লোকবলের অভাবে ধুঁকছ কুবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:০৪:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুন ২০২২
  • / ১৯৫ Time View

সাঈদ হাসান, কুবিঃ

প্রয়োজনের তুলনায় কম লোকবল থাকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে কাজ শেষ করতে রীতিমত হিমশীম খেতে হচ্ছে। যার ফলে বিলম্বিত হচ্ছে পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি, ফলাফল প্রস্তুত, সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট প্রদানসহ যাবতীয় কাজ।

ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। তবে বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দোষ দিচ্ছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর।

জানা যায়, পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি ও যোগাযোগ সক্রান্ত কাজ, ফলাফল প্রস্তুত, রেকর্ড ও সংরক্ষণ, পরীক্ষা কমিটি, প্রশ্নপত্র সংরক্ষণ, বিশেষ পরীক্ষা গ্রহণ, উত্তর পত্র অধনস্থ ও বহিঃশিক্ষকের নিকট প্রেরণ ও তৃতীয় শিক্ষকের কাছে প্রেরন, স্লাতক ও স্নাতোকত্তর ইএমবিএর সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট প্রদানসহ সকল প্রত্যয়ন ও রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য দপ্তরটিতে খন্ডকালীনসহ মাত্র ১৯জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে।

যদিও, বিশ্ববিদ্যালয়ে সব সময় প্রায় ১১০টির মত সেমিষ্টার চলমান থাকে। করোনার পর ২টি সেমিষ্টার একসাথে নেওয়ার ফলে এখনও অনেকগুলো সেমিষ্টারের রেজাল্ট তৈরী করতে পারেনি দপ্তরটি। এরমধ্যে গত ৭ অক্টোবর একাডেমিক কাউন্সিলের ৬৪ তম সভায় কোভিড ১৯ মহামারির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার রিকভারি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮১ তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত হয়। ফলে সময় কমে ৪ মাসের ভিতর সেমিষ্টার শেষ করতে হচ্ছে। কিন্ত এই স্বল্পসংখ্যক লোকবল নিয়ে পুরো কর্মযজ্ঞ সম্পাদনে নাজেহাল হতে হচ্ছে পুরো দপ্তরকে।

এদিকে ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এমনকি বিভিন্ন সময়ে ফলাফল হাতে না পেয়ে ভালো চাকরির বিজ্ঞপ্তি হারানোর অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।

দপ্তরটির এক কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের সেকশন অপারেটরে মাত্র ১ জন লোক। এমন প্রতিটি স্তরে প্রয়োজনের তুলনায় লোকবল সংকট। এভাবে কাজ করতে রীতিমত বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আবির হোসেন নামে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বলেন, সঠিক সময়ে কখনও আমাদের রেজাল্ট হয় না। যার ফলে পরবর্তী সেমিষ্টার নিতেও বিলম্ব হয় নিয়মিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব থেকে গতিশীল দপ্তর হওয়া উচিত কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে দপ্তরটির কার্যক্রম এখনও কচ্ছপ গতির মত।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ নুরুল করিম চৌধূরী বলেন, আমাদের শাখাটা হচ্ছে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী সংশ্লিষ্ট। আমরা আমাদের সমস্যাগুলো প্রশাসনকে বারবার অবগত করেছি। রেজাল্ট সেকশনে মাত্র একজন অপারেটর আছে। একজনকেই মোট ১৯টি বিভাগের চিঠি তৈরী করতে হচ্ছে। আমাদের সমসাময়িক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই শাখায় ৪০ জনের উপরে লোক নিয়োগ আছে। আমাদের লোকবল দেওয়ার জন্য বিগত উপাচার্য এবং বর্তমান উপাচার্য মহোদয়কে একাধিকবার জানিয়েছি। কিন্তু কেন নিয়োগ দিচ্ছে না সেটা বলতে পারবো না।

এবিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন বলেন, আমরা ইউজিসিকে জানিয়েছি লোকবল সংকটের কথা। ইউজিসি লোক নিয়োগ না দিলে তো আমি কিছু করতে পারি না। এরপরও আমি অন্য কোথাও থেকে লোক দেওয়া যায় কিনা দেখবো।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

লোকবলের অভাবে ধুঁকছ কুবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর

Update Time : ১১:০৪:০১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ জুন ২০২২

