লালমনিরহাটে তিস্তার ভাঙ্গনে বিলীন আবাদি জমি ও বসতভিটা!

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৩:২৫:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুন ২০২০
  • / ১৯১ Time View
মোঃ লিখন হোসাইন,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর ভাঙ্গন জটিল আকার ধারন করেছে। প্রতিক্ষনেই নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে বসত ভিটা সহ আবাদী জমি। নদী ভাঙ্গনের আতংকে অনিরাময় নির্ঘুম রাত কাটছে তিস্তা পাড়ের মানুষজন।
.
ইতোমধ্যে ভোটমারী ইউনিয়ন ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন সহ অনেক গ্রামের নদী গর্ভে চলে গেছে শতাধিক পরিবারের বসতভিটা, কয়েকশ বিঘা আবাদি জমি, বেশ কয়েকটি বাঁশঝাড়, ফলের বাগান ও স্থাপনা। ভাঙ্গন ভয়ে আতংকিত হয়ে অনেক পরিবারের লোকজন তাদের ঘর-বাড়ী সরিয়ে ফেলছেন অন্যত্রে।
.
কেটে ফেলছেন বসতভিটার উপর গাছপালা। কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছেনা নদী ভাঙ্গন। ভাঙ্গন কবলিত লোকজন তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
.
নদীর অনবরত ভাঙ্গনের শিকার হওয়া পরিবারের লোকজনের মধ্যে চলছে শুধু কান্না আর কান্না। প্রিয় বসতভিটাটিও শেষ পর্যন্ত নদী গর্ভে চলে যাওয়া কাঁদতে কাঁদতে অনেকে হয়েছেন বাকরুদ্ধ।
.
অনেকে ভাঙ্গন ভয়ে বসতভিটা থেকে বাড়ী-ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন অন্যত্রে। কেটে কেটে নিয়ে যাচ্ছেন গাছপালা।নদীর অতর্কিত ভাঙ্গনের কারনে এসব গ্রামের লোকজন কাটাচ্ছেন নির্ঘুম রাত। অর্থাভাবে অনেকের দিন কাটছে অর্ধাহারে- অনাহারে।
.
ভাঙ্গনকবলিত এলাকার বাসিন্দা ক্রেরামত আলী, আব্দুর ছালাম, হাসেম জানান, অতিবৃষ্টির ফলে তিস্তা নদীতে ভাঙ্গন বেড়েছে।গেল এক বছরে আমাদের ফসলী জমি,বাঁশ ঝাড় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।অনেকে বেশ কয়েকবার বাড়ীঘর সরিয়ে নিয়েছেন। এতে আর্থিক ক্ষতির কবলে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ। ভাঙ্গন থেমে নেই। নদীতে বাঁধ দেয়া না হলে অতি দ্রুত আমাদের চর খোর্দ্দ বিছনদই ও পশ্চিম বিছনদই গ্রাম দুটি বিলীন হয়ে যাবে।
.
বেশি ভাঙ্গন কবলিত এলাকাগুলো হলো খোর্দ্দ বিছনদই, পশ্চিম বিছনদই, পূর্ব ডাউয়াবাড়ী, পশ্চিম ডাউয়াবাড়ী, উত্তর ডাউয়াবাড়ী, দক্ষিন ডাউয়াবাড়ী সহ ১৫টি গ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীভাঙ্গনে মানুষজন সর্বশান্ত হয়ে গেছে।একদিকে করোনার কারনে এসব খেটে খাওয়া মানুষ বর্তমানে কর্মহীন হয়ে পড়েছে অপরদিকে শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন।ফলে অনাহারে ,অর্ধাহারে তাদের জীবন কাটছে।
.
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাট জেলার উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল কাদের জানান,জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গনরোধের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।বিশেষজ্ঞ দল ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছে।দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
.
অবিলম্বে ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহন করে জমি জায়গা ঘরবাড়ী সহ সকল স্থাপনা রক্ষার দাবী তিস্তা নদী ভাঙ্গনকবলিত এলাকার লোকজনের।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

লালমনিরহাটে তিস্তার ভাঙ্গনে বিলীন আবাদি জমি ও বসতভিটা!

