ইয়েমেনে সরাসরি হামলার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৪:৪২:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩
  • / ৮৩ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

লোহিত সাগরে সামরিক ও বাণিজ্যিক জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান হামলার জবাবে তাদের সামরিক স্থাপনায় সরাসরি হামলার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নিউজ ওয়েবসাইট সেমাফোরের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা তাস।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেমাফোরকে বলেছেন, হুথিরা ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য হ্রাস এবং তেল আবিবকে সমর্থনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের খরচ বাড়াতে বৈশ্বিক সামুদ্রিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। এই কারণে তারা উদ্বিগ্ন।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইরান ও তাদের প্রক্সিদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর যুদ্ধের আশঙ্কার থাকলেও তারা হুথিদের ওপর হামলার কথা ভাবছেন। যদিও ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর থেকে এই যুদ্ধ গাজার ভেতরে রাখার কথা বলে আসছে বাইডেন প্রশাসন।

চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটনে হুথিদের হামলার প্রসঙ্গে পেন্টাগনের মুখপাত্র জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার বলেছেন, যেমনটা আমরা অতীতে দেখিয়েছি… আমাদের সামরিক বাহিনী যেখানে প্রয়োজন ও যথাযথ মনে করবে সেখানে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না। সমুদ্র অঞ্চলে আমাদের সেনাদের বিরুদ্ধে সৃষ্ট হুমকি থেকে সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়টি এর মধ্যে রয়েছে।

হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের শুরু থেকেই হামাসের সমর্থনে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। আরবের সুন্নি রাষ্ট্রগুলোর মতো শুধু কথায় নয় বরং সরাসরি সামরিক পদক্ষেপও নিতে শুরু করেছে ফিলিস্তিনপন্থি এ গোষ্ঠীটি। তারই ধারাবাহিকতায় লোহিত সাগরে ইসরায়েলি মালিকানাধীন জাহাজে হামলা ও জব্দ করে আসছে হুতি সদস্যরা। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক জাহাজ লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে গোষ্ঠীটি। এমনকি আরব ও লোহিত সাগরে ইসরায়েলগামী যে কোনো জাহাজ তাদের হামলার বৈধ লক্ষ্যবস্তু বলে গণ্য হবে বলেও সতর্ক করেছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে হুথিদের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে সরাসরি হামলার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর আগে গত সপ্তাহে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, লোহিত সাগরে জাহাজের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে একটি সামুদ্রিক টাস্কফোর্স গঠনের বিষয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করছে ওয়াশিংটন।

তবে জ্যাক সুলিভানের এমন প্রস্তাবের জবাবে হুথি মিত্র ইরান জানিয়ে দেয়, এ ধরনের সেনা সেখানে ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন হবে। গত বৃহস্পতিবার ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ রেজা আশতিয়ানির সরকারি বার্তা সংস্থা ইরানি স্টুডেন্ট নিউজ এজেন্সিকে (আইএসএনএ) বলেছেন, তারা যদি এমন অযৌক্তিক পদক্ষেপ নেয় তাহলে ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন হবে। লোহিত সাগরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে অঞ্চলে আমাদের আধিপত্য রয়েছে সেখানে কেউ এই ধরনের কাজ করতে পারবে না।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ইয়েমেনে সরাসরি হামলার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র

Update Time : ০৪:৪২:৩১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

লোহিত সাগরে সামরিক ও বাণিজ্যিক জাহাজে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ক্রমবর্ধমান হামলার জবাবে তাদের সামরিক স্থাপনায় সরাসরি হামলার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নিউজ ওয়েবসাইট সেমাফোরের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ার সরকারি বার্তা সংস্থা তাস।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেমাফোরকে বলেছেন, হুথিরা ইসরায়েলের সঙ্গে বাণিজ্য হ্রাস এবং তেল আবিবকে সমর্থনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের খরচ বাড়াতে বৈশ্বিক সামুদ্রিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে দুর্বল করার চেষ্টা করছে। এই কারণে তারা উদ্বিগ্ন।

মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, ইরান ও তাদের প্রক্সিদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর যুদ্ধের আশঙ্কার থাকলেও তারা হুথিদের ওপর হামলার কথা ভাবছেন। যদিও ৭ অক্টোবর হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধ শুরুর থেকে এই যুদ্ধ গাজার ভেতরে রাখার কথা বলে আসছে বাইডেন প্রশাসন।

চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটনে হুথিদের হামলার প্রসঙ্গে পেন্টাগনের মুখপাত্র জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার বলেছেন, যেমনটা আমরা অতীতে দেখিয়েছি… আমাদের সামরিক বাহিনী যেখানে প্রয়োজন ও যথাযথ মনে করবে সেখানে পদক্ষেপ নিতে দ্বিধা করবে না। সমুদ্র অঞ্চলে আমাদের সেনাদের বিরুদ্ধে সৃষ্ট হুমকি থেকে সুরক্ষা দেওয়ার বিষয়টি এর মধ্যে রয়েছে।

হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধের শুরু থেকেই হামাসের সমর্থনে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। আরবের সুন্নি রাষ্ট্রগুলোর মতো শুধু কথায় নয় বরং সরাসরি সামরিক পদক্ষেপও নিতে শুরু করেছে ফিলিস্তিনপন্থি এ গোষ্ঠীটি। তারই ধারাবাহিকতায় লোহিত সাগরে ইসরায়েলি মালিকানাধীন জাহাজে হামলা ও জব্দ করে আসছে হুতি সদস্যরা। যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক জাহাজ লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে গোষ্ঠীটি। এমনকি আরব ও লোহিত সাগরে ইসরায়েলগামী যে কোনো জাহাজ তাদের হামলার বৈধ লক্ষ্যবস্তু বলে গণ্য হবে বলেও সতর্ক করেছে তারা। এমন পরিস্থিতিতে হুথিদের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে সরাসরি হামলার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

এর আগে গত সপ্তাহে মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান সাংবাদিকদের বলেছিলেন, লোহিত সাগরে জাহাজের নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে একটি সামুদ্রিক টাস্কফোর্স গঠনের বিষয়ে অন্যান্য দেশের সঙ্গে আলোচনা করছে ওয়াশিংটন।

তবে জ্যাক সুলিভানের এমন প্রস্তাবের জবাবে হুথি মিত্র ইরান জানিয়ে দেয়, এ ধরনের সেনা সেখানে ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন হবে। গত বৃহস্পতিবার ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ রেজা আশতিয়ানির সরকারি বার্তা সংস্থা ইরানি স্টুডেন্ট নিউজ এজেন্সিকে (আইএসএনএ) বলেছেন, তারা যদি এমন অযৌক্তিক পদক্ষেপ নেয় তাহলে ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন হবে। লোহিত সাগরের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে অঞ্চলে আমাদের আধিপত্য রয়েছে সেখানে কেউ এই ধরনের কাজ করতে পারবে না।