সাঈদ হাসান, কুবিঃ

প্রয়োজনের তুলনায় কম লোকবল থাকায় কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে কাজ শেষ করতে রীতিমত হিমশীম খেতে হচ্ছে। যার ফলে বিলম্বিত হচ্ছে পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি, ফলাফল প্রস্তুত, সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট প্রদানসহ যাবতীয় কাজ।

ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের। তবে বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দোষ দিচ্ছে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর।

জানা যায়, পরীক্ষার পূর্ব প্রস্তুতি ও যোগাযোগ সক্রান্ত কাজ, ফলাফল প্রস্তুত, রেকর্ড ও সংরক্ষণ, পরীক্ষা কমিটি, প্রশ্নপত্র সংরক্ষণ, বিশেষ পরীক্ষা গ্রহণ, উত্তর পত্র অধনস্থ ও বহিঃশিক্ষকের নিকট প্রেরণ ও তৃতীয় শিক্ষকের কাছে প্রেরন, স্লাতক ও স্নাতোকত্তর ইএমবিএর সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট প্রদানসহ সকল প্রত্যয়ন ও রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য দপ্তরটিতে খন্ডকালীনসহ মাত্র ১৯জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে।

যদিও, বিশ্ববিদ্যালয়ে সব সময় প্রায় ১১০টির মত সেমিষ্টার চলমান থাকে। করোনার পর ২টি সেমিষ্টার একসাথে নেওয়ার ফলে এখনও অনেকগুলো সেমিষ্টারের রেজাল্ট তৈরী করতে পারেনি দপ্তরটি। এরমধ্যে গত ৭ অক্টোবর একাডেমিক কাউন্সিলের ৬৪ তম সভায় কোভিড ১৯ মহামারির ক্ষতি পুষিয়ে নিতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিজাস্টার রিকভারি পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮১ তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত হয়। ফলে সময় কমে ৪ মাসের ভিতর সেমিষ্টার শেষ করতে হচ্ছে। কিন্ত এই স্বল্পসংখ্যক লোকবল নিয়ে পুরো কর্মযজ্ঞ সম্পাদনে নাজেহাল হতে হচ্ছে পুরো দপ্তরকে।

এদিকে ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় বিড়ম্বনা পোহাতে হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের। এমনকি বিভিন্ন সময়ে ফলাফল হাতে না পেয়ে ভালো চাকরির বিজ্ঞপ্তি হারানোর অভিযোগ তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।

দপ্তরটির এক কর্মকর্তা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের সেকশন অপারেটরে মাত্র ১ জন লোক। এমন প্রতিটি স্তরে প্রয়োজনের তুলনায় লোকবল সংকট। এভাবে কাজ করতে রীতিমত বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে আবির হোসেন নামে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী বলেন, সঠিক সময়ে কখনও আমাদের রেজাল্ট হয় না। যার ফলে পরবর্তী সেমিষ্টার নিতেও বিলম্ব হয় নিয়মিত। বিশ্ববিদ্যালয়ের সব থেকে গতিশীল দপ্তর হওয়া উচিত কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে দপ্তরটির কার্যক্রম এখনও কচ্ছপ গতির মত।

পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ নুরুল করিম চৌধূরী বলেন, আমাদের শাখাটা হচ্ছে শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী সংশ্লিষ্ট। আমরা আমাদের সমস্যাগুলো প্রশাসনকে বারবার অবগত করেছি। রেজাল্ট সেকশনে মাত্র একজন অপারেটর আছে। একজনকেই মোট ১৯টি বিভাগের চিঠি তৈরী করতে হচ্ছে। আমাদের সমসাময়িক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এই শাখায় ৪০ জনের উপরে লোক নিয়োগ আছে। আমাদের লোকবল দেওয়ার জন্য বিগত উপাচার্য এবং বর্তমান উপাচার্য মহোদয়কে একাধিকবার জানিয়েছি। কিন্তু কেন নিয়োগ দিচ্ছে না সেটা বলতে পারবো না।

এবিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. এফ. এম. আবদুল মঈন বলেন, আমরা ইউজিসিকে জানিয়েছি লোকবল সংকটের কথা। ইউজিসি লোক নিয়োগ না দিলে তো আমি কিছু করতে পারি না। এরপরও আমি অন্য কোথাও থেকে লোক দেওয়া যায় কিনা দেখবো।