মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৬:৫৭:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪
  • / 32

১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আজ ২৩মে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচী পালন করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, কেন্দ্রীয় কমিটি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এর সঞ্চালনায় উক্ত কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স। আরোও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি আহসান হাবীব হাসান, ঢাকা জেলার সভাপতি ইকবাল হোসেনসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। শাহবাগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে শাহবাগ মোড়ে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। পরে সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে দপ্তর সমন্বয়ক মুহাম্মদ নূর আলম সরদার উক্ত স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছে দেন।

এর আগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড দীর্ঘদিন যাবত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় অন্যায়ভাবে বাতিল হওয়া ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। সংবিধান অনুযায়ী বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, নারী কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা, জেলা কোটা ও আদিবাসী কোটা পুনর্বহাল করতে হবে। সামাজিক সমতা নিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই সাংবিধানিক অধিকার কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে হবে। চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা কখনোই বৈষম্য তৈরী করে না। কোটা ব্যবস্থা সবসময় বৈষম্য দূর করে সমতা নিশ্চিত করে। রাষ্ট্রে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সমান সুযোগ সৃষ্টি করে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাজার হাজার সন্তানরা এখনো বেকার জীবন যাপন করছেন। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধারা এখনো অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। দেশ স্বাধীনের পর অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা বাড়িতে ফিরে দেখেছেন তাঁদের বাড়ি-ঘর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সম্মান দেয়ার পাশাপাশি ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা কোটা চালু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭২ সালে ৫ সেপ্টেম্বর এক আদেশের মাধ্যমে ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০% ক্ষতিগ্রস্থ নারী কোটা ও ৪০% জেলা কোটা রাখা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নেমে আসে কালো অন্ধকার। ১৯৭৫-৯৬ সাল দীর্ঘ একুশ (২১) বছর মুক্তিযোদ্ধা কোটার কোন বাস্তবায়ন হয়নি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাথে সাথেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপর নেমে আসে দুর্বিষহ অত্যাচার। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্রের কারণে এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাঁদের সন্তানদেরকে তাঁরা তেমন পড়াশোনা করাতে পারেননি। অর্থনৈতিক দৈন্যদশা, যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্থ দেশ, পালিয়ে বেড়ানো সব মিলিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ২১ বছর কোনো সুবিধা পাননি। এমনকি তারা স্বাধীন ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার পর্যন্ত হারিয়েছিলেন। ৯ মাস যুদ্ধের ক্ষতি এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ২১ বছরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল তা আজো কাটিয়ে উঠতে পারেননি। ১৯৯৬ সালে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার স্বপ্ন দেখলো ভালো ভাবে বেঁচে থাকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের কল্যাণে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি যখন ক্ষমতায় আসলেন ততদিনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরিতে প্রবেশের বয়স শেষ হয়ে যায়। ২১ বছর এই কোটা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কোন কাজে আসেনি। যখন আপনি দেখলেন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স শেষ তখন আপনি ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সন্তান পর্যন্ত বর্ধিত করেছিলেন। কিন্তু আপনি বার বার লক্ষ্য করছিলেন কোনো অবস্থাতেই বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরিতে নেওয়া হচ্ছে না। কারণ ১৯৭৫-৯৬ সালের মাঝে নিয়োগকৃত মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী আমলারা ব্যাপক শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের বংশধর আমলারা পাওয়া যাচ্ছে না বলে পদগুলো শূন্য দেখানো শুরু করে। ১৯৯৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সরকার আরেকটি পরিপত্র জারি করে যথাযথ ভাবে কোটা অনুসরণ এবং কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে খালি রাখা এবং খালি পদগুলো পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে নিয়োগ দিতে আদেশ জারি করে। সেটাও বাস্তবায়ন হয়নি। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে ৫ বছর চাকুরী প্রত্যাশী বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা নিয়োগ বঞ্চিত হন। ২০০৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত কেয়ারটেকার সরকার থাকা অবস্থায় আমরা ২ বছর নিয়োগ বঞ্চিত ছিলাম। এভাবে মোট কত বছর বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার নিয়োগ বঞ্চিত ছিলো তার পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো। ১৯৭২-৭৫ =৩ বছর কোটা কার্যকরী ছিল, ৭৫-৯৬=২১ বছর বঞ্চিত, ৯৬-২০০১ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে কোটা অনুসরণে চেষ্টা করার মাধ্যমে আংশিক কার্যকর হয় ৫ বছর, ২০০১-২০০৮ পর্যন্ত আবার নিয়োগ বঞ্চিত ৭ বছর। ২০১৮ সালে কোটা বাতিল হওয়ার পর ৫ বছর বঞ্চিত। তাহলে মোট ৪২ বছর। দেশ স্বাধীনের বয়স ৫৪ বছর। এর মাঝে ৪৪ বছর বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কোটা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আর মাঝের ১০ বছরে মুক্তিযোদ্ধা কোটার কার্যকারিতা ছিল মাত্র ৫% থেকে ৬%। কিন্তু কাগজে কলমে আমাদেরকে কোটা সুবিধার দায়ভার নিতে হয়েছে ৫৪ বছরের। ১৯৭২ সালের পর যদি মুক্তিযোদ্ধা কোটা সঠিক ভাবে প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন করা হতো তাহলে অনেক আগেই কোটা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যেতো। সত্যিকার অর্থে কোটা বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে আজও হাজার হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা বেকার অবস্থায় কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের সন্তানদেরকে আর্থিক সংকটে লেখাপড়া করাতে পারেননি। তাঁদেরকে সামনে এগিয়ে আনার জন্য বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের ন্যায় বঙ্গবন্ধু কোটা সুবিধা উপহার দিয়েছিলেন কিন্তু তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে কমিশন গঠন করতে হবে।”

