ভাড়া খাওয়া ছাড়া রাজউক নগর উন্নয়নে কী করেছে: মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৫:৪৫:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩
  • / ১০৮ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, ঢাকা শহরের উন্নয়নে নগর পরিকল্পনায় রাজউক কতটা উন্নতি করেছে তা এখন ভাবার বিষয়। তারা মার্কেট, কমিউনিটি সেন্টার এবং পার্ক তৈরি করছে ভাড়া দিয়ে খাচ্ছে। গরিবদের কাছ থেকে কম দামে জমি কিনে বড় লোকদের কাছে বিক্রি করছে। এর মাধ্যমে তারা শহর থেকে গরিব তাড়ানোর কাজ করছে। গবির মানুষেরা বাস্তুচ্যূত হয়ে এদিক সেদিক থাকছে।

তিনি বলেন, রাজউক নগর উন্নয়নে কতটুকু করেছে, আর গরীব তাড়ানোর কতটুকু করেছে- সেটা চিন্তার বিষয়।

শনিবার রাজধানীর আগারগাওঁয়ে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অডিটরিয়ামে ঢাকা ডেলিরিয়াম বইয়ের মোড়ক উন্মোচনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠেছে, তারা সেই উদ্দেশের কতটুকু করতে পারছে এখন সেটা ভাবার বিষয়।

মন্ত্রী বলেন, আমাকে পরিকল্পনামন্ত্রী বলা হয়, কিন্তু আমি পরিকল্পনার সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত না। আমার আশপাশের কিছু লোক আছে তারা পরিকল্পনা করে। তবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ও দেশের পরিকল্পনা সঠিকভাবে করতে পারছেনা। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে পরিকল্পনা কমিশন গঠন করেছিলেন তা কোনোটাই বাস্তবায়ন করতে পারছেনা পরিকল্পনা কমিশন। পলিটিক্যাল প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের নির্দেশে পরিকল্পনা করা হয়।

তিনি বলেন, সরকার এখন দারিদ্রমুক্ত এবং সারাদেশে বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সব বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। গ্রামের মানুষেরা যাতে শহরের সুবিধা পায় সেই লক্ষে সরকার কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা যে ৮০ ভাগ জিডিপিতে অবদান রাখে, এটা আদৌ কতো ভাগ রিয়েল তা ভাবার বিষয়। এখানে সুষম বণ্টন নেই। সরকার প্রধান সারাদেশে সুষম অবস্থা চাইছেন। এর জন্য ‘গ্রাম হবে শহর’ সেটি ভাবা হচ্ছে। এ ঢাকা শহর উন্নয়নে ভূমি দস্যুরা অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।

অনুষ্ঠানে পিপিআরসির নির্বাহী পরিচালক হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ঢাকাকে পরিকল্পিত করতে হলে ঢাকার বাইরে সমন্বিত পরিকল্পনা ও ঢাকা কেন্দ্রিক পরিকল্পনা এক সঙ্গে এগিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সুবিধা গ্রাম পর্যায়ে নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, মফস্বলে পুন-জাগরণ প্রয়োজন। শুধু নগরায়ন করলে হবেনা, অর্থনৈতিক পুন-জাগরণ প্রয়োজন। অর্থনৈতিক সুবিধা ছাড়া কোনো উন্নয়নই টেকসই হয় না।

আর্কিটেকচারের নির্বাহী পরিচালক আদনান বলেন, শহর পরিকল্পনায় সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ এটা একটা জটিল প্রক্রিয়া। তাই পরিকল্পনার ক্ষেত্রে দুই চার জনকে দিয়ে মহাপরিকল্পনা করা সম্ভব নয়। টেবিলে বসে নগর পরিকল্পনা করলে হবে না। বাইরে বের হতে হবে।

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, ঢাকা এখন বহু চরিত্রের সংমিশ্রণ। এই শহরটা অনেক বড় হয়ে গেছে। সময় ও চাহিদার অনুপাতে এখানে নানা কিছু তৈরি হয়েছে, তবে এখনও নারীদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়নি। পাবলিক টয়লেটের সংখ্যাই এতো অপ্রতুল যে কর্মজীবী নারীরা প্রতিদিনকার জীবনে চরমভাবে ভুক্তভোগী হন। এই বিষয় নিয়ে আমাদের আরও সংবেদনশীল হয়ে কাজ করতে হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ভাড়া খাওয়া ছাড়া রাজউক নগর উন্নয়নে কী করেছে: মন্ত্রী

