তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই : আইনমন্ত্রী

  • Update Time : ০৭:৩০:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৩
  • / 147

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আদালত দ্বারা অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে শনিবার (২১ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। এর আগে সেখানে তিনি পদোন্নতিপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজদের দশম ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, সেই সরকারের সময় জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনের যেসব সহযোগিতা লাগে এবং যেসব সরকারি বিভাগ তাদের আওতায় থাকে, সেগুলো নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় চলবে। আর সরকার ডে টু ডে রুটিন কাজ করবে। সেই আদলেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে কথা বলা হচ্ছে, সেটা আদালত দ্বারা অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। এই রায়ের ভিত্তিতে পঞ্চদশ সংশোধনীও করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরে আসার সম্ভাবনা আমি দেখি না।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বিচারকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে আইনজীবী ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও তার ক্লায়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হন। কারণ বিচারকের হাতে কলম থাকে। এটা আইনজীবীদের মাথায় রাখতে হবে। এ কারণে বিচারকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে।’ আইনমন্ত্রী বিচারকদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিচার হবে। যারা নির্দোষ, তাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। কারও দাবির মুখে কোনো বিচারককে বদলি করা হবে না। এটা আমরা কিছুতেই করব না। কারণ এতে ন্যায়বিচার ব্যাহত হবে।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বড় পরিচয় আমি একজন আইনজীবী। আমি মনে করি একজন বিচারকের প্রতি সম্মানটা স্বাভাবিকভাবে আসা উচিত। বার ও বেঞ্চের ভালো সম্পর্ক ছাড়া সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার পায় না। সম্প্রতি বার ও বেঞ্চের মধ্যে কিছুটা অসহিষ্ণুতা লক্ষ করছি। এটা কাম্য নয়।’ আনিসুল হক বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, ‘সমস্যা সমাধানে বিচারকদের বড় ভাইয়ের ভূমিকা পালন করতে হবে। তাহলে সমস্যা কমে আসবে। সমস্যা হলে তা ব্যক্তিপর্যায়ে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে বিচারক ও আইনজীবীদের।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীদের বাগ-বিতণ্ডার ঘটনা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা বলছেন, বারবার ঘটছে। আমি বলব, এখন যেমন বিষয়টি মিডিয়ার নজরে আসছে, আগে কিন্তু এমনটি ছিল না। এরকম ঘটনা বারে ঘটেই থাকে। মাঝে মাঝে এমন হয়, বারের যারা সিনিয়র আছেন, তারাই এটা শেষ করে দেন। কখনও কখনও এটা বিজ্ঞ জজ শেষ করে দেন। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, একটি ঘটনা তার অধিক্ষেত্রের অতিরিক্ত ঘটে গেছে। এই সমস্যা সমাধান করার জন্য আমরা সচেষ্ট।’

কর্মশালার উদ্বোধন শেষে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো গুজবে কান দেবেন না।’

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই : আইনমন্ত্রী

Update Time : ০৭:৩০:১৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা আদালত দ্বারা অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। তাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারে ফিরে যাওয়ার সুযোগ নেই। রাজধানীর বিচার প্রশাসন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে এক অনুষ্ঠানে শনিবার (২১ জানুয়ারি) সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। এর আগে সেখানে তিনি পদোন্নতিপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজদের দশম ওরিয়েন্টেশন কোর্সের উদ্বোধন ঘোষণা করেন।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় থাকে, সেই সরকারের সময় জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য নির্বাচন কমিশনের যেসব সহযোগিতা লাগে এবং যেসব সরকারি বিভাগ তাদের আওতায় থাকে, সেগুলো নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনায় চলবে। আর সরকার ডে টু ডে রুটিন কাজ করবে। সেই আদলেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে কথা বলা হচ্ছে, সেটা আদালত দ্বারা অবৈধ ঘোষিত হয়েছে। এই রায়ের ভিত্তিতে পঞ্চদশ সংশোধনীও করা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরে আসার সম্ভাবনা আমি দেখি না।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘বিচারকদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করলে আইনজীবী ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও তার ক্লায়েন্ট ক্ষতিগ্রস্ত হন। কারণ বিচারকের হাতে কলম থাকে। এটা আইনজীবীদের মাথায় রাখতে হবে। এ কারণে বিচারকদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতে হবে।’ আইনমন্ত্রী বিচারকদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘যারা অপরাধ করেছে, তাদের বিচার হবে। যারা নির্দোষ, তাদের ভয়ের কোনো কারণ নেই। কারও দাবির মুখে কোনো বিচারককে বদলি করা হবে না। এটা আমরা কিছুতেই করব না। কারণ এতে ন্যায়বিচার ব্যাহত হবে।’

আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার বড় পরিচয় আমি একজন আইনজীবী। আমি মনে করি একজন বিচারকের প্রতি সম্মানটা স্বাভাবিকভাবে আসা উচিত। বার ও বেঞ্চের ভালো সম্পর্ক ছাড়া সাধারণ মানুষ ন্যায়বিচার পায় না। সম্প্রতি বার ও বেঞ্চের মধ্যে কিছুটা অসহিষ্ণুতা লক্ষ করছি। এটা কাম্য নয়।’ আনিসুল হক বিচারকদের উদ্দেশে বলেন, ‘সমস্যা সমাধানে বিচারকদের বড় ভাইয়ের ভূমিকা পালন করতে হবে। তাহলে সমস্যা কমে আসবে। সমস্যা হলে তা ব্যক্তিপর্যায়ে সমাধানের চেষ্টা করতে হবে বিচারক ও আইনজীবীদের।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিচারকের সঙ্গে আইনজীবীদের বাগ-বিতণ্ডার ঘটনা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা বলছেন, বারবার ঘটছে। আমি বলব, এখন যেমন বিষয়টি মিডিয়ার নজরে আসছে, আগে কিন্তু এমনটি ছিল না। এরকম ঘটনা বারে ঘটেই থাকে। মাঝে মাঝে এমন হয়, বারের যারা সিনিয়র আছেন, তারাই এটা শেষ করে দেন। কখনও কখনও এটা বিজ্ঞ জজ শেষ করে দেন। এটা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে, একটি ঘটনা তার অধিক্ষেত্রের অতিরিক্ত ঘটে গেছে। এই সমস্যা সমাধান করার জন্য আমরা সচেষ্ট।’

কর্মশালার উদ্বোধন শেষে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘কোনো গুজবে কান দেবেন না।’