যে লাইসেন্স দিয়ে ঠিকাদারী করা যায়না সেই ঠিকাদাররাই করলো দরপত্রের সময় বৃদ্ধির আবেদন

  • Update Time : ০৭:৩০:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২
  • / 188

রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধিঃ

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌরসভার ২ কোটি টাকা দরপত্রের যে কাজ এ উপজেলার কোন ঠিকাদার তা করার যোগ্যতা রাখেনা, সেই ঠিকাদাররাই দরপত্রের সময় বৃদ্ধি চেয়ে ইউএনও বরাবরে করলেন আবেদন।
এ আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ৬ সেপ্টেম্বর (ওইদিন) পৌর কার্যালয়ে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ।
পৌর অফিস সূত্রেমতে , জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল প্রকল্পের আওতায় সোলার স্টিক লাইট স্থাপনের জন্য পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী এসএম জাবেদ আলী স্বাক্ষরিত টেন্ডার নোটিশলটারীর (এল টিএম) মাধ্যমে দুই কোটি টাকার
দরপত্র আহবান করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী লেসের মাধ্যমে (ও টি এম) পদ্ধতিতে করার কথা ছিল। ত্রুটিপূর্ণ এই বিষয়টি পৌর মেয়রের নজরে আসলে দরপত্রটি নিয়ম অনুযায়ী করতে হবে জানিয়ে প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়ে ত্রুটিপূর্ণ ওই দরপত্রটি এক অফিস আদেশে পৌরমেয়র গত ১ সেপ্টেম্বর স্থগিত করে চিকিৎসার জন্য ভারতে চলে যান।
ত্রুটিপূর্ণ ওই বিজ্ঞপ্তিটির ৮ সেপ্টেম্বর সিডিউল ক্রয় করার শেষ দিন ছিল। প্রেক্ষিতে স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদার দরপত্রটির সিডিউল ক্রয়ের তারিখ পরিবর্তনের জন্য ৬ সেপ্টেম্বর ইউএনও এবং স্থানীয় সরকার ঠাকুরগাঁও শাখার উপ-পরিচালক বরাবর আবেদন করেন।
উল্লেখ থাকে যে এ উপজেলায় জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল প্রকল্পের আওতায় সোলার স্টিক লাইট স্থাপনের লাইসেন্স কোন ঠিকাদারের নেই।
স্থানীয় ঠিকাদারদের অভিযোগের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে টেন্ডারের
কাজটি সাব-ঠিকাদার হিসাবে কিনে নিবেন কিংবা সুপারভাইজার হিসাবে মূল ঠিকাদারের কাজটি তারা ভায়া হয়ে করবেন বলে তারা সময় চেয়ে আবেদন করেন।
দরপত্রের বিষয়টির ব্যাপারে স্থানীয় ঠিকাদার রাসেল আহাম্মেদ তুসারের ফেসবুক ওয়াল থেকে জানাযায়, ঠিকাদার কল্যাণ সমিতি না জেনে না শুনে মেয়রে বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে সেটা ভিত্তিহীন। একটা সম্মানিত ব্যক্তিকে নিয়ে বদনাম ছড়ানোর আগে প্রকৃত বিষয়টি তাদের জানা উচিৎ ছিল।

উপজেলা প্রকৌশলী কেএম সাব্বিরুল এনাম বলেন,আমার জানা মতে স্টিক লাইট স্থাপনের লাইসেন্স এ উপজেলায় কোন ঠিকাদারের নেই। সম্প্রতি এলজিইডি দপ্তর হতে এধরণের একটি কাজ আমরা করেছি সেটি বগুড়ার ঠিকাদার ছিল।

এ উপজেলার ঠিকাদারদের লাইসেন্স দিয়ে দরপত্র দাখিল করা যাবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেফাউল আলম সেফা বলেন, সিডিউলের শর্তাবলী না দেখলে বলা মুশকিল ।

সহকারি প্রকৌশলী এসএম জাবেদ আলী বলেন, দরপত্রটি ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় মেয়র মহোদয় স্থগিত করেছে। ইউএনও অফিসে স্থগিতের বিষয়টি কেন জানানো হলোনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,
যেহেতু দরপত্রটি স্থগিত করা হয়েছে এবং ডিসিউলও তৈরি কিংবা বিক্রি করা হয়নি এজন্য কোন অফিসকে জানানো হয়নি।
পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল মেয়র মতিউর রহমান মতি বলেন টেন্ডারের বিষয়টি ১ তারিখে স্থগিত করে প্রকৌশলীকে মেয়র সাহেব বলে ভারতে চিকিৎসার কাজে গিয়েছেন, তা আমার জানা ছিল না। প্রকৌশলী সাহেব অসুস্থতাজনিত কারণে ক’দিন অসিসে আসেনি। আসার পর আমি জানতে পারি।

এব্যপারে মেয়রের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দরপত্রের নোটিশে ত্রুটি থাকার কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে।
এজন্যই সিডিউলও তৈরি করা হয়নি এবং কি বিভিন্ন দপ্তর কেও জানানো হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ বলেন, আসলে ১ সেপ্টেম্বর মেয়র সাহেব দরপত্রটি স্থগিত করে চলে গেছেন। অফিসের লোকেরা আমাকে তা অবগত করেনি। পরে প্রকৌশলী সাহেব আমার কাছে এসে ভুল স্বীকার করে বলেন এমনটি পরবর্তীতে আর হবে না।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


যে লাইসেন্স দিয়ে ঠিকাদারী করা যায়না সেই ঠিকাদাররাই করলো দরপত্রের সময় বৃদ্ধির আবেদন