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, “সংবিধান ২৯ (৩) ক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সমাজের যেকোন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য রাষ্ট্র বিশেষ বিধান প্রবর্তন করতে পারবে। নারী, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী, পিছিয়ে থাকা জেলাসমূহের শিক্ষার্থীদের জন্য জেলা কোটা পুনর্বহাল করার মাধ্যমে চাকরিতে বৈষম্য দূর করে সকলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও পর্যন্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়নি। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামাত জোটের তৎকালীন মন্ত্রী কুখ্যাত আলবদর কমাণ্ডার যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান আল মুজাহিদ একদিন জাতীয় সংসদে উচ্চকণ্ঠে বলেছিলেন, এদেশে কোনো মুক্তিযুদ্ধ হয়নি! তারা এধরণের ঔদ্ধত্যপূর্ণ রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য দিয়ে বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। কারণ আমাদের জাতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনার (Preamble of the Constitution) মধ্যে আজও পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা শব্দ যোগ করা হয়নি। আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনার শুরুতে বলা হয়েছে :”আমরা বাংলাদেশের জনগণ উনিশশো একাত্তর খ্রীস্টাব্দের মার্চ মাসের ছাব্বিশ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি”। দেশটা যে ঐতিহাসিক রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করেছে সেই “মুক্তিযুদ্ধ” কথাটি নেই। যাঁদের কারণে স্বাধীনতা পেয়েছি সেই “বীর মুক্তিযোদ্ধা” শব্দটি নেই। সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা শব্দদ্বয়ের স্বীকৃতি না থাকার ফলে অহরহ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও জাতীয় গৌরবের পবিত্রতার স্বার্থে সংবিধানের যথাযথ স্থানে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা শব্দদ্বয় সংযোজন করার দাবি জানাচ্ছি। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গুজব সৃষ্টিকারী ও ঢাবির ভিসির বাসায় হামলাকারীদেরকে চিহ্নিত করে আজও পর্যন্ত বিচার করা হয়নি। তদন্ত রিপোর্ট এখনো প্রকাশ হয়নি। অবিলম্বে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে ভিসির বাসায় হামলাকারী ও উস্কানিদাতাদের কে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। কোটা কখনো বৈষম্য তৈরী করে না, বরং কোটা ব্যবস্থা রাষ্ট্রে বৈষম্য দূর করে। অনেককে ভুল বুঝিয়ে রাস্তায় নামিয়ে সেদিন নুরু গংরা নিজেদের ফায়দা হাসিল করেছিল যা ইতিমধ্যে ছাত্রসমাজের নিকট প্রমাণিত হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে ইসরায়েলের এজেন্ট নুরু গংদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। নারী ও জেলা কোটার কারণে রাষ্ট্রের অধিকাংশ নাগরিক কোটা সুবিধার আওতায় পড়েন। বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রে কোটা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কোটা পুনর্বহালের কোন বিকল্প নেই। মেধা কোটার নাম পরিবর্তন করে সাধারণ কোটা নামে সংজ্ঞায়িত করা প্রয়োজন। কারণ কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তরা কখনোই অমেধাবী নয়। তারাও মেধাবী। তাদেরকেও প্রিলি, লিখিত ও ভাইভায় পাশ করার পর কোটা সুবিধা পেতে হয়। সরকারের নিকট দাবি, সংবিধান অনুযায়ী সামাজিক সমতা নিশ্চিত ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারী চাকুরিতে অন্যায়ভাবে বাতিল হওয়া মুক্তিযোদ্ধা, নারী, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী ও জেলা কোটা পুনর্বহাল করতে হবে। অন্যথায় খুব শীঘ্রই শাহবাগে লাগাতার অবরোধসহ সমগ্র বাংলাদেশে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড।”

