মহিলা মার্কেট এখন পুরুষ ব্যবসায়ীর দখলে

  • Update Time : ০৩:৪৩:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ নভেম্বর ২০২১
  • / 269

এনামুল হক, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা)প্রতিনিধিঃ

মহিলা মার্কেট এখন শুধু নামমাত্রই, যেখানে ক্রেতা-বিক্রেতার সবাই নারী থাকার কথা তবে পুরুষরা ক্রেতা হিসেবে এলেও সঙ্গে পরিবার নিয়ে আসার কথা। কিন্তু বাস্তবে পুরুষ ব্যবসায়ীদের দখলে এখন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মহিলা মার্কেট। এমন চিত্র দেখা মিলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের নগর কাটগড়া হাটে জাইকা প্রকল্পের অর্থায়নে নির্মিত ওমেন্স (মহিলা) মার্কেটগুলো চলে গেছে পুরুষদের দখলে।দেশের উন্নয়নে সমাজে পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে মহিলা মার্কেট টি তৈরি করা হলেও বর্তমানে মার্কেটে নেই নারী ব্যবসায়ীদের দোকান ঘর।

স্থানীয় একধরনের দালাল ও দখলদারের কারণে বিভিন্ন অজুহাতে দখল বা মোটা অংকের জামানতের টাকার বিনিময়ে ভাড়া সিষ্টেমে বছরের পর বছর ধরে এসব মার্কেটে পুরুষরাই দিব্যি ব্যবসা করে আসছেন।

এবিষয়টি নিয়ে বর্তমান হাট পরিচালনা কমিটি দোকান মালিকদের সাথে কথা বলতে গেলেই তাদের সাথে খারাপ আচরণ করে তাড়িয়ে দেন এমনকি কখনোবা হাট পরিচালনা কমিটি কে নানা ধরনের হুমকি ধামকি দিয়েও তাড়িয়ে দেন।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, যাদের নামে মহিলা মার্কেটের ঘর গুলো বরাদ্দ ছিলো তাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। তিনটি দোকান জামানতের মাধ্যমে ভাড়ায় চালিত আর বাকি দোকানগুলোতে কারো স্বামী কারো ছেলে কারো ভাই ব্যবসা করছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, এসব মার্কেট পরিচালনার নীতিমালা রয়েছে। সেখানে হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি দোকানের প্রতি বর্গফুট হিসাবে ভাড়া নির্ধারণ করে দেবেন। প্রাপ্ত ভাড়ার শতকরা ৫ ভাগ সরকারকে ভূমি রাজস্ব খাতে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে দিতে হবে। ভাড়ার ১৫ ভাগ মার্কেটের রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হবে এবং বাকি ৮০ ভাগ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা পৌর পরিষদের তহবিলে জমা হবে। কোনোভাবেই বরাদ্দ পাওয়া দোকান অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করা যাবে না। কিন্তু এখানে এসব নিয়ম কেউ মানছেন না। ইচ্ছে মতো মার্কেট পরিচালনা হয়ে আসছে।

এদিকে এলাকার অনেক অসহায় নারীদের দাবী সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কতৃপক্ষের তদন্ত সাপেক্ষে নারী উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা সচল রাখতে অধিকার বঞ্চিতদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে ও অবৈধ দখল মুক্ত করে নতুন উদ্যোক্তাদের জায়গা করে নারী উন্নয়নের ধারাবাহিকতা সচল রাখা হোক।

এসব অনিয়মের ব্যাপারে বামনডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান নজমুল হুদা বলেন, নগর কাটগড়া হাটের মহিলা মার্কেটের বিষয়টি নিয়ে তেমন কিছু জানিনা তবে বিষয়টি কয়েকদিনের মধ্যে খতিয়ে দেখা হবে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ- আল -মারুফ বলেন,নগর কাটগড়া হাটের মহিলা মার্কেটের বিষয়ে তেমন কিছু জানিনা তবে যেসব মহিলা দোকান মালিক নিজে ব্যবসা না করে পুরুষ ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়ে থাকলে বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

মহিলা মার্কেট এখন পুরুষ ব্যবসায়ীর দখলে

Update Time : ০৩:৪৩:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ নভেম্বর ২০২১

