স্মৃতির পাতায় প্রথম বর্ষ

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৯:০৯:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জুলাই ২০২০
  • / ১০৭ Time View

 

আজাহার ইসলামঃ

প্রথম বর্ষে কাটানো দিনগুলো সম্পর্কে অনুভূতি ব্যক্ত করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বিপু আহমেদ বলেন, ‘এই সময়ে এসে শুধু মনে হয়, আমার ধুলোবালি জমা বই, আমার বন্ধুরা সব কই। ভাল্লাগেনা এই মিথ্যে শহর, রাতের আড়ালে রই।’

তেমনি আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তামান্না তাবাসসুম ডানা বলেন, ‘ভার্সিটি এক স্বপ্নের জায়গা, স্বপ্ন পুরনের জায়গা। প্রথম নিজের বাড়ি ছেড়ে নতুন জায়গা, নতুন মানুষ। প্রথম বর্ষে সবাই একসাথে থাকাটা খুব আনন্দের ছিল। সারাদিন ঘোরাঘুরি, খাওয়া-দাওয়া, সবার সাথে আড্ডার দিনগুলো ছিল স্বপ্নের মতো। এখন খুব মিস করি আগের সেই সময়গুলো। প্রথম বর্ষ মানেই অন্যরকম অনুভূতি। মনে হয় আবার যদি ফিরে পেতাম!’

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রতিটা সময় স্মৃতিতে ভরপুর। তবে প্রথম বর্ষের স্মৃতিগুলো বেশি নাড়া দেয়। দাগ কেটে যায় মনে। এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা যে প্রথম বর্ষের মূহুর্তগুলোকে মিস করেনা। রাতের আধাঁরে বন্ধুদের সাথে গানের আসর জমানো, দলবেঁধে ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণায় বিচরণের সময় শুধু প্রথম বর্ষেই আসে। আবেগ হোক কিংবা উচ্ছ্বাসে।

দিনটি ছিল শুক্রবার। তখন করোনা মহামারির হানা দেয়নি আমাদের প্রিয় মাতৃভুতিতে। জুমার নামাজের পরে খাওয়া দাওয়া সেরে সবাই মিলিত হয়েছিলাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল খেলার মাঠে। ঘুরতে আর আড্ডা দিতে দিতে কখন যে সন্ধ্যা হয়ে এসেছিলো টেরই পায়নি কেউ। সেখানে বসে এক বছর আগের স্মৃতিতে ফিরে গিয়েছিলাম সবাই।

গল্পের মাঝে অনেকেই প্রথম বর্ষের স্মৃতিচারণ করলো। মনে পরে গেল সেই প্রথম দিনের স্মৃতি। ক্লাস শেষে মেতে উঠেছিলাম হৈ-হুল্লোড়ে। বিশেষ করে ক্যাম্পাসের আড্ডার প্রাণকেন্দ্র ডায়না চত্বরে আমাদের মত বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আড্ডায় মেতে উঠেছিল। এছাড়াও মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব মুর‍্যাল সংলগ্ন এলাকা, শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ, মুক্তবাংলা, টিএসসিসি, বটতলা মফিজ লেকসহ ক্যাম্পাসের প্রতিটি চত্বর মুখরিত হয়ে উঠেছিল সেদিন। সাথে সেলফি ও ক্যামেরার ক্লিকের শব্দ তো আছেই।

স্কুল, কলেজের বাঁধাধরা পড়াশোনার গন্ডি পেরিয়ে পরিবার থেকে দূরে জ্ঞানের সাগরে অবগাহন করার প্রথম ধাপ বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দিয়েই মনের মধ্যে জেগে ওঠে অজানা হাজারো আকাশছোঁয়া স্বপ্ন, হাজারো অনুভূতি। নিজেদের লালিত স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে পথচলা শুরু করে একঝাঁক মেধাবী তরুণ। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রাণোচ্ছল চাঞ্চল্যতায় ভরে থাকে গোটা ক্যাম্পাস।

নবীনদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রাঙ্গণ। আনন্দের ঢেউ যেন দোলা দেয় ক্যাম্পাসের প্রতিটি বৃক্ষের শাখায় শাখায়। তাদের সাদরে বরণ করতেও চলে নানা আয়োজন। প্রথম দিনের ক্লাসেই বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষমন্ডলী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতিমূলক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন এবং বিভিন্ন নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে পরামর্শ দেন। একইসাথে বিভাগের বড়রাও কিছু দিকনির্দেশনা দেন। আমাদের সাথেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। শিক্ষক ও বড়দের দিকনির্দেশনা মেনে পথচলা শুরু ১৭৫ একরের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

লেখকঃ শিক্ষার্থী,ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

স্মৃতির পাতায় প্রথম বর্ষ

Update Time : ০৯:০৯:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩ জুলাই ২০২০

 

