আর্থিক খাত সংস্কার-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ০৫:৪৬:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৪
  • / ৪৯ Time View

আর্থিক খাত সংস্কার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে সংসদ ভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ পরামর্শ দেন। রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের প্রথম অধিবেশন এবং প্রতি বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দিয়ে থাকেন।

এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এ ভাষণ দেন। এ সময় অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরসহ সংসদ সদস্যরা।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, গত দেড় দশকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। ভবিষ্যতে অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। এজন্য আমাদের সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। ষড়যন্ত্র করে কেউ যাতে জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, সেদিকে সবার সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, কেউ যাতে আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করে মানুষের জানমাল ও জীবিকার ক্ষতিসাধন করতে না পারে, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সব গুজব ও অপপ্রচারের বিষয়ে নজরদারি বাড়িয়ে জনগণকে সম্পৃক্ত রেখে যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে হবে।

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিলে এর প্রভাব আমাদের ওপরও পড়বে। এজন্য আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকতে হবে।

কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কৃষি খাতের উৎপাদন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে, উচ্চ-মূল্য ফসল উৎপাদনে গুরুত্ব দিয়ে রপ্তানি নিশ্চিত করার জন্য উন্নত কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। কৃষিপণ্য সংরক্ষণাগার এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তুলতে হবে।

রপ্তানি বাড়াতে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়ানোর ওপর পরামর্শ দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের পণ্যসমূহ রপ্তানি বাজারে যাতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়, সে লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত চুক্তি সই ও কার্যকর করার ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে গভীর সমুদ্রে গ্যাস ও তেল অনুসন্ধান কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজারের অনুসন্ধান করতে হবে, যাতে দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানি সম্ভব হয়। আর্থিক খাতের সংস্কার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে উঠবে আশা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। আমাদের পরম কর্তব্য ও দায়িত্ব হলো এ দেশ ও জাতির অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করা।

তিনি বলেন, যে জাতি ভাষার জন্য রক্ত দেয়, স্বাধীনতার জন্য বিসর্জন দেয় ৩০ লাখ প্রাণ, অসীম ধৈর্যে অতিক্রম করে বন্ধুর পথ, সেই অমিত সম্ভাবনাময় জাতি নিশ্চয়ই পারবে সব বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে বিশ্ব-দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে। আমি আশা করি, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা গড়ে তুলতে পারব বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

আর্থিক খাত সংস্কার-দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার আহ্বান রাষ্ট্রপতির

Update Time : ০৫:৪৬:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৪

আর্থিক খাত সংস্কার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বলেছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। একই সঙ্গে ভবিষ্যতের কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে সংসদ ভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে দেওয়া ভাষণে তিনি এ পরামর্শ দেন। রেওয়াজ অনুযায়ী সংসদের প্রথম অধিবেশন এবং প্রতি বছরের শুরুতে অনুষ্ঠিত অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি ভাষণ দিয়ে থাকেন।

এরই অংশ হিসেবে মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন এ ভাষণ দেন। এ সময় অধিবেশনের সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

অধিবেশনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সংসদ নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী, বিরোধীদলীয় নেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরসহ সংসদ সদস্যরা।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বক্তব্যে বলেন, গত দেড় দশকে বাংলাদেশের অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়তে আমাদের আরও উন্নতি করতে হবে। ভবিষ্যতে অনেক কঠিন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হবে। এজন্য আমাদের সবসময় সতর্ক থাকতে হবে। ষড়যন্ত্র করে কেউ যাতে জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, সেদিকে সবার সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, কেউ যাতে আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করে মানুষের জানমাল ও জীবিকার ক্ষতিসাধন করতে না পারে, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। সব গুজব ও অপপ্রচারের বিষয়ে নজরদারি বাড়িয়ে জনগণকে সম্পৃক্ত রেখে যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে হবে।

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বৈশ্বিক অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিলে এর প্রভাব আমাদের ওপরও পড়বে। এজন্য আমাদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি থাকতে হবে।

কৃষি উৎপাদন বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য কৃষি খাতের উৎপাদন ব্যবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে, উচ্চ-মূল্য ফসল উৎপাদনে গুরুত্ব দিয়ে রপ্তানি নিশ্চিত করার জন্য উন্নত কৃষিপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। কৃষিপণ্য সংরক্ষণাগার এবং কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তুলতে হবে।

রপ্তানি বাড়াতে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্য বাড়ানোর ওপর পরামর্শ দিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের পণ্যসমূহ রপ্তানি বাজারে যাতে শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়, সে লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত চুক্তি সই ও কার্যকর করার ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে গভীর সমুদ্রে গ্যাস ও তেল অনুসন্ধান কার্যক্রম জোরদার করতে হবে।

মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজারের অনুসন্ধান করতে হবে, যাতে দক্ষ শ্রমশক্তি রপ্তানি সম্ভব হয়। আর্থিক খাতের সংস্কার এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ও কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে উঠবে আশা প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। আমাদের পরম কর্তব্য ও দায়িত্ব হলো এ দেশ ও জাতির অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করা।

তিনি বলেন, যে জাতি ভাষার জন্য রক্ত দেয়, স্বাধীনতার জন্য বিসর্জন দেয় ৩০ লাখ প্রাণ, অসীম ধৈর্যে অতিক্রম করে বন্ধুর পথ, সেই অমিত সম্ভাবনাময় জাতি নিশ্চয়ই পারবে সব বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে বিশ্ব-দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে। আমি আশা করি, সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা গড়ে তুলতে পারব বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা।