করোনায় কর্মহীন হয়ে অভাবে সন্তান বিক্রি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০১:৩১:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুলাই ২০২১
  • / ১৪৫ Time View

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে করোনায় কর্মহীন হয়ে অর্থাভাবে ৪৫ হাজার টাকায় তিন মাসের সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন বাবা। খবর পেয়ে ১৬ দিন পর শুক্রবার (১৬ জুলাই) বিকালে শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। উদ্ধার শিশুটি উপজেলার নগদাশিমলা ইউনিয়নের সৈয়দপুর পূর্বপাড়া গ্রামের দিনমজুর শাহআলম ও রাবেয়া বেগমের দম্পতির।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর পূর্বপাড়া গ্রামের দিনমজুর শাহআলম ও রাবেয়া বেগমের দম্পতির তিন সন্তান। শাহ আলমের উপার্জনে তিন সন্তানসহ পাঁচ জনের সংসার চলছিল খুব কষ্টে। এর মধ্যে করোনায় দীর্ঘদিন বেকার হয়ে ঘরে বসে আছেন শাহআলম। পরিবারের সদস্যদের খাবার জোগাতে কিছু টাকা ঋণ করেছেন। পাওনাদাররা প্রতিদিন টাকার জন্য তাকে চাপ দিচ্ছিলেন।

একপর্যায়ে শাহআলম মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় পাওনা টাকা পরিশোধ ও পরিবারের সদস্যদের খাবার জোগাতে তিন মাসের সন্তানকে বিক্রি করে দেন শাহআলম। ১৬ দিন আগে উপজেলার বাইশকাইল গৈজারপাড়া গ্রামের সবুজ মিয়া ও স্বপ্না দম্পতি ৪৫ হাজার টাকায় শিশুটিকে কিনে নেন।

শিশুর মা রাবেয়া বেগম বলেন, ‘তিন সন্তানসহ পাঁচ সদস্যের সংসার আমাদের। করোনার কারণে দিনমজুর স্বামী বেকার হয়ে পড়েন। খুব কষ্টে সংসার চলছিল। উপায় না পেয়ে ৪৫ হাজার টাকায় সন্তানকে বিক্রি করে দেন স্বামী। স্থানীয় প্রশাসন সন্তানকে আমার কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে। ইউএনও আমাদের আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।’

গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সবুজ ও স্বপ্না দম্পতি নিঃসন্তান। তারা শাহআলম ও রাবেয়া দম্পতির সংসারে অভাব-অনটনের সুযোগ নিয়ে ৪৫ হাজার টাকায় শিশুটিকে কিনে নেন। আদালতের অনুমতি নিয়ে দত্তক নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু তারা সেটি করেননি। এ কারণে স্থানীয় প্রশাসন সবুজ মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শিশু আলহাজকে উদ্ধার করে মা রাবেয়া বেগমের কোলে ফিরিয়ে দেয়।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ মল্লিক বলেন, ‘ওই পরিবারটিকে সার্বিকভাবে সহায়তা দেওয়া হবে। রাবেয়া বেগমকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে আয়া পদে চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তাও দেওয়া হয়েছে তাদের।’

Please Share This Post in Your Social Media

করোনায় কর্মহীন হয়ে অভাবে সন্তান বিক্রি

Update Time : ০১:৩১:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ জুলাই ২০২১

টাঙ্গাইলের গোপালপুরে করোনায় কর্মহীন হয়ে অর্থাভাবে ৪৫ হাজার টাকায় তিন মাসের সন্তানকে বিক্রি করে দিয়েছেন বাবা। খবর পেয়ে ১৬ দিন পর শুক্রবার (১৬ জুলাই) বিকালে শিশুটিকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। উদ্ধার শিশুটি উপজেলার নগদাশিমলা ইউনিয়নের সৈয়দপুর পূর্বপাড়া গ্রামের দিনমজুর শাহআলম ও রাবেয়া বেগমের দম্পতির।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুর পূর্বপাড়া গ্রামের দিনমজুর শাহআলম ও রাবেয়া বেগমের দম্পতির তিন সন্তান। শাহ আলমের উপার্জনে তিন সন্তানসহ পাঁচ জনের সংসার চলছিল খুব কষ্টে। এর মধ্যে করোনায় দীর্ঘদিন বেকার হয়ে ঘরে বসে আছেন শাহআলম। পরিবারের সদস্যদের খাবার জোগাতে কিছু টাকা ঋণ করেছেন। পাওনাদাররা প্রতিদিন টাকার জন্য তাকে চাপ দিচ্ছিলেন।

একপর্যায়ে শাহআলম মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় পাওনা টাকা পরিশোধ ও পরিবারের সদস্যদের খাবার জোগাতে তিন মাসের সন্তানকে বিক্রি করে দেন শাহআলম। ১৬ দিন আগে উপজেলার বাইশকাইল গৈজারপাড়া গ্রামের সবুজ মিয়া ও স্বপ্না দম্পতি ৪৫ হাজার টাকায় শিশুটিকে কিনে নেন।

শিশুর মা রাবেয়া বেগম বলেন, ‘তিন সন্তানসহ পাঁচ সদস্যের সংসার আমাদের। করোনার কারণে দিনমজুর স্বামী বেকার হয়ে পড়েন। খুব কষ্টে সংসার চলছিল। উপায় না পেয়ে ৪৫ হাজার টাকায় সন্তানকে বিক্রি করে দেন স্বামী। স্থানীয় প্রশাসন সন্তানকে আমার কোলে ফিরিয়ে দিয়েছে। ইউএনও আমাদের আর্থিক সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন।’

গোপালপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সবুজ ও স্বপ্না দম্পতি নিঃসন্তান। তারা শাহআলম ও রাবেয়া দম্পতির সংসারে অভাব-অনটনের সুযোগ নিয়ে ৪৫ হাজার টাকায় শিশুটিকে কিনে নেন। আদালতের অনুমতি নিয়ে দত্তক নেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু তারা সেটি করেননি। এ কারণে স্থানীয় প্রশাসন সবুজ মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে শিশু আলহাজকে উদ্ধার করে মা রাবেয়া বেগমের কোলে ফিরিয়ে দেয়।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ মল্লিক বলেন, ‘ওই পরিবারটিকে সার্বিকভাবে সহায়তা দেওয়া হবে। রাবেয়া বেগমকে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে আয়া পদে চাকরি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। নগদ অর্থ ও খাদ্য সহায়তাও দেওয়া হয়েছে তাদের।’