চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দ্বন্ধে বিপাকে পেরুল উত্তর ইউনিয়নবাসী

  • Update Time : ০৫:১২:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ অগাস্ট ২০২২
  • / 363

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ, কুমিল্লা প্রতিনিধি: 

স্থানীয় সরকারের অধীনে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা দিতে বিধি অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান নির্বাচিত হন চেয়ারম্যান। থাকে ৯টি ওয়ার্ড থেকে ৩ টি করে ওয়ার্ড মিলে ৩জন সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য আর প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকে একজন করে নির্বাচিত সদস্য। যাদের মাধ্যমে সরকারের সব রকম সেবা পৌঁছে দেয়া হয়।

কিন্তু কুমিল্লা লালমাই উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের জনসাধারণ বিগত ১ বছর ধরে নানাভাবে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। কতিপয় ওয়ার্ড মেম্বার ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিভিন্ন ভাতা ও প্রজেক্টের লেনদেন নিয়ে দ্বন্দের জেরে এ সংকট তৈরী হয়েছে বলে দাবী স্থানীয়দের।

সূত্র জানায়,ইউপি মেম্বাররা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাসিক ভাতা না পাওয়াতে দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাঝে কোন্দল সৃষ্টি হয়।এর পর শুরু হয় মেম্বারদের প্রতিবাদ সহ নানান কর্মসূচি। তারা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগ করেই ক্ষ্যান্ত হননি।তারা সভা সমাবেশ করে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন।এর পাল্টা জবাব ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান নিজেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান। এভাবে পক্ষে বিপক্ষে মেম্বার ও চেয়ারম্যানের মাঝে বিরোধ তৈরী হয়।

গত সোমবার (৮ আগস্ট) পেরুল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদে এক সংবাদ সম্মেলনে মেম্বারগণ লিখিত বক্তব্যে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ তুলে ধরেন। তারা দাবী করেন,চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদে একচ্ছত্র আধিপত্য চালিয়ে আসছেন। নির্বাচিত মেম্বারদের কোন প্রকার মুল্যায়ন করছেন না। বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দ, পরিষদের উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থ কোনো ইউপি সদস্যকে অবহিত না করে এককভাবে ভুয়া ভাউচার দিয়ে নিজ ইচ্ছে মতো সিদ্ধান্ত নেন। পরিষদের সদস্যদের না জানিয়ে প্রকল্প সভাপতি করে অধিকাংশ কাজ অসম্পন্ন রেখে ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে নিজেই টাকা উত্তোলন করেন। এছাড়াও গত পাঁচ বছরে ১১ জন ইউপি সদস্যের মাসিক ভাতা বাবদ প্রায় ৩১ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

তবে পেরুল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল বাসার বলেন, আমার বিরুদ্ধে একজন টাউট লোক যিনি মানুষকে চাকরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সে কতিপয় মেম্বারদের দিয়ে নানা অভিযোগ করিয়ে আমাকে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে।

এই টাউট লোকটি মেম্বারদের ব্যবহার করে আমাকে হেয় করতে ওঠে পড়ে লেগেছে।জনগণ অত্যন্ত সচেতন। কোন ষড়যন্ত্র তারা গ্রহণ করবে না।শক্ত হাতেই সব রকম কুট কৌশল মোকাবেলা করবে।

পেরুল ইউনিয়নের বাসিন্দা মিস ডলি(ছদ্মনাম) বলেন, মেম্বারদের কাছে গেলে সাধারন মানুষ সেবা পায় না। তাদের সঙ্গে চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্ব থাকায় সাধারন লোকজনকে হয়রানি করেন।তাদের বাড়িতে কেউ গেলে বলেন, পরিষদের কোন কাগজ তাদের হাতে নেই। সব চেয়ারম্যানের হাতে। এভাবে মেম্বার আর চেয়ারম্যানের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে ঘুরে হয়রানী হয় স্থানীয় বাসিন্দারা।

এ বিষয়ে লালমাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক বলেন,চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাঝে দন্ধটি বেশিদিন হয়নি।আমার কাছে এ বিষয়ে একটি দরখাস্ত করা হয়েছে।জনগন যাতে হয়রানির শিকার না হয় তার জন্য প্রশাসন যে ব্যবস্থা গ্রহন করবে আমি তার পক্ষে থাকবো।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দ্বন্ধে বিপাকে পেরুল উত্তর ইউনিয়নবাসী

Update Time : ০৫:১২:১৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ অগাস্ট ২০২২

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ, কুমিল্লা প্রতিনিধি: 

