তামিম-মাহমুদউল্লাহদের সহজেই হারালো মুশফিকরা

  • Update Time : ১০:৫৪:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জানুয়ারী ২০২২
  • / 166

 

তারকা ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটার নিয়ে শক্তিশালী দল গড়েছিল মিনিস্টার ঢাকা। তামিম ইকবাল-মাহমুদউল্লাহ-মোহাম্মদ শেহজাদ-ইসুরু উদানা-আন্দ্রে রাসেল-জহুরুল ইসলাম-শুভাগত হোম, প্রত্যেকেই পোড় খাওয়া ক্রিকেটার। এই দল নিয়ে বড় স্কোর গড়েও শেষ রক্ষা করতে পারেনি ঢাকা। প্রথমে আন্দ্রে ফ্লেচার-রনি তালুকদারের ঝড়, পরে থিসারা পেরেরার ঝড়ে উড়ে যায় ঢাকা। মাহমুদউল্লাহর দলের দেওয়া ১৮৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে মুশফিকুর রহিমের খুলনা টাইগার্স ৬ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জয়ের দেখা পেয়ে যায়।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে মিনিস্টার ঢাকা ও খুলনা টাইগার্স। উদ্বোধনী দিনের ফরচুন বরিশাল-চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের লো স্কোরিং ম্যাচ দেখে ক্রিকেটপ্রেমীদের মন খারাপ হওয়ার অবস্থা! তবে টিভি সেটের সামনে যারা দ্বিতীয় ম্যাচ দেখতে বসেছিলেন, তারা নিরাশ হননি। চার-ছক্কার ধুম ধারাক্কা ক্রিকেটের প্রদর্শনী হয়েছে হোম অব ক্রিকেটে। এই প্রদর্শনীতে জয়ী দলের নাম মুশফিকের খুলনা টাইগার্স।

শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১২ রানের। আধুনিক ক্রিকেটে সহজ এই লক্ষ্যে ক্রিজে ছিলেন শেখ মেহেদী হাসান ও থিসারা পেরেরা। দুই জন মিলে অনায়াসেই ম্যাচ শেষ করে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন। জয় থেকে চার রান দূরে থাকতে আন্দ্রে রাসেলের শেষ বলে বিশাল ছক্কায় জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়েন শেখ মেহেদী হাসান। থিসারা ১৮ বলে ৬ চারে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যদিকে মেহেদী ৫ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় কার্যকরী ১২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন।

অবশ্য জয়ের ভীতটা গড়ে দিয়েছিলেন আন্দ্রে ফ্লেচার ও রনি তালুকদার। দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম (২) আউট হওয়ার পর ক্রিজে নামেন রনি তালুকদার। দুই জন মিলে ঢাকার বোলারদের বিপক্ষে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে গড়ে ফেলেন ৪০ বলে ৭২ রানের জুটি। ফ্লেচার ২৩ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৪৭ রানে আউট হলেও রনি তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। ৪২ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৬১ রান করে এবাদতের বলে আউট হন খুলনার এই ব্যাটার। দারুন এই ইনিংসে ম্যাচ সেরার পুরষ্কারও পান রনি। অধিনায়ক মুশফিক অবশ্য ৮ বলে ৬ রানে আউট হয়েছেন। এরপর ইয়াসির আলী ১৩ রানে আউট হলেও ম্যাচ জিততে সমস্যা হয়নি খুলনার।

