কাস্টমসে স্বর্ণ চুরির ঘটনায় রাজস্ব কর্মকর্তার জবানবন্দি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৬:২৭:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২০
  • / ১৮০ Time View
মো: সাহিদুল ইসলাম শাহীন,বেনাপোল(যশোর):
বেনাপোল কাস্টমস হাউজে প্রায় সাড়ে ১৯ কেজি সোনা চুরির মামলায় গ্রেফতার ভোল্ট ইনচার্জ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিবুল সরদার বুধবার(৯ ডিসেম্বর) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
.
জবানবন্দিতে শাহিবুল জানায়, বিভিন্ন সময় ভোল্টের ইনচার্জের দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তারা চাবি নিয়ে তাদের বাড়িতে যেতেন। তবে কখন কোন কর্মকর্তার কাছে থাকা চাবি নিয়ে কে বা কারা ডুপ্লিকেট চাবি তৈরি করে ভোল্ট থেকে সোনা চুরি করেছেন তা তিনি জানেন না, কিন্তু তিনি নির্দোষ।’ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শম্পা বসু তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
.
আসামী শাহিবুল সরদার রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলার বাঁধুলী গ্রামের খালপাড়া এলাকার মৃত জালাল সরদারের ছেলে। বেনাপোল কাষ্টমস সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সিআইডি পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। কিন্তু রিমান্ডের একদিন পরই তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। জবানবন্দিতে শাহিবুল সরদার আরও জানায়, বেনাপোল কাস্টমস হাউসের পুরাতন ভবনের ২য় তলার গোডাউনের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এই গোডাউনের বিভিন্ন ভোল্টে সোনা ও বিদেশি মুদ্রা সংরক্ষিত ছিল। চুরির ২ মাস আগে তিনি গোডাউনের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন আগের কর্মকর্তার কাছ থেকে। কাগজপত্র অনুযায়ী ভোল্টের মালামালও বুঝে নেন। আগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা গোডাউন ও ভোল্টের চাবি বাড়ি নিয়ে যেতেন। তাদের মত তিনিও গোডাউনের চাবি বাড়িতে নিয়ে যেতেন।
.
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর রাত ৮ টা থেকে ১১ নভেম্বর সকাল ৮টার মধ্যে যে কোনো সময় বেনাপোল কাস্টমস হাউজের পুরাতন ভবনের ২য় তলার গোডাউনের তালা ভেঙে চোরেরা ভোল্টের তালা খুলে ১৯ কেজি ৩১৮ দশমিক ৩ গ্রাম সোনা চুরি করে নিয়ে যায়। যার মূল্য ১০ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৬২ টাকা। এই ভোল্টের চাবি সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিবুল সরদারের কাছেই থাকতো। এছাড়া গোডাউনের বিভিন্ন লকারে সোনাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র থাকলেও সেগুলো অক্ষত ছিলো। তবে সোনা চুরির সময় সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিলো। বিষয়টি জানাজানি হলে কাস্টম হাউজে র রাজস্ব কর্মকর্তা এমদাদুল হক অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি মামলা করেন। একই সাথে কর্তৃপক্ষ গোডাউন ইনচার্জ শাহিবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপরই পুলিশ তাকে এই মামলায় গ্রেফতার করে। মামলার কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় ২৭ নভেম্বরে মামলা চলে যায় সিআইডিতে। এক বছরের অধিক সময়ে তদন্ত করেও কোন কুল কিনারা করতে পারেনি সিআইডি। অবশেশে ভোল্ট ইনচার্জ শাহিবুল সরদারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করায় তদন্তের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাবে বলে সিআইডি আশা করছে।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

কাস্টমসে স্বর্ণ চুরির ঘটনায় রাজস্ব কর্মকর্তার জবানবন্দি

Update Time : ০৬:২৭:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২০
মো: সাহিদুল ইসলাম শাহীন,বেনাপোল(যশোর):
বেনাপোল কাস্টমস হাউজে প্রায় সাড়ে ১৯ কেজি সোনা চুরির মামলায় গ্রেফতার ভোল্ট ইনচার্জ সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিবুল সরদার বুধবার(৯ ডিসেম্বর) আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে।
.