Update Time : ০৭:৩০:১১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২২

রাণীশংকৈল(ঠাকুরগাঁও)প্রতিনিধিঃ

ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌরসভার ২ কোটি টাকা দরপত্রের যে কাজ এ উপজেলার কোন ঠিকাদার তা করার যোগ্যতা রাখেনা, সেই ঠিকাদাররাই দরপত্রের সময় বৃদ্ধি চেয়ে ইউএনও বরাবরে করলেন আবেদন।
এ আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার ৬ সেপ্টেম্বর (ওইদিন) পৌর কার্যালয়ে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ।
পৌর অফিস সূত্রেমতে , জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল প্রকল্পের আওতায় সোলার স্টিক লাইট স্থাপনের জন্য পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী এসএম জাবেদ আলী স্বাক্ষরিত টেন্ডার নোটিশলটারীর (এল টিএম) মাধ্যমে দুই কোটি টাকার
দরপত্র আহবান করে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী লেসের মাধ্যমে (ও টি এম) পদ্ধতিতে করার কথা ছিল। ত্রুটিপূর্ণ এই বিষয়টি পৌর মেয়রের নজরে আসলে দরপত্রটি নিয়ম অনুযায়ী করতে হবে জানিয়ে প্রকৌশলীকে নির্দেশ দিয়ে ত্রুটিপূর্ণ ওই দরপত্রটি এক অফিস আদেশে পৌরমেয়র গত ১ সেপ্টেম্বর স্থগিত করে চিকিৎসার জন্য ভারতে চলে যান।
ত্রুটিপূর্ণ ওই বিজ্ঞপ্তিটির ৮ সেপ্টেম্বর সিডিউল ক্রয় করার শেষ দিন ছিল। প্রেক্ষিতে স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদার দরপত্রটির সিডিউল ক্রয়ের তারিখ পরিবর্তনের জন্য ৬ সেপ্টেম্বর ইউএনও এবং স্থানীয় সরকার ঠাকুরগাঁও শাখার উপ-পরিচালক বরাবর আবেদন করেন।
উল্লেখ থাকে যে এ উপজেলায় জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল প্রকল্পের আওতায় সোলার স্টিক লাইট স্থাপনের লাইসেন্স কোন ঠিকাদারের নেই।
স্থানীয় ঠিকাদারদের অভিযোগের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে টেন্ডারের
কাজটি সাব-ঠিকাদার হিসাবে কিনে নিবেন কিংবা সুপারভাইজার হিসাবে মূল ঠিকাদারের কাজটি তারা ভায়া হয়ে করবেন বলে তারা সময় চেয়ে আবেদন করেন।
দরপত্রের বিষয়টির ব্যাপারে স্থানীয় ঠিকাদার রাসেল আহাম্মেদ তুসারের ফেসবুক ওয়াল থেকে জানাযায়, ঠিকাদার কল্যাণ সমিতি না জেনে না শুনে মেয়রে বিরুদ্ধে অভিযোগ করছে সেটা ভিত্তিহীন। একটা সম্মানিত ব্যক্তিকে নিয়ে বদনাম ছড়ানোর আগে প্রকৃত বিষয়টি তাদের জানা উচিৎ ছিল।

উপজেলা প্রকৌশলী কেএম সাব্বিরুল এনাম বলেন,আমার জানা মতে স্টিক লাইট স্থাপনের লাইসেন্স এ উপজেলায় কোন ঠিকাদারের নেই। সম্প্রতি এলজিইডি দপ্তর হতে এধরণের একটি কাজ আমরা করেছি সেটি বগুড়ার ঠিকাদার ছিল।

এ উপজেলার ঠিকাদারদের লাইসেন্স দিয়ে দরপত্র দাখিল করা যাবে কিনা এ প্রশ্নের জবাবে ঠিকাদার কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক সেফাউল আলম সেফা বলেন, সিডিউলের শর্তাবলী না দেখলে বলা মুশকিল ।

সহকারি প্রকৌশলী এসএম জাবেদ আলী বলেন, দরপত্রটি ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় মেয়র মহোদয় স্থগিত করেছে। ইউএনও অফিসে স্থগিতের বিষয়টি কেন জানানো হলোনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন,
যেহেতু দরপত্রটি স্থগিত করা হয়েছে এবং ডিসিউলও তৈরি কিংবা বিক্রি করা হয়নি এজন্য কোন অফিসকে জানানো হয়নি।
পৌরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেল মেয়র মতিউর রহমান মতি বলেন টেন্ডারের বিষয়টি ১ তারিখে স্থগিত করে প্রকৌশলীকে মেয়র সাহেব বলে ভারতে চিকিৎসার কাজে গিয়েছেন, তা আমার জানা ছিল না। প্রকৌশলী সাহেব অসুস্থতাজনিত কারণে ক’দিন অসিসে আসেনি। আসার পর আমি জানতে পারি।

এব্যপারে মেয়রের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, দরপত্রের নোটিশে ত্রুটি থাকার কারণে তা স্থগিত করা হয়েছে।
এজন্যই সিডিউলও তৈরি করা হয়নি এবং কি বিভিন্ন দপ্তর কেও জানানো হয়নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহেল সুলতান জুলকার নাইন কবির স্টিভ বলেন, আসলে ১ সেপ্টেম্বর মেয়র সাহেব দরপত্রটি স্থগিত করে চলে গেছেন। অফিসের লোকেরা আমাকে তা অবগত করেনি। পরে প্রকৌশলী সাহেব আমার কাছে এসে ভুল স্বীকার করে বলেন এমনটি পরবর্তীতে আর হবে না।