ইনজুরির কারনে মাশরাফি ছিলেন না বোলিং আক্রমণে। তবুও অভিজ্ঞতার কমতি ছিল না দলটিতে। ঢাকার বোলারদের ছন্নছাড়া বোলিংয়ের সুযোগ নিয়েই খুলনার ব্যাটাররা চড়াও হয়েছিল। অভিজ্ঞ রুবেল ৩ ওভারে ৪২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন। ইসুরু উদানা ৪ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে উইকেটের দেখা পাননি। আন্দ্রে রাসেল ৪২ রান খরচ করে দুই উইকেট নিয়েছেন। এবাদত হোসেন ২ উইকেট নিয়েছেন ২৭ রান খরচায়।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় ঢাকা মিনিস্টার। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ শেহজাদ মিলে ৬৯ রানের দারুন জুটি গড়েন। ওই জুটির ওপর ভর করেই মাহমুদউল্লাহর ঢাকা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান সংগ্রহ করে। শেহজাদ ৪২ রানে আউট হলেও তামিম ইকবাল বিপিএল অষ্টম আসরের প্রথম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে ডিপ মিডউইকেটে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন তামিম। কিন্তু নাভিদ উল হকের দারুন এক ক্যাচে ৫০ রানে সাজঘরে ফেরেন তামিম। ৪২ বলে ৭ চারে তামিম নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। এছাড়া অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ২০ বলে ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংস। ২ চার ও ৩ ছক্কায় মাহমুদউল্লাহ নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন।

ঢাকার ইনিংস আরও বড় হতে পারতো। কিন্তু ক্যারিবীয় তারকা ক্রিকেটার আন্দ্রে রাসেল অদ্ভুত এক রান আউটের শিকার হলে ঢাকার ইনিংস ১৮৩ রানেই থেমে যায়। রাসেল ৭ রান করে আউট হন। জহুরুল ইসলাম অমি ১১ রান করে আউট হন। শুভাগত হোম ৪ বলে ৯ এবং ইসুরু উদানা ২ বলে ৬ রান করে আউট হন।

খুলনা টাইগার্সের বোলারদের মধ্যে কামরুল ইসলাম রাব্বি ৪৫ রান খরচায় নিয়েছেন তিনটি উইকেট। এছাড়া থিসারা পেরেরা নেন একটি উইকেট।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


তামিম-মাহমুদউল্লাহদের সহজেই হারালো মুশফিকরা

Update Time : ১০:৫৪:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২১ জানুয়ারী ২০২২

 

তারকা ও অভিজ্ঞ ক্রিকেটার নিয়ে শক্তিশালী দল গড়েছিল মিনিস্টার ঢাকা। তামিম ইকবাল-মাহমুদউল্লাহ-মোহাম্মদ শেহজাদ-ইসুরু উদানা-আন্দ্রে রাসেল-জহুরুল ইসলাম-শুভাগত হোম, প্রত্যেকেই পোড় খাওয়া ক্রিকেটার। এই দল নিয়ে বড় স্কোর গড়েও শেষ রক্ষা করতে পারেনি ঢাকা। প্রথমে আন্দ্রে ফ্লেচার-রনি তালুকদারের ঝড়, পরে থিসারা পেরেরার ঝড়ে উড়ে যায় ঢাকা। মাহমুদউল্লাহর দলের দেওয়া ১৮৪ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে মুশফিকুর রহিমের খুলনা টাইগার্স ৬ বল হাতে রেখে ৫ উইকেটে জয়ের দেখা পেয়ে যায়।

মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছে মিনিস্টার ঢাকা ও খুলনা টাইগার্স। উদ্বোধনী দিনের ফরচুন বরিশাল-চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের লো স্কোরিং ম্যাচ দেখে ক্রিকেটপ্রেমীদের মন খারাপ হওয়ার অবস্থা! তবে টিভি সেটের সামনে যারা দ্বিতীয় ম্যাচ দেখতে বসেছিলেন, তারা নিরাশ হননি। চার-ছক্কার ধুম ধারাক্কা ক্রিকেটের প্রদর্শনী হয়েছে হোম অব ক্রিকেটে। এই প্রদর্শনীতে জয়ী দলের নাম মুশফিকের খুলনা টাইগার্স।

শেষ দুই ওভারে জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১২ রানের। আধুনিক ক্রিকেটে সহজ এই লক্ষ্যে ক্রিজে ছিলেন শেখ মেহেদী হাসান ও থিসারা পেরেরা। দুই জন মিলে অনায়াসেই ম্যাচ শেষ করে ড্রেসিংরুমে ফিরেছেন। জয় থেকে চার রান দূরে থাকতে আন্দ্রে রাসেলের শেষ বলে বিশাল ছক্কায় জয়ের হাসি নিয়ে মাঠ ছাড়েন শেখ মেহেদী হাসান। থিসারা ১৮ বলে ৬ চারে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন। অন্যদিকে মেহেদী ৫ বলে ১ চার ও ১ ছক্কায় কার্যকরী ১২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন।

