ইতিহাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখল হাওয়াই

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১০:৪১:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অগাস্ট ২০২৩
  • / ৯৪ Time View

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কয়েক দিন ধরে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বীপ অঙ্গরাজ্য হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপ। কয়েক দিনের দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছে আরও এক হাজার মানুষ। দ্বীপ অঙ্গরাজ্যটির ইতিহাসে এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আগে কখনো আঘাত হানেনি।

এর আগে ১৯৬০ সালে হাওয়াইয়ের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনেছিল। তখন সুনামিতে রাজ্যের ৬১ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) রাতে হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপ এবং বিগ আইল্যান্ডে দাবানল শুরু হয়। ভয়াবহ এই দাবানলের কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে হারিকেন থেকে সৃষ্ট ঝড়ো হাওয়া ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে আগুন এত ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

হাওয়াইয়ের গভর্নর যশ গ্রিন বলেন, মাউই দ্বীপের পশ্চিম উপকূলীয় পর্যটন শহর লাহাইনা পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এমন ধ্বংসযজ্ঞ বাসিন্দারা আগে কখনো দেখেননি।

ইতিহাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখল হাওয়াই
যুক্তরাষ্ট্রে নজিরবিহীনভাবে বেড়েছে আত্মহত্যা
এর আগে স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে হাওয়াইয়ের গভর্নর যশ গ্রিন এই দাবানলকে সেখানকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে অভিহিত করে দিনটিকে হৃদয়বিদারক বলে বর্ণনা করেন।

গ্রিন বলেন, লাহাইনার ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রায় ১ হাজার ৭০০টি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। দাবানলের কারণে ঠিক কতজন নিখোঁজ রয়েছেন, তার প্রকৃত সংখ্যা কর্তৃপক্ষের জানা নেই। তবে সংখ্যাটি এক হাজারের নিচে হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যোগাযোগব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় লোকজনকে খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতোমধ্যে দ্বীপটি থেকে ১৪ হাজারেরও বেশি পর্যটককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আগুনে শত শত বাড়ি পুড়ে যাওয়ায় কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে। তাদের বেশিরভাগই লাহাইনার বাসিন্দা। তাদের জন্য ২ হাজার ঘরের ব্যবস্থা করতে বলেছেন গভর্নর গ্রিন। পাশাপাশি সম্ভব হলে গৃহহীনদের আশ্রয় দিতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। দ্বীপের বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ ব্যাহত হয়েছে। দুই হাজারের বেশি মানুষ বৃহস্পতিবার রাতে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করেছে। পশ্চিম মাউই শহরে প্রায় ১১ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।

দাবানল এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি বলে জানিয়েছে দমকল কর্তৃপক্ষ। তবে শুক্রবার লাহাইনার বাসিন্দাদের বাড়িতে ফেরার অনুমতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যদিও তাদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, জীবনে কখনো দেখেনি এমন ধ্বংসযজ্ঞ তাদের জন্য শহরে অপেক্ষা করছে। এ ছাড়া রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

ইতিহাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখল হাওয়াই

Update Time : ১০:৪১:৩৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ অগাস্ট ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

কয়েক দিন ধরে ভয়াবহ দাবানলে পুড়ছে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বীপ অঙ্গরাজ্য হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপ। কয়েক দিনের দাবানলে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছে আরও এক হাজার মানুষ। দ্বীপ অঙ্গরাজ্যটির ইতিহাসে এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ আগে কখনো আঘাত হানেনি।

এর আগে ১৯৬০ সালে হাওয়াইয়ের সবচেয়ে ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ আঘাত হেনেছিল। তখন সুনামিতে রাজ্যের ৬১ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) রাতে হাওয়াইয়ের মাউই দ্বীপ এবং বিগ আইল্যান্ডে দাবানল শুরু হয়। ভয়াবহ এই দাবানলের কারণ এখনো জানা যায়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে হারিকেন থেকে সৃষ্ট ঝড়ো হাওয়া ও শুষ্ক আবহাওয়ার কারণে আগুন এত ভয়াবহভাবে ছড়িয়ে পড়েছে।

হাওয়াইয়ের গভর্নর যশ গ্রিন বলেন, মাউই দ্বীপের পশ্চিম উপকূলীয় পর্যটন শহর লাহাইনা পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এমন ধ্বংসযজ্ঞ বাসিন্দারা আগে কখনো দেখেননি।

ইতিহাসে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখল হাওয়াই
যুক্তরাষ্ট্রে নজিরবিহীনভাবে বেড়েছে আত্মহত্যা
এর আগে স্থানীয় সময় গত বৃহস্পতিবার বিকেলে হাওয়াইয়ের গভর্নর যশ গ্রিন এই দাবানলকে সেখানকার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ বলে অভিহিত করে দিনটিকে হৃদয়বিদারক বলে বর্ণনা করেন।

গ্রিন বলেন, লাহাইনার ৮০ শতাংশ পুড়ে গেছে। প্রায় ১ হাজার ৭০০টি ভবন ধ্বংস হয়ে গেছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। দাবানলের কারণে ঠিক কতজন নিখোঁজ রয়েছেন, তার প্রকৃত সংখ্যা কর্তৃপক্ষের জানা নেই। তবে সংখ্যাটি এক হাজারের নিচে হবে না বলে ধারণা করা হচ্ছে।

যোগাযোগব্যবস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় লোকজনকে খুঁজে বের করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইতোমধ্যে দ্বীপটি থেকে ১৪ হাজারেরও বেশি পর্যটককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

আগুনে শত শত বাড়ি পুড়ে যাওয়ায় কয়েক হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়ে পড়েছে। তাদের বেশিরভাগই লাহাইনার বাসিন্দা। তাদের জন্য ২ হাজার ঘরের ব্যবস্থা করতে বলেছেন গভর্নর গ্রিন। পাশাপাশি সম্ভব হলে গৃহহীনদের আশ্রয় দিতে নাগরিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। দ্বীপের বেশিরভাগ এলাকায় বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সংযোগ ব্যাহত হয়েছে। দুই হাজারের বেশি মানুষ বৃহস্পতিবার রাতে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান করেছে। পশ্চিম মাউই শহরে প্রায় ১১ হাজার মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে।

দাবানল এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি বলে জানিয়েছে দমকল কর্তৃপক্ষ। তবে শুক্রবার লাহাইনার বাসিন্দাদের বাড়িতে ফেরার অনুমতি দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যদিও তাদের সতর্ক করে বলা হয়েছে, জীবনে কখনো দেখেনি এমন ধ্বংসযজ্ঞ তাদের জন্য শহরে অপেক্ষা করছে। এ ছাড়া রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।