জবানবন্দিতে শাহিবুল জানায়, বিভিন্ন সময় ভোল্টের ইনচার্জের দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তারা চাবি নিয়ে তাদের বাড়িতে যেতেন। তবে কখন কোন কর্মকর্তার কাছে থাকা চাবি নিয়ে কে বা কারা ডুপ্লিকেট চাবি তৈরি করে ভোল্ট থেকে সোনা চুরি করেছেন তা তিনি জানেন না, কিন্তু তিনি নির্দোষ।’ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শম্পা বসু তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
.
আসামী শাহিবুল সরদার রাজবাড়ির বালিয়াকান্দি উপজেলার বাঁধুলী গ্রামের খালপাড়া এলাকার মৃত জালাল সরদারের ছেলে। বেনাপোল কাষ্টমস সূত্রে জানা গেছে, গত মঙ্গলবার সিআইডি পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। কিন্তু রিমান্ডের একদিন পরই তাকে আদালতে সোপর্দ করা হলে তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। জবানবন্দিতে শাহিবুল সরদার আরও জানায়, বেনাপোল কাস্টমস হাউসের পুরাতন ভবনের ২য় তলার গোডাউনের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। এই গোডাউনের বিভিন্ন ভোল্টে সোনা ও বিদেশি মুদ্রা সংরক্ষিত ছিল। চুরির ২ মাস আগে তিনি গোডাউনের দায়িত্ব বুঝে নিয়েছিলেন আগের কর্মকর্তার কাছ থেকে। কাগজপত্র অনুযায়ী ভোল্টের মালামালও বুঝে নেন। আগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা গোডাউন ও ভোল্টের চাবি বাড়ি নিয়ে যেতেন। তাদের মত তিনিও গোডাউনের চাবি বাড়িতে নিয়ে যেতেন।
.
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৭ নভেম্বর রাত ৮ টা থেকে ১১ নভেম্বর সকাল ৮টার মধ্যে যে কোনো সময় বেনাপোল কাস্টমস হাউজের পুরাতন ভবনের ২য় তলার গোডাউনের তালা ভেঙে চোরেরা ভোল্টের তালা খুলে ১৯ কেজি ৩১৮ দশমিক ৩ গ্রাম সোনা চুরি করে নিয়ে যায়। যার মূল্য ১০ কোটি ৪৩ লাখ ১৭ হাজার ৩৬২ টাকা। এই ভোল্টের চাবি সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা শাহিবুল সরদারের কাছেই থাকতো। এছাড়া গোডাউনের বিভিন্ন লকারে সোনাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র থাকলেও সেগুলো অক্ষত ছিলো। তবে সোনা চুরির সময় সিসি ক্যামেরা বন্ধ ছিলো। বিষয়টি জানাজানি হলে কাস্টম হাউজে র রাজস্ব কর্মকর্তা এমদাদুল হক অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর বেনাপোল পোর্ট থানায় একটি মামলা করেন। একই সাথে কর্তৃপক্ষ গোডাউন ইনচার্জ শাহিবুলকে সাময়িক বরখাস্ত করে। এরপরই পুলিশ তাকে এই মামলায় গ্রেফতার করে। মামলার কোনও অগ্রগতি না হওয়ায় ২৭ নভেম্বরে মামলা চলে যায় সিআইডিতে। এক বছরের অধিক সময়ে তদন্ত করেও কোন কুল কিনারা করতে পারেনি সিআইডি। অবশেশে ভোল্ট ইনচার্জ শাহিবুল সরদারের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করায় তদন্তের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাবে বলে সিআইডি আশা করছে।