অবশ্য জয়ের ভীতটা গড়ে দিয়েছিলেন আন্দ্রে ফ্লেচার ও রনি তালুকদার। দ্বিতীয় ওভারে ওপেনার তানজিদ হাসান তামিম (২) আউট হওয়ার পর ক্রিজে নামেন রনি তালুকদার। দুই জন মিলে ঢাকার বোলারদের বিপক্ষে আগ্রাসী ব্যাটিংয়ে গড়ে ফেলেন ৪০ বলে ৭২ রানের জুটি। ফ্লেচার ২৩ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৪৭ রানে আউট হলেও রনি তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। ৪২ বলে ৭ চার ও ১ ছক্কায় ৬১ রান করে এবাদতের বলে আউট হন খুলনার এই ব্যাটার। দারুন এই ইনিংসে ম্যাচ সেরার পুরষ্কারও পান রনি। অধিনায়ক মুশফিক অবশ্য ৮ বলে ৬ রানে আউট হয়েছেন। এরপর ইয়াসির আলী ১৩ রানে আউট হলেও ম্যাচ জিততে সমস্যা হয়নি খুলনার।

ইনজুরির কারনে মাশরাফি ছিলেন না বোলিং আক্রমণে। তবুও অভিজ্ঞতার কমতি ছিল না দলটিতে। ঢাকার বোলারদের ছন্নছাড়া বোলিংয়ের সুযোগ নিয়েই খুলনার ব্যাটাররা চড়াও হয়েছিল। অভিজ্ঞ রুবেল ৩ ওভারে ৪২ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন। ইসুরু উদানা ৪ ওভারে ৩৭ রান দিয়ে উইকেটের দেখা পাননি। আন্দ্রে রাসেল ৪২ রান খরচ করে দুই উইকেট নিয়েছেন। এবাদত হোসেন ২ উইকেট নিয়েছেন ২৭ রান খরচায়।

এর আগে টস হেরে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পায় ঢাকা মিনিস্টার। দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও মোহাম্মদ শেহজাদ মিলে ৬৯ রানের দারুন জুটি গড়েন। ওই জুটির ওপর ভর করেই মাহমুদউল্লাহর ঢাকা নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান সংগ্রহ করে। শেহজাদ ৪২ রানে আউট হলেও তামিম ইকবাল বিপিএল অষ্টম আসরের প্রথম হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন। কামরুল ইসলাম রাব্বির বলে ডিপ মিডউইকেটে ছক্কা মারতে চেয়েছিলেন তামিম। কিন্তু নাভিদ উল হকের দারুন এক ক্যাচে ৫০ রানে সাজঘরে ফেরেন তামিম। ৪২ বলে ৭ চারে তামিম নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। এছাড়া অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে আসে ২০ বলে ৩৯ রানের ঝড়ো ইনিংস। ২ চার ও ৩ ছক্কায় মাহমুদউল্লাহ নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন।

ঢাকার ইনিংস আরও বড় হতে পারতো। কিন্তু ক্যারিবীয় তারকা ক্রিকেটার আন্দ্রে রাসেল অদ্ভুত এক রান আউটের শিকার হলে ঢাকার ইনিংস ১৮৩ রানেই থেমে যায়। রাসেল ৭ রান করে আউট হন। জহুরুল ইসলাম অমি ১১ রান করে আউট হন। শুভাগত হোম ৪ বলে ৯ এবং ইসুরু উদানা ২ বলে ৬ রান করে আউট হন।

খুলনা টাইগার্সের বোলারদের মধ্যে কামরুল ইসলাম রাব্বি ৪৫ রান খরচায় নিয়েছেন তিনটি উইকেট। এছাড়া থিসারা পেরেরা নেন একটি উইকেট।