সমাবেশে ঘোষিত ছয় (৬) দফা দাবিসমূহ হচ্ছে-

১। ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারী চাকুরিতে বাতিল হওয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহাল করতে হবে।

২। স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের তালিকা দ্রুত প্রকাশ করে তাদের পরিবারের সকলের নাগরিকত্ব বাতিল ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের অনুকূলে ফেরত নিতে হবে।

৩। বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের ওপর হামলা, মামলা, হত্যা ও নির্যাতন বন্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার নির্যাতন প্রতিরোধ সেল ও বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে।

৪। সংবিধানে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শব্দসমূহ সংযোজন করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।

৫। অবিলম্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অধিকার আদায়ের প্লাটফর্ম মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করতে হবে।

৬। দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশপূর্বক ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে গুজব সৃষ্টি ও ঢাবি ভিসির বাসায় হামলাকারী এবং উসকানিদাতাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

মুক্তিযোদ্ধা কোটা পুনর্বহালের দাবিতে প্রধানমন্ত্রীকে স্মারকলিপি

Update Time : ০৬:৫৭:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪

১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আজ ২৩মে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় শাহবাগ জাতীয় জাদুঘরের সামনে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা ও স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচী পালন করেছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড, কেন্দ্রীয় কমিটি। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন এর সঞ্চালনায় উক্ত কর্মসূচীতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স। আরোও বক্তব্য রাখেন সংগঠনের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি আহসান হাবীব হাসান, ঢাকা জেলার সভাপতি ইকবাল হোসেনসহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ। শাহবাগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে শাহবাগ মোড়ে মিছিল আটকে দেয় পুলিশ। পরে সংগঠনের প্রতিনিধি হিসেবে দপ্তর সমন্বয়ক মুহাম্মদ নূর আলম সরদার উক্ত স্মারকলিপি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পৌঁছে দেন।