Update Time : ০৩:২৫:১২ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ জুন ২০২০
মোঃ লিখন হোসাইন,লালমনিরহাট প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর ভাঙ্গন জটিল আকার ধারন করেছে। প্রতিক্ষনেই নদীগর্ভে তলিয়ে যাচ্ছে বসত ভিটা সহ আবাদী জমি। নদী ভাঙ্গনের আতংকে অনিরাময় নির্ঘুম রাত কাটছে তিস্তা পাড়ের মানুষজন।
.
ইতোমধ্যে ভোটমারী ইউনিয়ন ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন সহ অনেক গ্রামের নদী গর্ভে চলে গেছে শতাধিক পরিবারের বসতভিটা, কয়েকশ বিঘা আবাদি জমি, বেশ কয়েকটি বাঁশঝাড়, ফলের বাগান ও স্থাপনা। ভাঙ্গন ভয়ে আতংকিত হয়ে অনেক পরিবারের লোকজন তাদের ঘর-বাড়ী সরিয়ে ফেলছেন অন্যত্রে।
.
কেটে ফেলছেন বসতভিটার উপর গাছপালা। কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছেনা নদী ভাঙ্গন। ভাঙ্গন কবলিত লোকজন তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
.
নদীর অনবরত ভাঙ্গনের শিকার হওয়া পরিবারের লোকজনের মধ্যে চলছে শুধু কান্না আর কান্না। প্রিয় বসতভিটাটিও শেষ পর্যন্ত নদী গর্ভে চলে যাওয়া কাঁদতে কাঁদতে অনেকে হয়েছেন বাকরুদ্ধ।
.
অনেকে ভাঙ্গন ভয়ে বসতভিটা থেকে বাড়ী-ঘর সরিয়ে নিচ্ছেন অন্যত্রে। কেটে কেটে নিয়ে যাচ্ছেন গাছপালা।নদীর অতর্কিত ভাঙ্গনের কারনে এসব গ্রামের লোকজন কাটাচ্ছেন নির্ঘুম রাত। অর্থাভাবে অনেকের দিন কাটছে অর্ধাহারে- অনাহারে।
.
ভাঙ্গনকবলিত এলাকার বাসিন্দা ক্রেরামত আলী, আব্দুর ছালাম, হাসেম জানান, অতিবৃষ্টির ফলে তিস্তা নদীতে ভাঙ্গন বেড়েছে।গেল এক বছরে আমাদের ফসলী জমি,বাঁশ ঝাড় নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।অনেকে বেশ কয়েকবার বাড়ীঘর সরিয়ে নিয়েছেন। এতে আর্থিক ক্ষতির কবলে পড়েছেন এসব এলাকার মানুষ। ভাঙ্গন থেমে নেই। নদীতে বাঁধ দেয়া না হলে অতি দ্রুত আমাদের চর খোর্দ্দ বিছনদই ও পশ্চিম বিছনদই গ্রাম দুটি বিলীন হয়ে যাবে।
.
বেশি ভাঙ্গন কবলিত এলাকাগুলো হলো খোর্দ্দ বিছনদই, পশ্চিম বিছনদই, পূর্ব ডাউয়াবাড়ী, পশ্চিম ডাউয়াবাড়ী, উত্তর ডাউয়াবাড়ী, দক্ষিন ডাউয়াবাড়ী সহ ১৫টি গ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, নদীভাঙ্গনে মানুষজন সর্বশান্ত হয়ে গেছে।একদিকে করোনার কারনে এসব খেটে খাওয়া মানুষ বর্তমানে কর্মহীন হয়ে পড়েছে অপরদিকে শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন।ফলে অনাহারে ,অর্ধাহারে তাদের জীবন কাটছে।
.
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড লালমনিরহাট জেলার উপ বিভাগীয় প্রকৌশলী আব্দুল কাদের জানান,জরুরী ভিত্তিতে ভাঙ্গনরোধের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে।বিশেষজ্ঞ দল ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছে।দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
.
অবিলম্বে ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা গ্রহন করে জমি জায়গা ঘরবাড়ী সহ সকল স্থাপনা রক্ষার দাবী তিস্তা নদী ভাঙ্গনকবলিত এলাকার লোকজনের।