স্থানীয় সরকারের অধীনে ইউনিয়ন পরিষদের সেবা দিতে বিধি অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের প্রধান নির্বাচিত হন চেয়ারম্যান। থাকে ৯টি ওয়ার্ড থেকে ৩ টি করে ওয়ার্ড মিলে ৩জন সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য আর প্রতিটি ওয়ার্ডে থাকে একজন করে নির্বাচিত সদস্য। যাদের মাধ্যমে সরকারের সব রকম সেবা পৌঁছে দেয়া হয়।

কিন্তু কুমিল্লা লালমাই উপজেলার পেরুল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের জনসাধারণ বিগত ১ বছর ধরে নানাভাবে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন বলে রয়েছে বিস্তর অভিযোগ। কতিপয় ওয়ার্ড মেম্বার ও চেয়ারম্যানের সঙ্গে বিভিন্ন ভাতা ও প্রজেক্টের লেনদেন নিয়ে দ্বন্দের জেরে এ সংকট তৈরী হয়েছে বলে দাবী স্থানীয়দের।

সূত্র জানায়,ইউপি মেম্বাররা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মাসিক ভাতা না পাওয়াতে দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাঝে কোন্দল সৃষ্টি হয়।এর পর শুরু হয় মেম্বারদের প্রতিবাদ সহ নানান কর্মসূচি। তারা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহলে লিখিত অভিযোগ করেই ক্ষ্যান্ত হননি।তারা সভা সমাবেশ করে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ অব্যাহত রেখেছেন।এর পাল্টা জবাব ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে চেয়ারম্যান নিজেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করবেন বলে জানান। এভাবে পক্ষে বিপক্ষে মেম্বার ও চেয়ারম্যানের মাঝে বিরোধ তৈরী হয়।

গত সোমবার (৮ আগস্ট) পেরুল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদে এক সংবাদ সম্মেলনে মেম্বারগণ লিখিত বক্তব্যে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ তুলে ধরেন। তারা দাবী করেন,চেয়ারম্যান ইউনিয়ন পরিষদে একচ্ছত্র আধিপত্য চালিয়ে আসছেন। নির্বাচিত মেম্বারদের কোন প্রকার মুল্যায়ন করছেন না। বিভিন্ন সরকারি বরাদ্দ, পরিষদের উন্নয়ন বরাদ্দের অর্থ কোনো ইউপি সদস্যকে অবহিত না করে এককভাবে ভুয়া ভাউচার দিয়ে নিজ ইচ্ছে মতো সিদ্ধান্ত নেন। পরিষদের সদস্যদের না জানিয়ে প্রকল্প সভাপতি করে অধিকাংশ কাজ অসম্পন্ন রেখে ভুয়া স্বাক্ষর দিয়ে নিজেই টাকা উত্তোলন করেন। এছাড়াও গত পাঁচ বছরে ১১ জন ইউপি সদস্যের মাসিক ভাতা বাবদ প্রায় ৩১ লক্ষাধিক টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

তবে পেরুল উত্তর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল বাসার বলেন, আমার বিরুদ্ধে একজন টাউট লোক যিনি মানুষকে চাকরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে সে কতিপয় মেম্বারদের দিয়ে নানা অভিযোগ করিয়ে আমাকে বেকায়দায় ফেলতে চাচ্ছে।

এই টাউট লোকটি মেম্বারদের ব্যবহার করে আমাকে হেয় করতে ওঠে পড়ে লেগেছে।জনগণ অত্যন্ত সচেতন। কোন ষড়যন্ত্র তারা গ্রহণ করবে না।শক্ত হাতেই সব রকম কুট কৌশল মোকাবেলা করবে।

পেরুল ইউনিয়নের বাসিন্দা মিস ডলি(ছদ্মনাম) বলেন, মেম্বারদের কাছে গেলে সাধারন মানুষ সেবা পায় না। তাদের সঙ্গে চেয়ারম্যানের দ্বন্দ্ব থাকায় সাধারন লোকজনকে হয়রানি করেন।তাদের বাড়িতে কেউ গেলে বলেন, পরিষদের কোন কাগজ তাদের হাতে নেই। সব চেয়ারম্যানের হাতে। এভাবে মেম্বার আর চেয়ারম্যানের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরে ঘুরে হয়রানী হয় স্থানীয় বাসিন্দারা।

এ বিষয়ে লালমাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক বলেন,চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের মাঝে দন্ধটি বেশিদিন হয়নি।আমার কাছে এ বিষয়ে একটি দরখাস্ত করা হয়েছে।জনগন যাতে হয়রানির শিকার না হয় তার জন্য প্রশাসন যে ব্যবস্থা গ্রহন করবে আমি তার পক্ষে থাকবো।