এর আগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশের বক্তব্যে সংগঠনের সভাপতি মাহবুবুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, “মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড দীর্ঘদিন যাবত মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতায় অন্যায়ভাবে বাতিল হওয়া ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহালের দাবি জানাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড। সংবিধান অনুযায়ী বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা, নারী কোটা, প্রতিবন্ধী কোটা, জেলা কোটা ও আদিবাসী কোটা পুনর্বহাল করতে হবে। সামাজিক সমতা নিশ্চিত করার জন্য অবশ্যই সাংবিধানিক অধিকার কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে হবে। চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা কখনোই বৈষম্য তৈরী করে না। কোটা ব্যবস্থা সবসময় বৈষম্য দূর করে সমতা নিশ্চিত করে। রাষ্ট্রে সকল শ্রেণি পেশার মানুষের সমান সুযোগ সৃষ্টি করে। জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হাজার হাজার সন্তানরা এখনো বেকার জীবন যাপন করছেন। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধারা এখনো অনেক কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। দেশ স্বাধীনের পর অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা বাড়িতে ফিরে দেখেছেন তাঁদের বাড়ি-ঘর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সম্মান দেয়ার পাশাপাশি ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মুক্তিযোদ্ধা কোটা চালু করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু সরকার ১৯৭২ সালে ৫ সেপ্টেম্বর এক আদেশের মাধ্যমে ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০% ক্ষতিগ্রস্থ নারী কোটা ও ৪০% জেলা কোটা রাখা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নেমে আসে কালো অন্ধকার। ১৯৭৫-৯৬ সাল দীর্ঘ একুশ (২১) বছর মুক্তিযোদ্ধা কোটার কোন বাস্তবায়ন হয়নি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাথে সাথেই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের উপর নেমে আসে দুর্বিষহ অত্যাচার। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির ষড়যন্ত্রের কারণে এসময় বীর মুক্তিযোদ্ধারা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক ভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তাঁদের সন্তানদেরকে তাঁরা তেমন পড়াশোনা করাতে পারেননি। অর্থনৈতিক দৈন্যদশা, যুদ্ধ ক্ষতিগ্রস্থ দেশ, পালিয়ে বেড়ানো সব মিলিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা ২১ বছর কোনো সুবিধা পাননি। এমনকি তারা স্বাধীন ভাবে বেঁচে থাকার অধিকার পর্যন্ত হারিয়েছিলেন। ৯ মাস যুদ্ধের ক্ষতি এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার পর ২১ বছরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা যে ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিল তা আজো কাটিয়ে উঠতে পারেননি। ১৯৯৬ সালে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি ক্ষমতায় আসার পর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার স্বপ্ন দেখলো ভালো ভাবে বেঁচে থাকার। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের পরিবারের কল্যাণে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছিলেন। ১৯৯৬ সালে তিনি যখন ক্ষমতায় আসলেন ততদিনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের চাকরিতে প্রবেশের বয়স শেষ হয়ে যায়। ২১ বছর এই কোটা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কোন কাজে আসেনি। যখন আপনি দেখলেন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বয়স শেষ তখন আপনি ১৯৯৭ সালের ১৭ মার্চ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সন্তান পর্যন্ত বর্ধিত করেছিলেন। কিন্তু আপনি বার বার লক্ষ্য করছিলেন কোনো অবস্থাতেই বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরিতে নেওয়া হচ্ছে না। কারণ ১৯৭৫-৯৬ সালের মাঝে নিয়োগকৃত মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী আমলারা ব্যাপক শক্তিশালী হয়ে উঠেছিল। স্বাধীনতা বিরোধী পরিবারের বংশধর আমলারা পাওয়া যাচ্ছে না বলে পদগুলো শূন্য দেখানো শুরু করে। ১৯৯৮ সালের ১০ সেপ্টেম্বর সরকার আরেকটি পরিপত্র জারি করে যথাযথ ভাবে কোটা অনুসরণ এবং কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে খালি রাখা এবং খালি পদগুলো পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে নিয়োগ দিতে আদেশ জারি করে। সেটাও বাস্তবায়ন হয়নি। বিএনপি-জামাত জোট সরকারের আমলে ৫ বছর চাকুরী প্রত্যাশী বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা নিয়োগ বঞ্চিত হন। ২০০৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত কেয়ারটেকার সরকার থাকা অবস্থায় আমরা ২ বছর নিয়োগ বঞ্চিত ছিলাম। এভাবে মোট কত বছর বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার নিয়োগ বঞ্চিত ছিলো তার পরিসংখ্যান তুলে ধরা হলো। ১৯৭২-৭৫ =৩ বছর কোটা কার্যকরী ছিল, ৭৫-৯৬=২১ বছর বঞ্চিত, ৯৬-২০০১ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থেকে কোটা অনুসরণে চেষ্টা করার মাধ্যমে আংশিক কার্যকর হয় ৫ বছর, ২০০১-২০০৮ পর্যন্ত আবার নিয়োগ বঞ্চিত ৭ বছর। ২০১৮ সালে কোটা বাতিল হওয়ার পর ৫ বছর বঞ্চিত। তাহলে মোট ৪২ বছর। দেশ স্বাধীনের বয়স ৫৪ বছর। এর মাঝে ৪৪ বছর বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার কোটা সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। আর মাঝের ১০ বছরে মুক্তিযোদ্ধা কোটার কার্যকারিতা ছিল মাত্র ৫% থেকে ৬%। কিন্তু কাগজে কলমে আমাদেরকে কোটা সুবিধার দায়ভার নিতে হয়েছে ৫৪ বছরের। ১৯৭২ সালের পর যদি মুক্তিযোদ্ধা কোটা সঠিক ভাবে প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন করা হতো তাহলে অনেক আগেই কোটা ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা শেষ হয়ে যেতো। সত্যিকার অর্থে কোটা বাস্তবায়ন না হওয়ার কারণে আজও হাজার হাজার বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তানরা বেকার অবস্থায় কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। অনেক বীর মুক্তিযোদ্ধা তাঁদের সন্তানদেরকে আর্থিক সংকটে লেখাপড়া করাতে পারেননি। তাঁদেরকে সামনে এগিয়ে আনার জন্য বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের ন্যায় বঙ্গবন্ধু কোটা সুবিধা উপহার দিয়েছিলেন কিন্তু তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটার পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনে কমিশন গঠন করতে হবে।”

