব ১০ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

বিভ্রান্তি সৃষ্টি সংক্রান্ত অপরাধ ও দণ্ডের বিষয়ে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্যের উৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ ও বিপণন সম্পর্কিত কোনো মিথ্যা তথ্য বা বিবৃতি তৈরি, মুদ্রণ, প্রকাশ, প্রচার বা বিতরণ করিলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি ৫ বছর কারাদণ্ড বা অনুর্ধ্ব ১৫ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডনীয় হবেন।

কর্তব্য পালনে বিরত থাকা বা কর্তব্য পালনে বাধা প্রদানের বিষয়ে বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন শ্রমিক, কর্মচারী, ঠিকাদার, মিল মালিক, ডিলার বা সরকার কর্তৃক নিযুক্ত কোনো ব্যক্তি খাদ্যদ্রব্য ঊৎপাদন, মজুত, স্থানান্তর, পরিবহণ, সরবরাহ, বিতরণ, বিপণন বা এতদ্সংক্রান্ত কোনো কর্মসম্পাদনে নিজে বিরত থাকিলে বা সম্পৃক্ত কোনো ব্যক্তিকে তাহার কর্তব্য পালনে বিরত থাকিতে বাধ্য বা প্ররোচিত করিলে বা তাহাদের মধ্যে অসন্তোষ বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করিলে, উহা হইবে একটি অপরাধ।’ এই অপারাধে ১ বছরের কারাদণ্ড বা ৫ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে।

এর আগে ২০২২ সালের ১৮ এপ্রিল মন্ত্রিসভা নীতিগতভাবে এই খসড়া আইনটির অনুমোদন দেয় এবং এটি আরও যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।