কেন্দ্রে সরকার গঠনের পক্ষে নয় নওয়াজের দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৭:৩৯:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
  • / ৩৬ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এর জ্যেষ্ঠ নেতারা কেন্দ্রে সরকার গঠনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। তারা বলছেন, এখন সরকার গঠন মানে, দলটির ‘মাথায় কাঁটার মুকুট পরা’। তাই তাদের এমন কোনো ইচ্ছা নেই।

নির্বাচনের পর সরকার গঠন নিয়ে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অনিশ্চয়তা চলার পর এ ইস্যুতে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) মধ্যে যখন সমঝোতা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়, সেই সময়ে এসে নতুন করে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন পিএমএল-এনের জ্যেষ্ঠ নেতারা।

তারা বলছেন, পাকিস্তান এখন সার্বিকভাবে খুবই টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। এখন সরকার গঠনের মানে হলো ‘স্বেচ্ছায় মাথায় কাঁটার মুকুট পরা’। পিএমএল-এনের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা খাজা সাদ রফিক দলের এই অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন।

সাদ রফিক বলেছেন, ফেডারেল সরকার গঠন সংসদের সকল দলের যৌথ দায়িত্ব, পিএমএল-এন এর নয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে শুক্রবার খাজা সাদ রফিক বলেন, পিটিআই যেহেতু সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে, তাই তাদেরই উচিত পিপিপির সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করা। দেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি, তাতে এই মুহূর্তে সরকার গঠনে নেতৃত্ব দেয়ার মানে হলো নিজের মুকুটকে কাঁটা দিয়ে সজ্জিত করা এবং আমরা মনে করি, পিএমএল-এনের এমন কোনো ইচ্ছে নেই।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, শুক্রবার লাহোরে পিএমএল-এনের উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শেহবাজ শরিফ, মরিয়ম নওয়াজ, ইসহাক দার, মরিয়ম আওরঙ্গজেব, খাজা সাদ রফিক, আজম নাজির তারার, আয়াজ সিদ্দিকীসহ আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা।

সেই বৈঠকে খাজা সাদ রফিকসহ কয়েকজন নেতা অভিমত দেন, পিএমএল-এনের উচিত কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের পরিবর্তে পাঞ্জাব প্রাদেশিক আইনসভায় সরকার গঠনের প্রতি মনযোগী হওয়া। কারণ পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে নেতৃত্ব দিলে দলের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে।

শেহবাজ শরিফ, মরিয়ম নওয়াজ বা মরিয়ম আওরঙ্গজেব বৈঠকে তাৎক্ষণিকভাবে এর জোরালো বিরোধিতা করেননি। তাছাড়া পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী ইসাক দার জানিয়েছেন, পাঞ্জাবে প্রাদেশিক সরকার গঠনের জন্য পিএমএলএন বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে।

তবে শুক্রবার রাতে পাকিস্তানের দৈনিক জংকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পিএমএলএনের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা আহসান ইকবাল বলেন, দেশকে স্থিতিশীল করতে পিএমএলএন জোট সরকার গঠনে নেতৃত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং দলের নীতির সঙ্গে কোনো প্রকার আপস না করেই এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে পিএমএলএন।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের নীতির প্রতি কঠোরভাবে অনুগত থাকব এবং একই সঙ্গে পাকিস্তানের উন্নয়নে নেতৃত্ব দেবো।

সাংবিধানিক বিধি অনুযায়ী, পাকিস্তানে কোনো দল বা জোট যদি সরকার গঠন করতে চায়— তাহলে সেই দল বা জোটকে অবশ্যই ১৩৩টি আসনে জয়ী হতে হবে। তবে ৮ তারিখের নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, পিটিআই, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-এন (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) দেশটির প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে পিটিআই। মোট ৯২টি আসনে জয়ী হয়েছেন পিটিআই প্রার্থীরা।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা পিএমএল-এন জয়ী হয়েছে মোট ৭৯টি আসনে এবং ৫৪টি আসন পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পিপিপি। অর্থাৎ সরকার গঠনের জন্য ন্যূনতম যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন, তা পায়নি কোনো দল।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

কেন্দ্রে সরকার গঠনের পক্ষে নয় নওয়াজের দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা

Update Time : ০৭:৩৯:১৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) এর জ্যেষ্ঠ নেতারা কেন্দ্রে সরকার গঠনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছেন। তারা বলছেন, এখন সরকার গঠন মানে, দলটির ‘মাথায় কাঁটার মুকুট পরা’। তাই তাদের এমন কোনো ইচ্ছা নেই।

নির্বাচনের পর সরকার গঠন নিয়ে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে অনিশ্চয়তা চলার পর এ ইস্যুতে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) মধ্যে যখন সমঝোতা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায়, সেই সময়ে এসে নতুন করে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন পিএমএল-এনের জ্যেষ্ঠ নেতারা।

তারা বলছেন, পাকিস্তান এখন সার্বিকভাবে খুবই টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে। এখন সরকার গঠনের মানে হলো ‘স্বেচ্ছায় মাথায় কাঁটার মুকুট পরা’। পিএমএল-এনের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা খাজা সাদ রফিক দলের এই অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন।

সাদ রফিক বলেছেন, ফেডারেল সরকার গঠন সংসদের সকল দলের যৌথ দায়িত্ব, পিএমএল-এন এর নয়।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে শুক্রবার খাজা সাদ রফিক বলেন, পিটিআই যেহেতু সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে, তাই তাদেরই উচিত পিপিপির সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করা। দেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি, তাতে এই মুহূর্তে সরকার গঠনে নেতৃত্ব দেয়ার মানে হলো নিজের মুকুটকে কাঁটা দিয়ে সজ্জিত করা এবং আমরা মনে করি, পিএমএল-এনের এমন কোনো ইচ্ছে নেই।

পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, শুক্রবার লাহোরে পিএমএল-এনের উচ্চ পর্যায়ের একটি বৈঠক হয়েছে। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শেহবাজ শরিফ, মরিয়ম নওয়াজ, ইসহাক দার, মরিয়ম আওরঙ্গজেব, খাজা সাদ রফিক, আজম নাজির তারার, আয়াজ সিদ্দিকীসহ আরও কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা।

সেই বৈঠকে খাজা সাদ রফিকসহ কয়েকজন নেতা অভিমত দেন, পিএমএল-এনের উচিত কেন্দ্রীয় সরকার গঠনের পরিবর্তে পাঞ্জাব প্রাদেশিক আইনসভায় সরকার গঠনের প্রতি মনযোগী হওয়া। কারণ পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় সরকার গঠনে নেতৃত্ব দিলে দলের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়বে।

শেহবাজ শরিফ, মরিয়ম নওয়াজ বা মরিয়ম আওরঙ্গজেব বৈঠকে তাৎক্ষণিকভাবে এর জোরালো বিরোধিতা করেননি। তাছাড়া পাকিস্তানের সাবেক অর্থমন্ত্রী ইসাক দার জানিয়েছেন, পাঞ্জাবে প্রাদেশিক সরকার গঠনের জন্য পিএমএলএন বেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে।

তবে শুক্রবার রাতে পাকিস্তানের দৈনিক জংকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে পিএমএলএনের অন্যতম জ্যেষ্ঠ নেতা আহসান ইকবাল বলেন, দেশকে স্থিতিশীল করতে পিএমএলএন জোট সরকার গঠনে নেতৃত্ব দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং দলের নীতির সঙ্গে কোনো প্রকার আপস না করেই এক্ষেত্রে নেতৃত্ব দেবে পিএমএলএন।

তিনি বলেন, আমরা আমাদের নীতির প্রতি কঠোরভাবে অনুগত থাকব এবং একই সঙ্গে পাকিস্তানের উন্নয়নে নেতৃত্ব দেবো।

সাংবিধানিক বিধি অনুযায়ী, পাকিস্তানে কোনো দল বা জোট যদি সরকার গঠন করতে চায়— তাহলে সেই দল বা জোটকে অবশ্যই ১৩৩টি আসনে জয়ী হতে হবে। তবে ৮ তারিখের নির্বাচনের ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, পিটিআই, পাকিস্তান মুসলিম লীগ-এন (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) দেশটির প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছে পিটিআই। মোট ৯২টি আসনে জয়ী হয়েছেন পিটিআই প্রার্থীরা।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা পিএমএল-এন জয়ী হয়েছে মোট ৭৯টি আসনে এবং ৫৪টি আসন পেয়ে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে পিপিপি। অর্থাৎ সরকার গঠনের জন্য ন্যূনতম যে সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রয়োজন, তা পায়নি কোনো দল।