ইমরানের ‘বিকল্প’ কে, বিরোধীদের প্রশ্ন পাক প্রেসিডেন্টের

  • Update Time : ১১:৪৩:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২
  • / 168

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

কার্যনির্বাহী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সুপ্রিম কোর্ট থেকে সদ্য অবসর নেওয়া বিচারপতি মকবুল বকরের নাম সুপারিশ করল পাকিস্তানের বিরোধী জোট। প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে এই নাম পাঠিয়ে দিয়েছে তারা।

প্রেসিডেন্ট আলভি এ নিয়ে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল খালিদ জাভেদ খান এবং ইমরান খান মন্ত্রিসভার সদ্য-প্রাক্তন কয়েক জন মন্ত্রী— বাবর আওয়ান, ফওয়াদ চৌধুরি, ইমতিয়াজ় সিদ্দিকি, আসাদ উমর, শফকত মাহমুদ এবং পারভেজ খট্টর। তাদের আলোচনার বিষয় ছিল, সাধারণ নির্বাচনের আগে কীভাবে সরকার চলবে, তার একটা রূপরেখা তৈরি করা। সেই প্রেক্ষিতেই প্রেসিডেন্ট জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করার প্রক্রিয়ায় বিরোধী জোটকেও শামিল করতে চান তিনি। প্রেসিডেন্টের বার্তা পেয়ে কার্যনির্বাহী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মকবুল বকরের নাম সুপারিশ করে বিরোধীরা। ছ’বছর সিন্ধু প্রদেশের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব সামলানোর পরে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন বকর। অবসর নিয়েছেন ঠিক দু’দিন আগে, গত সোমবার। জানা গিয়েছে, বকর ছাড়া আরও দু’জনের নাম সুপারিশ করবেন পিএমএল (এন) নেতা শাহবাজ শরিফ।

এ দিকে, তৃতীয় দিন স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানিতে বসল পাক সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি উমর আটা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে গঠিত ৫ সদস্যের বেঞ্চ পর্যালোচনা করে দেখছে, গত রবিবার যে ভাবে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি, তা আদৌ সাংবিধানিক ছিল কি না।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যে ‘বিদেশি প্ররোচনার’ অভিযোগ তুলেছেন, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তারা। কারণ ডেপুটি স্পিকার যখন বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছিলেন তার যুক্তি ছিল, বিদেশি শক্তির প্ররোচনায় আনা এই অনাস্থা প্রস্তাব আসলে সংবিধান-বিরোধী এবং তা দেশের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই এই প্রস্তাব নিয়ে কোনও ভোটাভুটি হতে দিতে পারেন না তিনি।

কূটনীতিকদের মতে, সুপ্রিম কোর্ট যদি রায় দেয় যে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব নয়, সে দিন ডেপুটি স্পিকারের পদক্ষেপই ‘অসাংবিধানিক’ ছিল, তা হলে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে নতুন করে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোট দেওয়াতে বাধ্য হবেন ডেপুটি স্পিকার। বিকেল পর্যন্ত শুনানি চলার পরে অধিবেশন মুলতুবি করে দেন প্রধান বিচারপতি। এই বিষয়ে রায় দিতে পারে কোর্ট।

আজ সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়েছেন প্রেসিডেন্টের আলভি-ও। প্রেসিডেন্টকে বিচারপতিদের বেঞ্চ জিজ্ঞাসা করেছিল, প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ পাওয়া মাত্র তিনি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দিলেন কেন? শীর্ষ আদালতের এই প্রশ্নের উত্তর প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি আলি জাফর জানান, দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি এ ধরনের কোনও সুপারিশ করেন, তা হলে তা সাংবিদানক ভাবে মানতে বাধ্য প্রেসিডেন্ট।

তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী কেন এই সুপারিশ করছেন, তা তিনি প্রেসিডেন্টকে না-ও বলতে পারেন। একই সঙ্গে তিনি সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করেন, তারা যেন পার্লামেন্টের কার্যকলাপে হস্তক্ষেপ না করে।
সূত্র: আনন্দবাজার

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ইমরানের ‘বিকল্প’ কে, বিরোধীদের প্রশ্ন পাক প্রেসিডেন্টের

Update Time : ১১:৪৩:০৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ

কার্যনির্বাহী প্রধানমন্ত্রী হিসাবে সুপ্রিম কোর্ট থেকে সদ্য অবসর নেওয়া বিচারপতি মকবুল বকরের নাম সুপারিশ করল পাকিস্তানের বিরোধী জোট। প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে এই নাম পাঠিয়ে দিয়েছে তারা।

প্রেসিডেন্ট আলভি এ নিয়ে একটি বৈঠক ডেকেছিলেন। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল খালিদ জাভেদ খান এবং ইমরান খান মন্ত্রিসভার সদ্য-প্রাক্তন কয়েক জন মন্ত্রী— বাবর আওয়ান, ফওয়াদ চৌধুরি, ইমতিয়াজ় সিদ্দিকি, আসাদ উমর, শফকত মাহমুদ এবং পারভেজ খট্টর। তাদের আলোচনার বিষয় ছিল, সাধারণ নির্বাচনের আগে কীভাবে সরকার চলবে, তার একটা রূপরেখা তৈরি করা। সেই প্রেক্ষিতেই প্রেসিডেন্ট জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করার প্রক্রিয়ায় বিরোধী জোটকেও শামিল করতে চান তিনি। প্রেসিডেন্টের বার্তা পেয়ে কার্যনির্বাহী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মকবুল বকরের নাম সুপারিশ করে বিরোধীরা। ছ’বছর সিন্ধু প্রদেশের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব সামলানোর পরে ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির পদে নিযুক্ত হয়েছিলেন বকর। অবসর নিয়েছেন ঠিক দু’দিন আগে, গত সোমবার। জানা গিয়েছে, বকর ছাড়া আরও দু’জনের নাম সুপারিশ করবেন পিএমএল (এন) নেতা শাহবাজ শরিফ।

এ দিকে, তৃতীয় দিন স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানিতে বসল পাক সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি উমর আটা বান্দিয়ালের নেতৃত্বে গঠিত ৫ সদস্যের বেঞ্চ পর্যালোচনা করে দেখছে, গত রবিবার যে ভাবে অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছিলেন ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরি, তা আদৌ সাংবিধানিক ছিল কি না।

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যে ‘বিদেশি প্ররোচনার’ অভিযোগ তুলেছেন, তা-ও খতিয়ে দেখছেন তারা। কারণ ডেপুটি স্পিকার যখন বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব বাতিল করে দিয়েছিলেন তার যুক্তি ছিল, বিদেশি শক্তির প্ররোচনায় আনা এই অনাস্থা প্রস্তাব আসলে সংবিধান-বিরোধী এবং তা দেশের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই এই প্রস্তাব নিয়ে কোনও ভোটাভুটি হতে দিতে পারেন না তিনি।

কূটনীতিকদের মতে, সুপ্রিম কোর্ট যদি রায় দেয় যে বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব নয়, সে দিন ডেপুটি স্পিকারের পদক্ষেপই ‘অসাংবিধানিক’ ছিল, তা হলে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে নতুন করে অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে ভোট দেওয়াতে বাধ্য হবেন ডেপুটি স্পিকার। বিকেল পর্যন্ত শুনানি চলার পরে অধিবেশন মুলতুবি করে দেন প্রধান বিচারপতি। এই বিষয়ে রায় দিতে পারে কোর্ট।

আজ সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়েছেন প্রেসিডেন্টের আলভি-ও। প্রেসিডেন্টকে বিচারপতিদের বেঞ্চ জিজ্ঞাসা করেছিল, প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশ পাওয়া মাত্র তিনি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ভেঙে দিলেন কেন? শীর্ষ আদালতের এই প্রশ্নের উত্তর প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি আলি জাফর জানান, দেশের প্রধানমন্ত্রী যদি এ ধরনের কোনও সুপারিশ করেন, তা হলে তা সাংবিদানক ভাবে মানতে বাধ্য প্রেসিডেন্ট।

তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী কেন এই সুপারিশ করছেন, তা তিনি প্রেসিডেন্টকে না-ও বলতে পারেন। একই সঙ্গে তিনি সুপ্রিম কোর্টকে অনুরোধ করেন, তারা যেন পার্লামেন্টের কার্যকলাপে হস্তক্ষেপ না করে।
সূত্র: আনন্দবাজার