দেউলিয়া হওয়ার পথে পাকিস্তান!

  • Update Time : ১১:৩৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২
  • / 162

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (এসবিপি) মজুদ গত ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পূর্ববর্তী এক মাসে আরও ৫৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার কমেছে। এসবিপির বর্তমান মজুদ নেমে এসেছে ৬১০ কোটি ডলারে, যা ২০১৪ সাল বা আট বছরের সর্বনিম্ন। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান মজুদ দিয়ে টেনেটুনে এক মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

গত ১২ মাসে এসবিপির মজুদ কমেছে এক হাজার ১৬০ কোটি ডলার। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে দেশটির মজুদ ছিল এক হাজার ৭৭০ কোটি ডলার। আর দেশটির অন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বর্তমান বিদেশি মুদ্রার মজুদের পরিমাণ ৫৯০ কোটি ডলার। অর্থাৎ চলতি মাসের মাঝামাঝি দেশটির মোট বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ নেমে এসেছে এক হাজার ২০০ ডলারে।

দ্য ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা সংকট নতুন নয়। চলতি সংকট কিছুটা কমাতে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে ৬০০ কোটি ডলার ঋণের আলোচনা শুরু করে ইসলামাবাদ। চলতি বছররে শুরুতে তা বাড়িয়ে ৭০০ কোটিতে ডলার করা হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো কিস্তি পাওয়া যায়নি। অথচ দেশটি আইএমএফের কাছ থেকে শিগগির ১১৮ কোটি ডলারের একটি কিস্তি পেতে মরিয়া।

ঋণ নিয়ে আইএমএফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইতোমধ্যে আট দফা বৈঠক করেছেন পাকিস্তানের কর্মকর্তারা। নবম দফা বৈঠকে প্রথম কিস্তি ঋণের ঘোষণা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু কয়েক মাস ধরে বৈঠকটি ঝুলে আছে। এদিকে, আন্তর্জাতিক ঋণদানকারী সংস্থাটির কিছু পূর্বশর্ত এখনও পূরণ করতে পারেনি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ সরকার। ফলে, সংস্থাটিতে থেকে প্রথম কিস্তি ঋণ পাওয়া আরও অনিশ্চিত হয়ে গেছে।

আইএমএফের ঋণ না পেলে বন্ধুপ্রতিম সৌদি আরব ও চীন ঋণ দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা পেতেও বেগ হতে পারে। কিন্তু বর্তমান অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারের দাবি, ওই দুই দেশ থেকে তারা কিছু দিনের মধ্যেই ঋণ পেতে যাচ্ছে।

রাজনৈতিক ও সামরিক অস্থিরতায় জর্জরিত পাকিস্তানকে চলতি অর্থবছরের মধ্যে দুই হাজার ৩০০ কোটি ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এসবিপির গভর্নর জামিল আহমদ মনে করেন, তারা তা পরিশোধ করতে পারবেন।

কিন্তু তা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করেন দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী মিফতা ইসমাইল। তার মতে, বৈদেশিক ঋণ মেটাতে না পেরে পাকিস্তান নিজেকে সহসা দেউলিয়া (ডিফল্ট) ঘোষণা করতে পারে।

অন্যদিকে পাকিস্তানের রেটিং বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) ‘বি’ থেকে আরেক ধাপ কমিয়ে ‘সিসিসি+’-তে নামিয়ে এনেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রেটিং সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল। অর্থাৎ দেশটির আর্থিক অবস্থা ক্রমশ দুর্বলতর হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে পুরো ২০২৩ সাল পাকিস্তানকে সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


দেউলিয়া হওয়ার পথে পাকিস্তান!

Update Time : ১১:৩৩:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের (এসবিপি) মজুদ গত ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পূর্ববর্তী এক মাসে আরও ৫৮ কোটি ৪০ লাখ ডলার কমেছে। এসবিপির বর্তমান মজুদ নেমে এসেছে ৬১০ কোটি ডলারে, যা ২০১৪ সাল বা আট বছরের সর্বনিম্ন। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান মজুদ দিয়ে টেনেটুনে এক মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।

গত ১২ মাসে এসবিপির মজুদ কমেছে এক হাজার ১৬০ কোটি ডলার। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে দেশটির মজুদ ছিল এক হাজার ৭৭০ কোটি ডলার। আর দেশটির অন্য বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর বর্তমান বিদেশি মুদ্রার মজুদের পরিমাণ ৫৯০ কোটি ডলার। অর্থাৎ চলতি মাসের মাঝামাঝি দেশটির মোট বৈদেশিক মুদ্রার মজুদ নেমে এসেছে এক হাজার ২০০ ডলারে।

দ্য ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানের বৈদেশিক মুদ্রা সংকট নতুন নয়। চলতি সংকট কিছুটা কমাতে ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে ৬০০ কোটি ডলার ঋণের আলোচনা শুরু করে ইসলামাবাদ। চলতি বছররে শুরুতে তা বাড়িয়ে ৭০০ কোটিতে ডলার করা হয়েছে। কিন্তু এখনও কোনো কিস্তি পাওয়া যায়নি। অথচ দেশটি আইএমএফের কাছ থেকে শিগগির ১১৮ কোটি ডলারের একটি কিস্তি পেতে মরিয়া।

ঋণ নিয়ে আইএমএফের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ইতোমধ্যে আট দফা বৈঠক করেছেন পাকিস্তানের কর্মকর্তারা। নবম দফা বৈঠকে প্রথম কিস্তি ঋণের ঘোষণা আসার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু কয়েক মাস ধরে বৈঠকটি ঝুলে আছে। এদিকে, আন্তর্জাতিক ঋণদানকারী সংস্থাটির কিছু পূর্বশর্ত এখনও পূরণ করতে পারেনি প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ সরকার। ফলে, সংস্থাটিতে থেকে প্রথম কিস্তি ঋণ পাওয়া আরও অনিশ্চিত হয়ে গেছে।

আইএমএফের ঋণ না পেলে বন্ধুপ্রতিম সৌদি আরব ও চীন ঋণ দেওয়ার যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, তা পেতেও বেগ হতে পারে। কিন্তু বর্তমান অর্থমন্ত্রী ইসহাক দারের দাবি, ওই দুই দেশ থেকে তারা কিছু দিনের মধ্যেই ঋণ পেতে যাচ্ছে।

রাজনৈতিক ও সামরিক অস্থিরতায় জর্জরিত পাকিস্তানকে চলতি অর্থবছরের মধ্যে দুই হাজার ৩০০ কোটি ডলার বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এসবিপির গভর্নর জামিল আহমদ মনে করেন, তারা তা পরিশোধ করতে পারবেন।

কিন্তু তা প্রায় অসম্ভব বলে মনে করেন দেশটির সাবেক অর্থমন্ত্রী মিফতা ইসমাইল। তার মতে, বৈদেশিক ঋণ মেটাতে না পেরে পাকিস্তান নিজেকে সহসা দেউলিয়া (ডিফল্ট) ঘোষণা করতে পারে।

অন্যদিকে পাকিস্তানের রেটিং বৃহস্পতিবার (২২ ডিসেম্বর) ‘বি’ থেকে আরেক ধাপ কমিয়ে ‘সিসিসি+’-তে নামিয়ে এনেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক রেটিং সংস্থা এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল। অর্থাৎ দেশটির আর্থিক অবস্থা ক্রমশ দুর্বলতর হচ্ছে।

এ পরিস্থিতিতে পুরো ২০২৩ সাল পাকিস্তানকে সংকটের মধ্য দিয়ে যেতে হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।