যৌন পেশাকে স্বীকৃতি দিলেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১২:০৬:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২
  • / ১৯৫ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

যৌন পেশাকে স্বীকৃতি দিয়ে রায় দিয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। দেশটির আইনের আওতায় এখন থেকে যৌনকর্মীরা অন্য আর দশটা পেশার লোকদের মতো সমান মর্যাদা ও সুরক্ষা পাবেন। যারা স্বেচ্ছায় এ পেশায় আসবেন তাদের কোনো হয়রানি করা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

বৃহস্পতিবার (২৬ মে) ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় দেন।

ভারতের সুপ্রীম কোর্টের আদেশে বলা হয়েছে, যৌনকর্মীদের গ্রেফতার বা শাস্তি দেওয়া বা হয়রানি করা উচিত নয় কারণ স্বেচ্ছায় যৌন কাজ ‘বেআইনি নয়’ এবং শুধু যৌনপল্লি বেআইনি।

আদালতের পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, ‘যৌনকর্মীরাও আইনের চোখে সমান সুরক্ষার অধিকারী। যখন এটা স্পষ্ট যে, যৌনকর্মী এক জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং সম্মতি সাপেক্ষেই যৌন কাজ করছেন, তখন পুলিশকে অকারণে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনো ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। ‘এই দেশের প্রত্যেক ব্যক্তির ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের অধীনে একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবনের অধিকার রয়েছে।’

আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, মা যৌনপেশায় আছেন, শুধু সেই যুক্তিতে সন্তানকে তার মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া যাবে না। এ ছাড়া কোনো যৌনকর্মী যদি তার বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে যান, তা হলে সেটিও সমান মনোযোগের সঙ্গে দেখবেন পুলিশকর্মী। বিশেষত, যদি যৌনকর্মী তার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা বা অপরাধের অভিযোগ নিয়ে আসেন, তা হলে দ্রুত তার শারীরিক পরীক্ষা করে তদন্ত শুরু করতে হবে। এ ক্ষেত্রে, একজন সাধারণ মানুষ যেমন সুবিধার অধিকারী, একজন যৌনকর্মীর ক্ষেত্রেও তার অন্যথা করা যাবে না। কোনো ঘটনা ঘটলে যৌনকর্মীদের পরিচয় যেন প্রকাশ্যে না আসে, সে ব্যাপারেও স্পষ্ট নির্দেশিকা দিয়েছেন আদালত।

মা যৌনকর্মী বলে তার সন্তানকে তার কাছ থেকে আলাদা করা যাবে না বলে আদেশে উল্লেখ করেছেন আদালত। বলেছেন, ‘কোনো ছোট শিশুকে যৌনপল্লি বা যৌনকর্মীর সঙ্গে দেখলেই তাকে পাচার করে আনা হয়েছে, তা ধারণা করা ঠিক হবে না। যদি কোনো ক্ষেত্রে একজন যৌনকর্মী কাউকে তার ছেলে বা মেয়ে দাবি করেন, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরীক্ষা করা যেতে পারে। তবে জোর করে তাদের আলাদা করা যাবে না।’

দেশটির সুপ্রিম কোর্ট সুপারিশগুলোর ব্যাপারে কেন্দ্রের মতামতও জানতে চেয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী ২৭ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি দিন ধার্য করেন আদালত।

সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার

Please Share This Post in Your Social Media

যৌন পেশাকে স্বীকৃতি দিলেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত

Update Time : ১২:০৬:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৭ মে ২০২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

যৌন পেশাকে স্বীকৃতি দিয়ে রায় দিয়েছেন ভারতের সর্বোচ্চ আদালত। দেশটির আইনের আওতায় এখন থেকে যৌনকর্মীরা অন্য আর দশটা পেশার লোকদের মতো সমান মর্যাদা ও সুরক্ষা পাবেন। যারা স্বেচ্ছায় এ পেশায় আসবেন তাদের কোনো হয়রানি করা যাবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।

বৃহস্পতিবার (২৬ মে) ভারতের সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতি এল নাগেশ্বর রাওয়ের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ এ রায় দেন।

ভারতের সুপ্রীম কোর্টের আদেশে বলা হয়েছে, যৌনকর্মীদের গ্রেফতার বা শাস্তি দেওয়া বা হয়রানি করা উচিত নয় কারণ স্বেচ্ছায় যৌন কাজ ‘বেআইনি নয়’ এবং শুধু যৌনপল্লি বেআইনি।

আদালতের পর্যবেক্ষণে আরও বলা হয়েছে, ‘যৌনকর্মীরাও আইনের চোখে সমান সুরক্ষার অধিকারী। যখন এটা স্পষ্ট যে, যৌনকর্মী এক জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং সম্মতি সাপেক্ষেই যৌন কাজ করছেন, তখন পুলিশকে অকারণে হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। কোনো ফৌজদারি ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। ‘এই দেশের প্রত্যেক ব্যক্তির ভারতের সংবিধানের ২১ অনুচ্ছেদের অধীনে একটি মর্যাদাপূর্ণ জীবনের অধিকার রয়েছে।’

আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, মা যৌনপেশায় আছেন, শুধু সেই যুক্তিতে সন্তানকে তার মায়ের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া যাবে না। এ ছাড়া কোনো যৌনকর্মী যদি তার বিরুদ্ধে সংঘটিত অপরাধের অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে যান, তা হলে সেটিও সমান মনোযোগের সঙ্গে দেখবেন পুলিশকর্মী। বিশেষত, যদি যৌনকর্মী তার বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থা বা অপরাধের অভিযোগ নিয়ে আসেন, তা হলে দ্রুত তার শারীরিক পরীক্ষা করে তদন্ত শুরু করতে হবে। এ ক্ষেত্রে, একজন সাধারণ মানুষ যেমন সুবিধার অধিকারী, একজন যৌনকর্মীর ক্ষেত্রেও তার অন্যথা করা যাবে না। কোনো ঘটনা ঘটলে যৌনকর্মীদের পরিচয় যেন প্রকাশ্যে না আসে, সে ব্যাপারেও স্পষ্ট নির্দেশিকা দিয়েছেন আদালত।

মা যৌনকর্মী বলে তার সন্তানকে তার কাছ থেকে আলাদা করা যাবে না বলে আদেশে উল্লেখ করেছেন আদালত। বলেছেন, ‘কোনো ছোট শিশুকে যৌনপল্লি বা যৌনকর্মীর সঙ্গে দেখলেই তাকে পাচার করে আনা হয়েছে, তা ধারণা করা ঠিক হবে না। যদি কোনো ক্ষেত্রে একজন যৌনকর্মী কাউকে তার ছেলে বা মেয়ে দাবি করেন, তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য পরীক্ষা করা যেতে পারে। তবে জোর করে তাদের আলাদা করা যাবে না।’

দেশটির সুপ্রিম কোর্ট সুপারিশগুলোর ব্যাপারে কেন্দ্রের মতামতও জানতে চেয়েছেন। একই সঙ্গে আগামী ২৭ জুলাই মামলার পরবর্তী শুনানি দিন ধার্য করেন আদালত।

সূত্র: এনডিটিভি, আনন্দবাজার