মহাকাশ ঝড়ে স্পেসএক্সের ৪০ স্যাটেলাইট ধ্বংস

  • Update Time : ০৭:১৫:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • / 188

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্কঃ 

আমেরিকার এ্যারোস্পেস কোম্পানি স্পেসএক্স’র ৪০টি উচ্চগতির ইন্টারনেট স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরে একটি ভূ-চুম্বকীয় ঝড়ের কারণে কক্ষপথ থেকে ছিটকে পড়েছে। তবে এগুলো বায়ুমন্ডলে পুড়ে যাওয়ায় পৃথিবীর জন্য হুমকি খুব সামান্য। কোম্পানি এ কথা জানায়।

সূর্যের করোনা থেকে উচ্চশক্তির বিকিরণ পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে আছড়ে পড়লে ভূ-চুম্বকীয় ঝড় (জিওম্যাগনেটিক স্ট্রম) সৃষ্টি হয়। এর ফলে বায়ুমন্ডলের উর্ধ্বস্তরে স্থিতি ব্যহত হয় এবং যা কক্ষপথে স্থাপিত বস্তুগুলি নিচে টেনে নিয়ে আসে।

স্পেসএক্স’র উচ্চগতির ইন্টারনেট স্যাটেলাইট প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক গত ৩ ফেব্রুয়ারি ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে সর্বশেষ ৪৯টি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে এবং কক্ষপথের প্রাথমিক স্তরে পৃথিবী থেকে ১৩০ মাইল (২১০ কিলোমিটার) উপরে স্থাপন করে। পরে আরো উঁচুতে স্থাপনের আগে স্যাটেলাইটগুলো চেকআপের জন্য এখানে রাখা হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি ভূ-চুম্বকীয় ঝড়ে স্যাটেলাইটগুলো কক্ষচ্যুত হয়। ইলন মাস্কের কোম্পানি মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানায়।

এতে বলা হয়, “এই ঝড়ের কারণে আমাদের বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধি পায় এবং নিন্ম কক্ষপথে বায়ুমন্ডলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। স্যাটেলাইটগুলোতে থাকা জিপিএস তথ্যে জানা যায়, ঝড়ের গতি এবং বায়ুমন্ডলীয় টানের তীব্রতায় কক্ষপথ ৫০ শতাংশের বেশী প্রসারিত হয়।”

এ অবস্থায় স্টারলিংক উপ-গ্রহগুলোকে ভূ-চুম্বকীর টান থেকে আশ্রয় নিতে একটি নিরাপদ মোডে থাকার বার্তা পাঠায়, যাতে এগুলো কাগজের সিটের মতো প্রান্তের দিকে উড়ে যায়।
কিন্তু এই জটিল অনাকাক্সিক্ষত কৌশল গ্রহণ সত্ত্বেও বেশীরভাগ স্যাটেলাইট কক্ষপথ বাড়াতে ব্যর্থ হয় এবং প্রায় ৪০ টি পুনরায় পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করবে অথবা ইতোমধ্যে প্রবেশ করেছে।

স্পেসএক্স জোর দিয়ে বলেছে, উপ-গ্রহগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের কোন ঝুঁকি নেই, বায়ুমন্ডলে এগুলো পুড়ে যাবে, পৃথিবীতে কোন ধ্বংসাবশেষ ছুটে আসার সম্ভাবনা নেই। তবে নাসা এখনো এ বিষয় কোন মন্তব্য করেনি।

স্পেসএক্স ২০১৯ সালের মে থেকে এ পর্যন্ত ২ হাজারের বেশী স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। এরমধ্যে ১৫০০ বেশী বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে এবং এ গুলো প্রায় বিশ্বব্যাপী ইন্টানেট সুবিধা দিচ্ছে। কোম্পানি সম্প্রতি আরো ১২ হাজার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করেছে। পৃথিবী থেকে ১২০০ মাইল দূর পর্যন্ত প্রায় ৪,০০০ স্যাটেলাইট সক্রিয় রয়েছে এবং স্পেসে রকেট ও প্রোবের ১৫ হাজার টুকরো ধ্বংসাবশেষ ভেসে বেড়াচ্ছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


