আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি, কাজ করছে ১৭ টি ইউনিট: নিহত ২

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • Update Time : ১১:০২:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই ২০২১
  • / ১৩৭ Time View

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে রূপগঞ্জের(নারায়ণগঞ্জ) কর্ণগোপ এলাকার সেজান জুস ফ্যাক্টরি নামে পরিচিত হাশেম ফুডস্ এন্ড বেভারেজ কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় দুজন শ্রমিক মারা গেছেন। নিহতরা হলেন- স্বপ্না রানী (৪৫) ও মিনা আক্তার (৩৩)। নিহত স্বপ্না রানীর বাড়ি সিলেট জেলায়। তার স্বামীর নাম যতি সরকার। মিনা আক্তারের স্বামীর নাম হারুন মিয়া। তারা রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা। আগুনের ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। আহতদের স্থানীয় ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানের কারখানায় আগুনের ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮ টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবনটির আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ৬ তলা পর্যন্ত আগুন জ্বলছে।

আগুনে দগ্ধ ও ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত স্বপ্না, মানিক, আশরাফুল, সুমন, মোরছালিন, সজিব, মেহেদী, মুন্না, মাজেদা, রুমা, মনোয়ারা, নাদিয়া, আছমা, মারিয়া, রুজিনা, সুমা, শফিকুল, সুফিয়া,সুজিদা, পারুল, রওশন আরা, শ্যামলাকে রূপগঞ্জের কর্ণগোপ ইউএস বাংলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আগুনে দগ্ধ ও ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত নাহিদ, মনজুরুল, দ্বীপা, মহসিন, আব্দুর রহমান, আবু বক্কর, আমেনাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছর।

পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা উদ্দীপন বলেন, আগুন লাগার ৩০ মিনিটের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করেন। কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ফ্যাক্টরির ছয়তলা বিশিষ্ট ভবনের তৃতীয় তলা থেকে গ্যাস লাইন লিকেজ কিংবা বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহুর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা ভবনের সকল ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে ফ্যাক্টরির কাঁচামাল, উৎপাদিত পণ্য ও মূল্যবান সামগ্রীসহ বিপুল পরিমাণ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। খবর পেয়ে কাঞ্চন, পূর্বাচল, ডেমরা, আড়াইহাজার, আদমজী ফায়ার সার্ভিসের ১৭ ইউনিটের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। আগুনে ভবনের বিভিন্ন তলায় ফ্যাক্টরির কর্মচারী ও কর্মকর্তারা আটকা পড়ে। কেউ কেউ লাফিয়ে নিচে পড়ে আহত হয়। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ সময় মহাসড়কের উভয়পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া আগুনে নিহতের ঘটনায় আতংকিত হয়ে শ্রমিকরা দ্বিকবিদিক ছুটোছুটি করে আহত হয়।

আগুন লাগার বিষয়ে সেজান জুস ফ্যাক্টরির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কারখানার গ্যাস লাইন লিকেজ কিংবা বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে। ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরুপণ করা যায়নি।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ্ নুসরাত জাহান বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৭ টি ইউনিট কাজ করে। আগুনে আটকে পড়া ভবনের ছাদ থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ১২ জন শ্রমিককে উদ্ধার করেছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

আগুন এখনো নিয়ন্ত্রণে আসেনি, কাজ করছে ১৭ টি ইউনিট: নিহত ২

Update Time : ১১:০২:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুলাই ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের পাশে রূপগঞ্জের(নারায়ণগঞ্জ) কর্ণগোপ এলাকার সেজান জুস ফ্যাক্টরি নামে পরিচিত হাশেম ফুডস্ এন্ড বেভারেজ কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় দুজন শ্রমিক মারা গেছেন। নিহতরা হলেন- স্বপ্না রানী (৪৫) ও মিনা আক্তার (৩৩)। নিহত স্বপ্না রানীর বাড়ি সিলেট জেলায়। তার স্বামীর নাম যতি সরকার। মিনা আক্তারের স্বামীর নাম হারুন মিয়া। তারা রূপগঞ্জ উপজেলার গোলাকান্দাইল নতুন বাজার এলাকার বাসিন্দা। আগুনের ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ৫০ জন। আহতদের স্থানীয় ইউএস-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৮ জুলাই) বিকেল ৫টার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানের কারখানায় আগুনের ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত ফায়ার সার্ভিসের ১৪টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে।

বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮ টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভবনটির আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি। ৬ তলা পর্যন্ত আগুন জ্বলছে।

আগুনে দগ্ধ ও ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত স্বপ্না, মানিক, আশরাফুল, সুমন, মোরছালিন, সজিব, মেহেদী, মুন্না, মাজেদা, রুমা, মনোয়ারা, নাদিয়া, আছমা, মারিয়া, রুজিনা, সুমা, শফিকুল, সুফিয়া,সুজিদা, পারুল, রওশন আরা, শ্যামলাকে রূপগঞ্জের কর্ণগোপ ইউএস বাংলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আগুনে দগ্ধ ও ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত নাহিদ, মনজুরুল, দ্বীপা, মহসিন, আব্দুর রহমান, আবু বক্কর, আমেনাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের বয়স ১৮ থেকে ৪০ বছর।

পূর্বাচল ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা উদ্দীপন বলেন, আগুন লাগার ৩০ মিনিটের মধ্যেই ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু করেন। কর্মীরা নিরলসভাবে কাজ করছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ফ্যাক্টরির ছয়তলা বিশিষ্ট ভবনের তৃতীয় তলা থেকে গ্যাস লাইন লিকেজ কিংবা বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। মুহুর্তেই আগুনের লেলিহান শিখা ভবনের সকল ফ্লোরে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে ফ্যাক্টরির কাঁচামাল, উৎপাদিত পণ্য ও মূল্যবান সামগ্রীসহ বিপুল পরিমাণ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। খবর পেয়ে কাঞ্চন, পূর্বাচল, ডেমরা, আড়াইহাজার, আদমজী ফায়ার সার্ভিসের ১৭ ইউনিটের কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। আগুনে ভবনের বিভিন্ন তলায় ফ্যাক্টরির কর্মচারী ও কর্মকর্তারা আটকা পড়ে। কেউ কেউ লাফিয়ে নিচে পড়ে আহত হয়। আহতদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ সময় মহাসড়কের উভয়পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া আগুনে নিহতের ঘটনায় আতংকিত হয়ে শ্রমিকরা দ্বিকবিদিক ছুটোছুটি করে আহত হয়।

আগুন লাগার বিষয়ে সেজান জুস ফ্যাক্টরির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, কারখানার গ্যাস লাইন লিকেজ কিংবা বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে। ক্ষতির পরিমাণ এখনও নিরুপণ করা যায়নি।

রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ্ নুসরাত জাহান বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৭ টি ইউনিট কাজ করে। আগুনে আটকে পড়া ভবনের ছাদ থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ১২ জন শ্রমিককে উদ্ধার করেছে।