হল খোলার বিষয়ে আলোচনা হয়নি ঢাবির প্রভোস্ট কমিটিতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৮:২৪:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০
  • / ১০১ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলা হবে নাকি পরীক্ষার তারিখ পেছানো হবে এ বিষয়ে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এমনকি বিষয়টি আলোচনাও করেনি বলে জানিয়েছে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়৷

এর আগে গত বৃহস্পতিবার হল খোলার বিষয়ে প্রশাসনের অবস্থান জানতে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করতে তার কার্যালয়ে যান ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। উপাচার্য ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনাকালে বলেছেন, ‌একাডেমিক কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্ট ফোরামে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির জানান, প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির মূল এজেন্ডা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন করা। যত্রতত্র ময়লা পড়েছিলো, সেগুলোর সমন্বয় করা। যাতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের যারা আছি তারা সবাই ভালো থাকি, সুস্থ থাকতে পারি।

হলগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও পুরাতন স্ট্রাকচারগুলো সংস্কার করার কথা জানিয়ে ড. বাছির বলেন, বিভিন্ন হলের দরজা-জানালা, গ্যাস, বৈদ্যুতিক লাইন ঠিক-ঠাক আছে কিনা এসব বিষয় সম্পর্কে উপাচার্য খোঁজ-খবর নিয়েছেন৷ যদি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী খুলতে হয় তা যাতে অল্প সময়ের মধ্যে খোলা যায় তা যেন নিশ্চিত করতে পারি। একেবারে আপডেট রাখা।

শিক্ষার্থীদের সহযোগীতার বিষয়টি আলোচনা হয়েছিলো জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের এ করোনাকালীন সময়ে কতটুকু সাপোর্ট দিতে পেরেছি। তারাতো খালি হাতে চলে গিয়েছিলো। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি তাদের সহযোগীতা করার। কোনো কমপ্লেইন সেভাবে নেই, এক দু’টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া।

তবে পরীক্ষাকে সামনে রেখে হল খোলা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আকবর হোসাইন বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা প্রত্যাশা করেছি আজকে প্রশাসন কোনো একটি সিদ্ধান্ত জানাবে। কিন্তু তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনাই করেনি। এটি জঘন্যতম একটি কাজ হয়েছে।

ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনাকালে ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাবেক স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী। তিনি বলেন, উপাচার্য হল খোলার বিষয়টি একাডেমিক কমিটিতে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের দিকে তাকিয়েছিলো। কিন্তু আজকে তারা প্রভোস্ট কমিটিতে এ বিষয়েই আলোচনাই করেননি। এটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের চরমভাবে হতাশ করেছে। শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। তারা কি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবে, ঢাকায় আসবে নাকি গ্রামেই থাকবেন। তারা জানেন না, কি করবে। অনেক শিক্ষার্থী তাদের পরীক্ষা নিয়েও শঙ্কায় পড়ে গেছে।

গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেয় যে ২৬ ডিসেম্বর থেকে স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা হবে। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে হলগুলো বন্ধই থাকছে। শুরু থেকেই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছে সব ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীরা। হল খোলার দাবিতে ছাত্রলীগ ১২ ডিসেম্বর বিবৃতি ও ১৩ ডিসেম্বর উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছে। পরীক্ষা নেওয়ার আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলও।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

হল খোলার বিষয়ে আলোচনা হয়নি ঢাবির প্রভোস্ট কমিটিতে

Update Time : ০৮:২৪:২১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক চতুর্থ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খোলা হবে নাকি পরীক্ষার তারিখ পেছানো হবে এ বিষয়ে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। এমনকি বিষয়টি আলোচনাও করেনি বলে জানিয়েছে প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি ও বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়৷

এর আগে গত বৃহস্পতিবার হল খোলার বিষয়ে প্রশাসনের অবস্থান জানতে উপাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করতে তার কার্যালয়ে যান ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ। উপাচার্য ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনাকালে বলেছেন, ‌একাডেমিক কাউন্সিলসহ সংশ্লিষ্ট ফোরামে আলোচনা করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

অধ্যাপক ড. আব্দুল বাছির জানান, প্রভোস্ট স্ট্যান্ডিং কমিটির মূল এজেন্ডা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন করা। যত্রতত্র ময়লা পড়েছিলো, সেগুলোর সমন্বয় করা। যাতে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের যারা আছি তারা সবাই ভালো থাকি, সুস্থ থাকতে পারি।

হলগুলো পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও পুরাতন স্ট্রাকচারগুলো সংস্কার করার কথা জানিয়ে ড. বাছির বলেন, বিভিন্ন হলের দরজা-জানালা, গ্যাস, বৈদ্যুতিক লাইন ঠিক-ঠাক আছে কিনা এসব বিষয় সম্পর্কে উপাচার্য খোঁজ-খবর নিয়েছেন৷ যদি বিশ্ববিদ্যালয় সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী খুলতে হয় তা যাতে অল্প সময়ের মধ্যে খোলা যায় তা যেন নিশ্চিত করতে পারি। একেবারে আপডেট রাখা।

শিক্ষার্থীদের সহযোগীতার বিষয়টি আলোচনা হয়েছিলো জানিয়ে তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের এ করোনাকালীন সময়ে কতটুকু সাপোর্ট দিতে পেরেছি। তারাতো খালি হাতে চলে গিয়েছিলো। আমরা সাধ্যমত চেষ্টা করছি তাদের সহযোগীতা করার। কোনো কমপ্লেইন সেভাবে নেই, এক দু’টি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া।

তবে পরীক্ষাকে সামনে রেখে হল খোলা সংক্রান্ত বিষয়ে কোনো ধরনের সিদ্ধান্ত না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আকবর হোসাইন বলেন, আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের দিকে তাকিয়ে আছে। আমরা প্রত্যাশা করেছি আজকে প্রশাসন কোনো একটি সিদ্ধান্ত জানাবে। কিন্তু তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনাই করেনি। এটি জঘন্যতম একটি কাজ হয়েছে।

ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের সাথে আলোচনাকালে ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর সাবেক স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী। তিনি বলেন, উপাচার্য হল খোলার বিষয়টি একাডেমিক কমিটিতে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন। শিক্ষার্থীরা তাদের দিকে তাকিয়েছিলো। কিন্তু আজকে তারা প্রভোস্ট কমিটিতে এ বিষয়েই আলোচনাই করেননি। এটি সাধারণ শিক্ষার্থীদের চরমভাবে হতাশ করেছে। শিক্ষার্থীরা সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছে। তারা কি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিবে, ঢাকায় আসবে নাকি গ্রামেই থাকবেন। তারা জানেন না, কি করবে। অনেক শিক্ষার্থী তাদের পরীক্ষা নিয়েও শঙ্কায় পড়ে গেছে।

গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল সিদ্ধান্ত নেয় যে ২৬ ডিসেম্বর থেকে স্নাতক শেষ বর্ষ ও স্নাতকোত্তরের পরীক্ষা হবে। তবে করোনা ভাইরাসের কারণে হলগুলো বন্ধই থাকছে। শুরু থেকেই এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে আসছে সব ছাত্রসংগঠন ও শিক্ষার্থীরা। হল খোলার দাবিতে ছাত্রলীগ ১২ ডিসেম্বর বিবৃতি ও ১৩ ডিসেম্বর উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছে। পরীক্ষা নেওয়ার আগে স্বাস্থ্যবিধি মেনে আবাসিক হল খুলে দেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্মারকলিপি দিয়েছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলও।