রাশিয়ান হামলার পর বড়দিনে জেলেনস্কি যে বার্তা দিলেন

  • Update Time : ০১:৫৯:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২
  • / 174

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

বড়দিনের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো বিশ্বে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনও তা থেকে দূরে নয়। এমন দিনে রুশ হামলার মুখে জনগণকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবাদী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা আসে খুব চড়ামূল্যে কিন্তু দাসত্বের মূল্য আরও বেশি।’

তার বক্তব্যের আগে শনিবার ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন শহরে রাশিয়ার বিমান হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা। এতে আরও ৬৮ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার কারণে লাখ লাখ ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎ ও জল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলেও জানিয়েছে আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ।

রাশিয়াকে ‘সন্ত্রাসী দেশ’ হিসেবে বর্ণনা করে জেলেনস্কি রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ‘ভীতি প্রদর্শন ও আনন্দের জন্য হত্যা’ করছে বলে অভিযোগ আনেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি মৃতদেহ ও পোড়া গাড়ি পড়ে থাকা রাস্তার ছবি দেখিয়ে বলেন, ‘বিশ্বের অবশ্যই দেখা ও বোঝা উচিত যে আমরা কোন ধরনের মন্দের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।’

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে রাশিয়ার দখল করা একমাত্র আঞ্চলিক শহর ছিল খেরসন; যা গত মাসেই ফের দখল করে নেয় কিয়েভ সেনারা। এর পর থেকেই দিনিপ্রো নদীর বাঁ তীর থেকে শহরটি লক্ষ্য করে হামলা বাড়িয়েছে মস্কো।

ক্রেমলিন তাদের হামলায় বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করার কথা বারবার অস্বীকার করেছে। তবে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি স্বীকার করেন, রুশ সেনারা ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ করে হামলা চালিয়েছে।

বেশিরভাগ ইউক্রেনীয় অর্থডক্স খ্রিস্টান হওয়ায় তারা ক্রিসমাস ইভ বা বড়দিন উদযাপন করে থাকেন ৬ জানুয়ারি। তবে বিশ্বজুড়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ খ্রিস্টানদের সঙ্গে মিল রেখে ২৫ ডিসেম্বরও বড়দিন উদযাপন করছেন।

জেলেনস্কি তার বার্তায় বলেন, ‘যুদ্ধের শুরুতে আমরা সহ্য করেছি। আমরা আক্রমণ, হুমকি, পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল, সন্ত্রাস, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সবই সহ্য করেছি। আসুন এই শীত সহ্য করে নিই, কারণ আমরা জানি আমরা কীসের জন্য লড়াই করছি।

আমরা যথারীতি আমাদের ছুটি উদযাপন করব! আমরা আগের মতো হাসব, আনন্দ করব। পার্থক্য একটাই—আমরা কোনো অলৌকিক ঘটনার জন্য অপেক্ষা করব না বরং আমরা নিজেরাই তা তৈরি করে নেব।’

কিয়েভ থেকে বিবিসির সাংবাদিক হুগো বাচেগা জানান, অনেক ইউক্রেনীয়র জন্য এবারের বড়দিন হবে অন্ধকারে ও ঠান্ডায়। কিন্তু ইউক্রেনীয়রা বলছে যুদ্ধ ১১তম মাসে প্রবেশ করেছে আর এ কষ্টগুলো তাদের আরও শক্তিশালী করেছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


রাশিয়ান হামলার পর বড়দিনে জেলেনস্কি যে বার্তা দিলেন

Update Time : ০১:৫৯:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

বড়দিনের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে পুরো বিশ্বে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনও তা থেকে দূরে নয়। এমন দিনে রুশ হামলার মুখে জনগণকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) এক প্রতিবাদী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতা আসে খুব চড়ামূল্যে কিন্তু দাসত্বের মূল্য আরও বেশি।’

তার বক্তব্যের আগে শনিবার ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় খেরসন শহরে রাশিয়ার বিমান হামলায় ১০ জন নিহত হয়েছে বলে জানান কর্মকর্তারা। এতে আরও ৬৮ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার কারণে লাখ লাখ ইউক্রেনীয় বিদ্যুৎ ও জল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলেও জানিয়েছে আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ।

রাশিয়াকে ‘সন্ত্রাসী দেশ’ হিসেবে বর্ণনা করে জেলেনস্কি রুশ সেনাদের বিরুদ্ধে ‘ভীতি প্রদর্শন ও আনন্দের জন্য হত্যা’ করছে বলে অভিযোগ আনেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া একটি পোস্টে তিনি মৃতদেহ ও পোড়া গাড়ি পড়ে থাকা রাস্তার ছবি দেখিয়ে বলেন, ‘বিশ্বের অবশ্যই দেখা ও বোঝা উচিত যে আমরা কোন ধরনের মন্দের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি।’

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরুর পর থেকে রাশিয়ার দখল করা একমাত্র আঞ্চলিক শহর ছিল খেরসন; যা গত মাসেই ফের দখল করে নেয় কিয়েভ সেনারা। এর পর থেকেই দিনিপ্রো নদীর বাঁ তীর থেকে শহরটি লক্ষ্য করে হামলা বাড়িয়েছে মস্কো।

ক্রেমলিন তাদের হামলায় বেসামরিক মানুষকে লক্ষ্যবস্তু করার কথা বারবার অস্বীকার করেছে। তবে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সম্প্রতি স্বীকার করেন, রুশ সেনারা ইউক্রেনের গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি অবকাঠামো লক্ষ করে হামলা চালিয়েছে।

বেশিরভাগ ইউক্রেনীয় অর্থডক্স খ্রিস্টান হওয়ায় তারা ক্রিসমাস ইভ বা বড়দিন উদযাপন করে থাকেন ৬ জানুয়ারি। তবে বিশ্বজুড়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ খ্রিস্টানদের সঙ্গে মিল রেখে ২৫ ডিসেম্বরও বড়দিন উদযাপন করছেন।

জেলেনস্কি তার বার্তায় বলেন, ‘যুদ্ধের শুরুতে আমরা সহ্য করেছি। আমরা আক্রমণ, হুমকি, পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইল, সন্ত্রাস, ক্ষেপণাস্ত্র হামলা সবই সহ্য করেছি। আসুন এই শীত সহ্য করে নিই, কারণ আমরা জানি আমরা কীসের জন্য লড়াই করছি।

আমরা যথারীতি আমাদের ছুটি উদযাপন করব! আমরা আগের মতো হাসব, আনন্দ করব। পার্থক্য একটাই—আমরা কোনো অলৌকিক ঘটনার জন্য অপেক্ষা করব না বরং আমরা নিজেরাই তা তৈরি করে নেব।’

কিয়েভ থেকে বিবিসির সাংবাদিক হুগো বাচেগা জানান, অনেক ইউক্রেনীয়র জন্য এবারের বড়দিন হবে অন্ধকারে ও ঠান্ডায়। কিন্তু ইউক্রেনীয়রা বলছে যুদ্ধ ১১তম মাসে প্রবেশ করেছে আর এ কষ্টগুলো তাদের আরও শক্তিশালী করেছে।