ফিলিস্তিনকে উপেক্ষা করে ইসরায়েলের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে সৌদি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৮:২৬:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • / ১০৪ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গত কয়েক বছর ধরে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বহুল আলোচিত বিষয়- ইসরায়েলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নিপ্রধান মুসলিম রাষ্ট্র সৌদি আরবের শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা। গেল কয়েক মাসে বিষয়টি বহুদূর এগিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন উভয় পক্ষের রাষ্ট্রপ্রধানরা। সেই চুক্তির চূড়ান্ত ধাপে কী শর্ত রাখছে সৌদি আরব-এবার জানা গেল সেটিও।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, তেলআবিবের সঙ্গে শান্তিচুক্তির বিনিময়ে সৌদির নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বড় আকারের নিশ্চয়তা চায় রিয়াদ। এমনকি এ কারণে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিও ছাড় দিতে রাজি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। চুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে এমনটা জানায় রয়টার্স।

জানা যায়, রিয়াদ এবং ওয়াশিংটন ডিসির মধ্যকার প্রতিরক্ষা চুক্তিটি অনেকটা ন্যাটোর প্রতিরক্ষা সুরক্ষার মতো হতে পারে। ২০২২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সৌদি সফরে এ বিষয়ে আলোচনা করেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। রয়টার্স জানায়, রিয়াদ ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার প্রতিরক্ষা চুক্তিটি এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা চুক্তির মতো হতে পারে। যদি বিষয়টি কংগ্রেসের অনুমোদন না পায় মধ্যপ্রাচ্যের অপর রাষ্ট্র বাহরাইনের মতো দেশটিতে মার্কিন ঘাঁটি স্থাপন করা হতে পারে।

মার্কিন একটি সূত্র জানায়, ন্যাটোবহির্ভূত উল্লেখযোগ্য মিত্র হিসেবে সৌদি আরবকে স্বীকৃতি দিয়ে যে কোনো চুক্তি করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এই স্বীকৃতি এরই মধ্যে ইসরায়েলকে দেওয়া হয়েছে। তবে সৌদি সূত্রগুলো জানায়, চুক্তি স্বাক্ষরের শর্ত হিসেবে আক্রমণের শিকার হলে মার্কিন প্রতিরক্ষার বাধ্যতামূলক প্রতিশ্রুতি নিয়ে কোনো ছাড় দেবে না রিয়াদ।

চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করা হলে বিশ্বের বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশকে মার্কিন সুরক্ষার আওতায় নিয়ে আসার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের দুই কথিত শত্রুকে বন্ধু হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিবে। এমনটি অঞ্চলটিতে বেইজিংয়ের প্রবেশের পর ওয়াশিংটন ডিসি ও রিয়াদের পুরোনো মিত্রতা আরও মজবুত হয়ে নতুন রাজনীতির সূচনা করবে।

মধ্যপ্রাচ্যের সূত্রগুলো জানায়, রিয়াদ-তেলআবিবের মিত্রতা ফিলিস্তিনিদের জন্য ইরসায়েলি বিধিনিষেধের পরিমাণ কমিয়ে আনলেও তাদের স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিকে পিছিয়ে দিবে। এমনকি ফিলিস্তিনিদের বিরোধিতা সত্ত্বেও রিয়াদ তা থেকে ফিরে আসবে না বলে জানায় একটি সূত্র। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিন ছাড়াও এবার নিজেদের জন্য কিছু চায় সৌদি আরব।

এর আগে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদি যুবরাজ জানান, ইরান যদি পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হয় তবে সৌদি আরবেরও একই শক্তি থাকা প্রয়োজন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আঞ্চলিক আধিপত্য শক্তিশালী করতেই ফিলিস্তিনিদের স্বার্থে ছাড় দিতে বিন্দুমাত্র চিন্তা করছেন না যুবরাজ বিন সালমান। ইরানকে ঠেকাতেই ইসরায়েলের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনে উতলা হয়ে উঠেছেন সৌদির এই ডি-ফ্যাক্টো শাসক।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ফিলিস্তিনকে উপেক্ষা করে ইসরায়েলের সঙ্গে হাত মেলাচ্ছে সৌদি