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন বলেন, “সংবিধান ২৯ (৩) ক অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সমাজের যেকোন পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সমাজের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার জন্য রাষ্ট্র বিশেষ বিধান প্রবর্তন করতে পারবে। নারী, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী, পিছিয়ে থাকা জেলাসমূহের শিক্ষার্থীদের জন্য জেলা কোটা পুনর্বহাল করার মাধ্যমে চাকরিতে বৈষম্য দূর করে সকলের সমান সুযোগ নিশ্চিত করতে হবে। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে গেলেও আজও পর্যন্ত বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হয়নি। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি বিএনপি-জামাত জোটের তৎকালীন মন্ত্রী কুখ্যাত আলবদর কমাণ্ডার যুদ্ধাপরাধী আলী আহসান আল মুজাহিদ একদিন জাতীয় সংসদে উচ্চকণ্ঠে বলেছিলেন, এদেশে কোনো মুক্তিযুদ্ধ হয়নি! তারা এধরণের ঔদ্ধত্যপূর্ণ রাষ্ট্রদ্রোহী বক্তব্য দিয়ে বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে। কারণ আমাদের জাতীয় সংবিধানের প্রস্তাবনার (Preamble of the Constitution) মধ্যে আজও পর্যন্ত মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা শব্দ যোগ করা হয়নি। আমাদের সংবিধানের প্রস্তাবনার শুরুতে বলা হয়েছে :”আমরা বাংলাদেশের জনগণ উনিশশো একাত্তর খ্রীস্টাব্দের মার্চ মাসের ছাব্বিশ তারিখে স্বাধীনতা ঘোষণা করিয়া জাতীয় মুক্তির জন্য ঐতিহাসিক মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন ও সার্বভৌম গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত করিয়াছি”। দেশটা যে ঐতিহাসিক রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করেছে সেই “মুক্তিযুদ্ধ” কথাটি নেই। যাঁদের কারণে স্বাধীনতা পেয়েছি সেই “বীর মুক্তিযোদ্ধা” শব্দটি নেই। সংবিধানে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা শব্দদ্বয়ের স্বীকৃতি না থাকার ফলে অহরহ মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও জাতীয় গৌরবের পবিত্রতার স্বার্থে সংবিধানের যথাযথ স্থানে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা শব্দদ্বয় সংযোজন করার দাবি জানাচ্ছি। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় গুজব সৃষ্টিকারী ও ঢাবির ভিসির বাসায় হামলাকারীদেরকে চিহ্নিত করে আজও পর্যন্ত বিচার করা হয়নি। তদন্ত রিপোর্ট এখনো প্রকাশ হয়নি। অবিলম্বে তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করে ভিসির বাসায় হামলাকারী ও উস্কানিদাতাদের কে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। কোটা কখনো বৈষম্য তৈরী করে না, বরং কোটা ব্যবস্থা রাষ্ট্রে বৈষম্য দূর করে। অনেককে ভুল বুঝিয়ে রাস্তায় নামিয়ে সেদিন নুরু গংরা নিজেদের ফায়দা হাসিল করেছিল যা ইতিমধ্যে ছাত্রসমাজের নিকট প্রমাণিত হয়েছে। সাধারণ শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে ইসরায়েলের এজেন্ট নুরু গংদের ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে। নারী ও জেলা কোটার কারণে রাষ্ট্রের অধিকাংশ নাগরিক কোটা সুবিধার আওতায় পড়েন। বিশ্বের অধিকাংশ রাষ্ট্রে কোটা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কোটা পুনর্বহালের কোন বিকল্প নেই। মেধা কোটার নাম পরিবর্তন করে সাধারণ কোটা নামে সংজ্ঞায়িত করা প্রয়োজন। কারণ কোটায় নিয়োগপ্রাপ্তরা কখনোই অমেধাবী নয়। তারাও মেধাবী। তাদেরকেও প্রিলি, লিখিত ও ভাইভায় পাশ করার পর কোটা সুবিধা পেতে হয়। সরকারের নিকট দাবি, সংবিধান অনুযায়ী সামাজিক সমতা নিশ্চিত ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারী চাকুরিতে অন্যায়ভাবে বাতিল হওয়া মুক্তিযোদ্ধা, নারী, আদিবাসী, প্রতিবন্ধী ও জেলা কোটা পুনর্বহাল করতে হবে। অন্যথায় খুব শীঘ্রই শাহবাগে লাগাতার অবরোধসহ সমগ্র বাংলাদেশে কঠোর কর্মসূচী ঘোষণা করবে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড।”

সমাবেশে ঘোষিত ছয় (৬) দফা দাবিসমূহ হচ্ছে-

১। ১ম ও ২য় শ্রেণীর সরকারী চাকুরিতে বাতিল হওয়া মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ সকল কোটা পুনর্বহাল করতে হবে।

২। স্বাধীনতা বিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলশামসদের তালিকা দ্রুত প্রকাশ করে তাদের পরিবারের সকলের নাগরিকত্ব বাতিল ও সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে রাষ্ট্রের অনুকূলে ফেরত নিতে হবে।

৩। বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের ওপর হামলা, মামলা, হত্যা ও নির্যাতন বন্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার নির্যাতন প্রতিরোধ সেল ও বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে।

৪। সংবিধানে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা শব্দসমূহ সংযোজন করে বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে।

৫। অবিলম্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারদের অধিকার আদায়ের প্লাটফর্ম মুক্তিযোদ্ধা সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করতে হবে।

৬। দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশপূর্বক ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের নামে গুজব সৃষ্টি ও ঢাবি ভিসির বাসায় হামলাকারী এবং উসকানিদাতাদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।