Update Time : ০৫:৪৫:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুলাই ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, ঢাকা শহরের উন্নয়নে নগর পরিকল্পনায় রাজউক কতটা উন্নতি করেছে তা এখন ভাবার বিষয়। তারা মার্কেট, কমিউনিটি সেন্টার এবং পার্ক তৈরি করছে ভাড়া দিয়ে খাচ্ছে। গরিবদের কাছ থেকে কম দামে জমি কিনে বড় লোকদের কাছে বিক্রি করছে। এর মাধ্যমে তারা শহর থেকে গরিব তাড়ানোর কাজ করছে। গবির মানুষেরা বাস্তুচ্যূত হয়ে এদিক সেদিক থাকছে।

তিনি বলেন, রাজউক নগর উন্নয়নে কতটুকু করেছে, আর গরীব তাড়ানোর কতটুকু করেছে- সেটা চিন্তার বিষয়।

শনিবার রাজধানীর আগারগাওঁয়ে স্থানীয় প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) অডিটরিয়ামে ঢাকা ডেলিরিয়াম বইয়ের মোড়ক উন্মোচনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, যে উদ্দেশ্য নিয়ে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো গড়ে উঠেছে, তারা সেই উদ্দেশের কতটুকু করতে পারছে এখন সেটা ভাবার বিষয়।

মন্ত্রী বলেন, আমাকে পরিকল্পনামন্ত্রী বলা হয়, কিন্তু আমি পরিকল্পনার সঙ্গে কোনোভাবে জড়িত না। আমার আশপাশের কিছু লোক আছে তারা পরিকল্পনা করে। তবে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ও দেশের পরিকল্পনা সঠিকভাবে করতে পারছেনা। বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে পরিকল্পনা কমিশন গঠন করেছিলেন তা কোনোটাই বাস্তবায়ন করতে পারছেনা পরিকল্পনা কমিশন। পলিটিক্যাল প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের নির্দেশে পরিকল্পনা করা হয়।

তিনি বলেন, সরকার এখন দারিদ্রমুক্ত এবং সারাদেশে বৈষম্য দূরীকরণে কাজ করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সব বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নে অগ্রাধিকার দিচ্ছে। গ্রামের মানুষেরা যাতে শহরের সুবিধা পায় সেই লক্ষে সরকার কাজ করছে।

তিনি আরও বলেন, ঢাকা যে ৮০ ভাগ জিডিপিতে অবদান রাখে, এটা আদৌ কতো ভাগ রিয়েল তা ভাবার বিষয়। এখানে সুষম বণ্টন নেই। সরকার প্রধান সারাদেশে সুষম অবস্থা চাইছেন। এর জন্য ‘গ্রাম হবে শহর’ সেটি ভাবা হচ্ছে। এ ঢাকা শহর উন্নয়নে ভূমি দস্যুরা অগ্রণী ভূমিকা রাখছে।

অনুষ্ঠানে পিপিআরসির নির্বাহী পরিচালক হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ঢাকাকে পরিকল্পিত করতে হলে ঢাকার বাইরে সমন্বিত পরিকল্পনা ও ঢাকা কেন্দ্রিক পরিকল্পনা এক সঙ্গে এগিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সুবিধা গ্রাম পর্যায়ে নিশ্চিত করতে হবে।

তিনি বলেন, মফস্বলে পুন-জাগরণ প্রয়োজন। শুধু নগরায়ন করলে হবেনা, অর্থনৈতিক পুন-জাগরণ প্রয়োজন। অর্থনৈতিক সুবিধা ছাড়া কোনো উন্নয়নই টেকসই হয় না।

আর্কিটেকচারের নির্বাহী পরিচালক আদনান বলেন, শহর পরিকল্পনায় সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কারণ এটা একটা জটিল প্রক্রিয়া। তাই পরিকল্পনার ক্ষেত্রে দুই চার জনকে দিয়ে মহাপরিকল্পনা করা সম্ভব নয়। টেবিলে বসে নগর পরিকল্পনা করলে হবে না। বাইরে বের হতে হবে।

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির বলেন, ঢাকা এখন বহু চরিত্রের সংমিশ্রণ। এই শহরটা অনেক বড় হয়ে গেছে। সময় ও চাহিদার অনুপাতে এখানে নানা কিছু তৈরি হয়েছে, তবে এখনও নারীদের জন্য বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়নি। পাবলিক টয়লেটের সংখ্যাই এতো অপ্রতুল যে কর্মজীবী নারীরা প্রতিদিনকার জীবনে চরমভাবে ভুক্তভোগী হন। এই বিষয় নিয়ে আমাদের আরও সংবেদনশীল হয়ে কাজ করতে হবে।