Update Time : ০৮:২৬:০১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

গত কয়েক বছর ধরে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বহুল আলোচিত বিষয়- ইসরায়েলের সঙ্গে মধ্যপ্রাচ্যের সুন্নিপ্রধান মুসলিম রাষ্ট্র সৌদি আরবের শান্তিচুক্তির সম্ভাবনা। গেল কয়েক মাসে বিষয়টি বহুদূর এগিয়েছে বলে স্বীকার করেছেন উভয় পক্ষের রাষ্ট্রপ্রধানরা। সেই চুক্তির চূড়ান্ত ধাপে কী শর্ত রাখছে সৌদি আরব-এবার জানা গেল সেটিও।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানা যায়, তেলআবিবের সঙ্গে শান্তিচুক্তির বিনিময়ে সৌদির নিরাপত্তা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বড় আকারের নিশ্চয়তা চায় রিয়াদ। এমনকি এ কারণে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার দাবিও ছাড় দিতে রাজি সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। চুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে এমনটা জানায় রয়টার্স।

জানা যায়, রিয়াদ এবং ওয়াশিংটন ডিসির মধ্যকার প্রতিরক্ষা চুক্তিটি অনেকটা ন্যাটোর প্রতিরক্ষা সুরক্ষার মতো হতে পারে। ২০২২ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সৌদি সফরে এ বিষয়ে আলোচনা করেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। রয়টার্স জানায়, রিয়াদ ও ওয়াশিংটনের মধ্যকার প্রতিরক্ষা চুক্তিটি এশিয়ার রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা চুক্তির মতো হতে পারে। যদি বিষয়টি কংগ্রেসের অনুমোদন না পায় মধ্যপ্রাচ্যের অপর রাষ্ট্র বাহরাইনের মতো দেশটিতে মার্কিন ঘাঁটি স্থাপন করা হতে পারে।

মার্কিন একটি সূত্র জানায়, ন্যাটোবহির্ভূত উল্লেখযোগ্য মিত্র হিসেবে সৌদি আরবকে স্বীকৃতি দিয়ে যে কোনো চুক্তি করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র। এই স্বীকৃতি এরই মধ্যে ইসরায়েলকে দেওয়া হয়েছে। তবে সৌদি সূত্রগুলো জানায়, চুক্তি স্বাক্ষরের শর্ত হিসেবে আক্রমণের শিকার হলে মার্কিন প্রতিরক্ষার বাধ্যতামূলক প্রতিশ্রুতি নিয়ে কোনো ছাড় দেবে না রিয়াদ।

চুক্তিটিতে স্বাক্ষর করা হলে বিশ্বের বৃহত্তম তেল রপ্তানিকারক দেশকে মার্কিন সুরক্ষার আওতায় নিয়ে আসার পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যের দুই কথিত শত্রুকে বন্ধু হিসেবে পরিচয় করিয়ে দিবে। এমনটি অঞ্চলটিতে বেইজিংয়ের প্রবেশের পর ওয়াশিংটন ডিসি ও রিয়াদের পুরোনো মিত্রতা আরও মজবুত হয়ে নতুন রাজনীতির সূচনা করবে।

মধ্যপ্রাচ্যের সূত্রগুলো জানায়, রিয়াদ-তেলআবিবের মিত্রতা ফিলিস্তিনিদের জন্য ইরসায়েলি বিধিনিষেধের পরিমাণ কমিয়ে আনলেও তাদের স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবিকে পিছিয়ে দিবে। এমনকি ফিলিস্তিনিদের বিরোধিতা সত্ত্বেও রিয়াদ তা থেকে ফিরে আসবে না বলে জানায় একটি সূত্র। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, ফিলিস্তিন ছাড়াও এবার নিজেদের জন্য কিছু চায় সৌদি আরব।

এর আগে ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সৌদি যুবরাজ জানান, ইরান যদি পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হয় তবে সৌদি আরবেরও একই শক্তি থাকা প্রয়োজন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, আঞ্চলিক আধিপত্য শক্তিশালী করতেই ফিলিস্তিনিদের স্বার্থে ছাড় দিতে বিন্দুমাত্র চিন্তা করছেন না যুবরাজ বিন সালমান। ইরানকে ঠেকাতেই ইসরায়েলের সঙ্গে বন্ধুত্ব স্থাপনে উতলা হয়ে উঠেছেন সৌদির এই ডি-ফ্যাক্টো শাসক।