কক্সবাজারে নারী পর্যটক ধর্ষণ মামলায় হোটেল ম্যানেজার চার দিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৯:৩০:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১
  • / ১৯৪ Time View

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজারে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক রুহুল আমিন।

আজ (২৫ ডিসেম্বর) শনিবার বিকেলে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হলে তাকে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ। পরে আদালত শুনানি শেষে জ্যেষ্ঠ বিচারক হামিমুন তাসনিম চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ওই গৃহবধূ স্বামী কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন। তাতে চারজনের নাম উল্লেখ ও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার ছোটনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যিনি মামলার ৪ নম্বর আসামি ছিলেন। তাকে ছাড়া আর কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

বাকী অন্য আসামিরা হলেন— কক্সবাজার শহরের মধ্যম বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম (প্রধান আসামি), মোহাম্মদ শফি ওরফে ইসরাফিল হুদা জয় ওরফে জয়া ও মেহেদী হাসান বাবু।

এদিকে, গতকাল শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগ তোলা গৃহবধূ কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হামীমুন তানজীনের আদালতে জবানবন্দি দেন।

ওই সময় গৃহবধূ আদালতকে জানান, তার সন্তান জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। সন্তানের চিকিৎসার জন্য টাকা প্রয়োজন। সেই টাকা যোগাড় করতেই তিন মাস আগে তারা কক্সবাজারে আসেন। কক্সবাজারে তিন মাস ধরে তারা বিভিন্ন হোটেলে রুম ভাড়া করে থাকছেন বলেও জবানবন্দিতে জানান ওই নারী।

তিনি আরও বলেন, আশিক তার স্বামীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। সে টাকা না দেয়ার কারণেই কক্সবাজারের একটি হোটেলের সামনে থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান, প্রধান আসামি আশিকুল ইসলাম আশিকের বিরুদ্ধে এর আগেও ইয়াবা, ছিনতাইসহ নানা অপরাধের অভিযোগে ১৬টি মামলা রয়েছে। অভিযুক্ত আশিকসহ মামলার সব আসামিকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (২২ ডিসেম্বর) কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে স্বামী-সন্তানসহ হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে উঠেন ওই নারী। বিকেলে লাবণী পয়েন্টে অপরিচিত এক তরুণের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগলে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার আট মাসের সন্তান ও স্বামীকে সিএনজি অটোরিকশায় করে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। ওই নারীকে পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এরপর তাকে জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে নিয়ে ইয়াবা সেবনের পর আরেক দফা ধর্ষণ করা হয়। পরে তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে এক তরুণের সহায়তায় র‌্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অভিযান চালিয়ে ওই নারীকে হোটেল থেকে উদ্ধার করে র‌্যাব।

পরেরদিন বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) ওই নারীর স্বামী এ ঘটনায় চার জনকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিন জনকেও আসামি করা হয়। এখন পর্যন্ত হোটেল ম্যানেজার ছোটন ছাড়া আর কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

কক্সবাজারে নারী পর্যটক ধর্ষণ মামলায় হোটেল ম্যানেজার চার দিনের রিমান্ডে

Update Time : ০৯:৩০:৩৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

কক্সবাজারে এক গৃহবধূকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রেপ্তার রিয়াজ উদ্দিন ছোটনকে চার দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ট্যুরিস্ট পুলিশের পরিদর্শক রুহুল আমিন।

আজ (২৫ ডিসেম্বর) শনিবার বিকেলে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে তোলা হলে তাকে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশ। পরে আদালত শুনানি শেষে জ্যেষ্ঠ বিচারক হামিমুন তাসনিম চারদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

গত বৃহস্পতিবার রাতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে ওই গৃহবধূ স্বামী কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন। তাতে চারজনের নাম উল্লেখ ও তিনজনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে গেস্ট ইন হোটেলের ম্যানেজার ছোটনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যিনি মামলার ৪ নম্বর আসামি ছিলেন। তাকে ছাড়া আর কাউকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

বাকী অন্য আসামিরা হলেন— কক্সবাজার শহরের মধ্যম বাহারছড়া এলাকার আশিকুল ইসলাম (প্রধান আসামি), মোহাম্মদ শফি ওরফে ইসরাফিল হুদা জয় ওরফে জয়া ও মেহেদী হাসান বাবু।

এদিকে, গতকাল শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে ‘সংঘবদ্ধ ধর্ষণের’ অভিযোগ তোলা গৃহবধূ কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হামীমুন তানজীনের আদালতে জবানবন্দি দেন।

ওই সময় গৃহবধূ আদালতকে জানান, তার সন্তান জন্মের পর থেকেই অসুস্থ। সন্তানের চিকিৎসার জন্য টাকা প্রয়োজন। সেই টাকা যোগাড় করতেই তিন মাস আগে তারা কক্সবাজারে আসেন। কক্সবাজারে তিন মাস ধরে তারা বিভিন্ন হোটেলে রুম ভাড়া করে থাকছেন বলেও জবানবন্দিতে জানান ওই নারী।

তিনি আরও বলেন, আশিক তার স্বামীর কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। সে টাকা না দেয়ার কারণেই কক্সবাজারের একটি হোটেলের সামনে থেকে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

কক্সবাজার জোনের পুলিশ সুপার জিল্লুর রহমান জানান, প্রধান আসামি আশিকুল ইসলাম আশিকের বিরুদ্ধে এর আগেও ইয়াবা, ছিনতাইসহ নানা অপরাধের অভিযোগে ১৬টি মামলা রয়েছে। অভিযুক্ত আশিকসহ মামলার সব আসামিকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত বুধবার (২২ ডিসেম্বর) কক্সবাজারে বেড়াতে গিয়ে স্বামী-সন্তানসহ হলিডে মোড়ের একটি হোটেলে উঠেন ওই নারী। বিকেলে লাবণী পয়েন্টে অপরিচিত এক তরুণের সঙ্গে তার স্বামীর ধাক্কা লাগলে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে সন্ধ্যার পর পর্যটন গলফ মাঠের সামনে থেকে তার আট মাসের সন্তান ও স্বামীকে সিএনজি অটোরিকশায় করে কয়েকজন তুলে নিয়ে যায়। ওই নারীকে পর্যটন গলফ মাঠের পেছনে একটি ঝুপড়ি চায়ের দোকানের পেছনে নিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এরপর তাকে জিয়া গেস্ট ইন হোটেলে নিয়ে ইয়াবা সেবনের পর আরেক দফা ধর্ষণ করা হয়। পরে তৃতীয় তলার জানালা দিয়ে এক তরুণের সহায়তায় র‌্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অভিযান চালিয়ে ওই নারীকে হোটেল থেকে উদ্ধার করে র‌্যাব।

পরেরদিন বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) ওই নারীর স্বামী এ ঘটনায় চার জনকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলায় ৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও দুই-তিন জনকেও আসামি করা হয়। এখন পর্যন্ত হোটেল ম্যানেজার ছোটন ছাড়া আর কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।