এনামুল হক, সুন্দরগঞ্জ (গাইবান্ধা)প্রতিনিধিঃ

মহিলা মার্কেট এখন শুধু নামমাত্রই, যেখানে ক্রেতা-বিক্রেতার সবাই নারী থাকার কথা তবে পুরুষরা ক্রেতা হিসেবে এলেও সঙ্গে পরিবার নিয়ে আসার কথা। কিন্তু বাস্তবে পুরুষ ব্যবসায়ীদের দখলে এখন সুন্দরগঞ্জ উপজেলার মহিলা মার্কেট। এমন চিত্র দেখা মিলে গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের নগর কাটগড়া হাটে জাইকা প্রকল্পের অর্থায়নে নির্মিত ওমেন্স (মহিলা) মার্কেটগুলো চলে গেছে পুরুষদের দখলে।দেশের উন্নয়নে সমাজে পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ নারী উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে মহিলা মার্কেট টি তৈরি করা হলেও বর্তমানে মার্কেটে নেই নারী ব্যবসায়ীদের দোকান ঘর।

স্থানীয় একধরনের দালাল ও দখলদারের কারণে বিভিন্ন অজুহাতে দখল বা মোটা অংকের জামানতের টাকার বিনিময়ে ভাড়া সিষ্টেমে বছরের পর বছর ধরে এসব মার্কেটে পুরুষরাই দিব্যি ব্যবসা করে আসছেন।

এবিষয়টি নিয়ে বর্তমান হাট পরিচালনা কমিটি দোকান মালিকদের সাথে কথা বলতে গেলেই তাদের সাথে খারাপ আচরণ করে তাড়িয়ে দেন এমনকি কখনোবা হাট পরিচালনা কমিটি কে নানা ধরনের হুমকি ধামকি দিয়েও তাড়িয়ে দেন।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, যাদের নামে মহিলা মার্কেটের ঘর গুলো বরাদ্দ ছিলো তাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। তিনটি দোকান জামানতের মাধ্যমে ভাড়ায় চালিত আর বাকি দোকানগুলোতে কারো স্বামী কারো ছেলে কারো ভাই ব্যবসা করছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, এসব মার্কেট পরিচালনার নীতিমালা রয়েছে। সেখানে হাট-বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটি দোকানের প্রতি বর্গফুট হিসাবে ভাড়া নির্ধারণ করে দেবেন। প্রাপ্ত ভাড়ার শতকরা ৫ ভাগ সরকারকে ভূমি রাজস্ব খাতে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে দিতে হবে। ভাড়ার ১৫ ভাগ মার্কেটের রক্ষণাবেক্ষণে ব্যয় হবে এবং বাকি ৮০ ভাগ সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ কিংবা পৌর পরিষদের তহবিলে জমা হবে। কোনোভাবেই বরাদ্দ পাওয়া দোকান অন্য কারও কাছে হস্তান্তর করা যাবে না। কিন্তু এখানে এসব নিয়ম কেউ মানছেন না। ইচ্ছে মতো মার্কেট পরিচালনা হয়ে আসছে।

এদিকে এলাকার অনেক অসহায় নারীদের দাবী সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কতৃপক্ষের তদন্ত সাপেক্ষে নারী উদ্যোক্তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা সচল রাখতে অধিকার বঞ্চিতদের অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে ও অবৈধ দখল মুক্ত করে নতুন উদ্যোক্তাদের জায়গা করে নারী উন্নয়নের ধারাবাহিকতা সচল রাখা হোক।

এসব অনিয়মের ব্যাপারে বামনডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান নজমুল হুদা বলেন, নগর কাটগড়া হাটের মহিলা মার্কেটের বিষয়টি নিয়ে তেমন কিছু জানিনা তবে বিষয়টি কয়েকদিনের মধ্যে খতিয়ে দেখা হবে।

এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ- আল -মারুফ বলেন,নগর কাটগড়া হাটের মহিলা মার্কেটের বিষয়ে তেমন কিছু জানিনা তবে যেসব মহিলা দোকান মালিক নিজে ব্যবসা না করে পুরুষ ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়ে থাকলে বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।