আজাহার ইসলামঃ

প্রথম বর্ষে কাটানো দিনগুলো সম্পর্কে অনুভূতি ব্যক্ত করে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী বিপু আহমেদ বলেন, ‘এই সময়ে এসে শুধু মনে হয়, আমার ধুলোবালি জমা বই, আমার বন্ধুরা সব কই। ভাল্লাগেনা এই মিথ্যে শহর, রাতের আড়ালে রই।’

তেমনি আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তামান্না তাবাসসুম ডানা বলেন, ‘ভার্সিটি এক স্বপ্নের জায়গা, স্বপ্ন পুরনের জায়গা। প্রথম নিজের বাড়ি ছেড়ে নতুন জায়গা, নতুন মানুষ। প্রথম বর্ষে সবাই একসাথে থাকাটা খুব আনন্দের ছিল। সারাদিন ঘোরাঘুরি, খাওয়া-দাওয়া, সবার সাথে আড্ডার দিনগুলো ছিল স্বপ্নের মতো। এখন খুব মিস করি আগের সেই সময়গুলো। প্রথম বর্ষ মানেই অন্যরকম অনুভূতি। মনে হয় আবার যদি ফিরে পেতাম!’

বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রতিটা সময় স্মৃতিতে ভরপুর। তবে প্রথম বর্ষের স্মৃতিগুলো বেশি নাড়া দেয়। দাগ কেটে যায় মনে। এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা যে প্রথম বর্ষের মূহুর্তগুলোকে মিস করেনা। রাতের আধাঁরে বন্ধুদের সাথে গানের আসর জমানো, দলবেঁধে ক্যাম্পাসের প্রতিটি কোণায় বিচরণের সময় শুধু প্রথম বর্ষেই আসে। আবেগ হোক কিংবা উচ্ছ্বাসে।

দিনটি ছিল শুক্রবার। তখন করোনা মহামারির হানা দেয়নি আমাদের প্রিয় মাতৃভুতিতে। জুমার নামাজের পরে খাওয়া দাওয়া সেরে সবাই মিলিত হয়েছিলাম ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ফুটবল খেলার মাঠে। ঘুরতে আর আড্ডা দিতে দিতে কখন যে সন্ধ্যা হয়ে এসেছিলো টেরই পায়নি কেউ। সেখানে বসে এক বছর আগের স্মৃতিতে ফিরে গিয়েছিলাম সবাই।

গল্পের মাঝে অনেকেই প্রথম বর্ষের স্মৃতিচারণ করলো। মনে পরে গেল সেই প্রথম দিনের স্মৃতি। ক্লাস শেষে মেতে উঠেছিলাম হৈ-হুল্লোড়ে। বিশেষ করে ক্যাম্পাসের আড্ডার প্রাণকেন্দ্র ডায়না চত্বরে আমাদের মত বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আড্ডায় মেতে উঠেছিল। এছাড়াও মৃত্যুঞ্জয়ী মুজিব মুর‍্যাল সংলগ্ন এলাকা, শহীদ মিনার, স্মৃতিসৌধ, মুক্তবাংলা, টিএসসিসি, বটতলা মফিজ লেকসহ ক্যাম্পাসের প্রতিটি চত্বর মুখরিত হয়ে উঠেছিল সেদিন। সাথে সেলফি ও ক্যামেরার ক্লিকের শব্দ তো আছেই।

স্কুল, কলেজের বাঁধাধরা পড়াশোনার গন্ডি পেরিয়ে পরিবার থেকে দূরে জ্ঞানের সাগরে অবগাহন করার প্রথম ধাপ বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দিয়েই মনের মধ্যে জেগে ওঠে অজানা হাজারো আকাশছোঁয়া স্বপ্ন, হাজারো অনুভূতি। নিজেদের লালিত স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিতে পথচলা শুরু করে একঝাঁক মেধাবী তরুণ। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রাণোচ্ছল চাঞ্চল্যতায় ভরে থাকে গোটা ক্যাম্পাস।

নবীনদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে ক্যাম্পাসের প্রতিটি প্রাঙ্গণ। আনন্দের ঢেউ যেন দোলা দেয় ক্যাম্পাসের প্রতিটি বৃক্ষের শাখায় শাখায়। তাদের সাদরে বরণ করতেও চলে নানা আয়োজন। প্রথম দিনের ক্লাসেই বিভাগের শ্রদ্ধেয় শিক্ষমন্ডলী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিতিমূলক বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন এবং বিভিন্ন নিয়ম-শৃঙ্খলা মেনে চলতে পরামর্শ দেন। একইসাথে বিভাগের বড়রাও কিছু দিকনির্দেশনা দেন। আমাদের সাথেও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। শিক্ষক ও বড়দের দিকনির্দেশনা মেনে পথচলা শুরু ১৭৫ একরের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।

লেখকঃ শিক্ষার্থী,ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া।