মহাকাশ ঝড়ে স্পেসএক্সের ৪০ স্যাটেলাইট ধ্বংস

Update Time : ০৭:১৫:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২২

তথ্যপ্রযুক্তি ডেস্কঃ 

আমেরিকার এ্যারোস্পেস কোম্পানি স্পেসএক্স’র ৪০টি উচ্চগতির ইন্টারনেট স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরে একটি ভূ-চুম্বকীয় ঝড়ের কারণে কক্ষপথ থেকে ছিটকে পড়েছে। তবে এগুলো বায়ুমন্ডলে পুড়ে যাওয়ায় পৃথিবীর জন্য হুমকি খুব সামান্য। কোম্পানি এ কথা জানায়।

সূর্যের করোনা থেকে উচ্চশক্তির বিকিরণ পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে আছড়ে পড়লে ভূ-চুম্বকীয় ঝড় (জিওম্যাগনেটিক স্ট্রম) সৃষ্টি হয়। এর ফলে বায়ুমন্ডলের উর্ধ্বস্তরে স্থিতি ব্যহত হয় এবং যা কক্ষপথে স্থাপিত বস্তুগুলি নিচে টেনে নিয়ে আসে।

স্পেসএক্স’র উচ্চগতির ইন্টারনেট স্যাটেলাইট প্রতিষ্ঠান স্টারলিংক গত ৩ ফেব্রুয়ারি ফ্লোরিডার কেনেডি স্পেস সেন্টার থেকে সর্বশেষ ৪৯টি উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে এবং কক্ষপথের প্রাথমিক স্তরে পৃথিবী থেকে ১৩০ মাইল (২১০ কিলোমিটার) উপরে স্থাপন করে। পরে আরো উঁচুতে স্থাপনের আগে স্যাটেলাইটগুলো চেকআপের জন্য এখানে রাখা হয়। ৪ ফেব্রুয়ারি ভূ-চুম্বকীয় ঝড়ে স্যাটেলাইটগুলো কক্ষচ্যুত হয়। ইলন মাস্কের কোম্পানি মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এ কথা জানায়।

এতে বলা হয়, “এই ঝড়ের কারণে আমাদের বায়ুমন্ডলের উষ্ণতা বৃদ্ধি পায় এবং নিন্ম কক্ষপথে বায়ুমন্ডলের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। স্যাটেলাইটগুলোতে থাকা জিপিএস তথ্যে জানা যায়, ঝড়ের গতি এবং বায়ুমন্ডলীয় টানের তীব্রতায় কক্ষপথ ৫০ শতাংশের বেশী প্রসারিত হয়।”

এ অবস্থায় স্টারলিংক উপ-গ্রহগুলোকে ভূ-চুম্বকীর টান থেকে আশ্রয় নিতে একটি নিরাপদ মোডে থাকার বার্তা পাঠায়, যাতে এগুলো কাগজের সিটের মতো প্রান্তের দিকে উড়ে যায়।
কিন্তু এই জটিল অনাকাক্সিক্ষত কৌশল গ্রহণ সত্ত্বেও বেশীরভাগ স্যাটেলাইট কক্ষপথ বাড়াতে ব্যর্থ হয় এবং প্রায় ৪০ টি পুনরায় পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে প্রবেশ করবে অথবা ইতোমধ্যে প্রবেশ করেছে।

স্পেসএক্স জোর দিয়ে বলেছে, উপ-গ্রহগুলোর মধ্যে সংঘর্ষের কোন ঝুঁকি নেই, বায়ুমন্ডলে এগুলো পুড়ে যাবে, পৃথিবীতে কোন ধ্বংসাবশেষ ছুটে আসার সম্ভাবনা নেই। তবে নাসা এখনো এ বিষয় কোন মন্তব্য করেনি।

স্পেসএক্স ২০১৯ সালের মে থেকে এ পর্যন্ত ২ হাজারের বেশী স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে। এরমধ্যে ১৫০০ বেশী বর্তমানে সক্রিয় রয়েছে এবং এ গুলো প্রায় বিশ্বব্যাপী ইন্টানেট সুবিধা দিচ্ছে। কোম্পানি সম্প্রতি আরো ১২ হাজার স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করেছে। পৃথিবী থেকে ১২০০ মাইল দূর পর্যন্ত প্রায় ৪,০০০ স্যাটেলাইট সক্রিয় রয়েছে এবং স্পেসে রকেট ও প্রোবের ১৫ হাজার টুকরো ধ্বংসাবশেষ ভেসে বেড়াচ্ছে।