বিমানের ধাক্কায় গরুর মৃত্যু, ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি

  • Update Time : ১২:২১:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২১
  • / 151

নিজস্ব প্রতিবেদক:

উড্ডয়নের সময় কক্সবাজার বিমানবন্দরে বিমানের পাখার ধাক্কায় দুটি গরুর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে বুধবার ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রত্যাহার করা হয়েছে আনসারের ৪ জন সদস্যকে। ওই বিমানবন্দরের রানওয়েতে চলে যাওয়া ওই গরু দুটির মালিককেও খোঁজা হচ্ছে। তবে কেউ এখনো গরুগুলোর মালিকানার দাবি নিয়ে আসেনি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যার ওই ঘটনায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পান বিমানটির ৯৪ জন যাত্রী।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক মো. গোলাম মোর্তুজা হোসেন জানান, উড়োজাহাজের সঙ্গে গরুর ধাক্কা লাগার সময় রানওয়ের দায়িত্বে ছিলেন আনসার বাহিনীর চারজন সদস্য। দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে এই চারজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি খুঁজতে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। বিমানবন্দরের কয়েকটি পয়েন্টে সীমানাপ্রাচীর সংস্কারের কাজ চলছে। দ্রুত কাজ শেষ হলে জন ও প্রাণী প্রবেশ বন্ধ হয়ে যাবে। কেটে যাবে নিরাপত্তাঝুঁকিও।

উড়োজাহাজের সঙ্গে গরুর ধাক্কা লাগার সময় রানওয়ের দায়িত্বে ছিলেন আনসার বাহিনীর চারজন সদস্য। দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে এই চারজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে এপিবিএন সদস্যরা বলেন, উড়োজাহাজ উড্ডয়নের সময় কয়েকটি গরু রানওয়ের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ দুটি গরু রানওয়ের ওপর চলে এলে উড়োজাহাজ সামনে পড়ে যায়। কুয়াশার কারণে গরুগুলো ঠিকমতো দেখা যাচ্ছিল না। বিমানের ডান পাশের পাখার ধাক্কা লেগে গরু দুটি ঘটনাস্থলেই মারা গেছে।

ব্রিটিশ আমলে তৈরি কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণ প্রকল্প শুরু হয় ২০১৫ সালের ২ জুলাই। পুরোপুরি কাজ শেষ না হলেও ২০১৭ সালের ৬ মে থেকে রানওয়েটিতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ওঠানামা করছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থী ব্যবস্থাপনাসহ নানা কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে এর উদ্বোধন করেন।

পর্যটন ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কেন্দ্র করে প্রতিদিনই আকাশপথে কক্সবাজার আসছেন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার অগণিত কর্মকর্তা। এমন অবস্থায় মঙ্গলবার উড্ডয়নের সময় উড়োজাহাজের ধাক্কায় দুটি গরুর মৃত্যুর ঘটনা সাধারণ যাত্রীদের মনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

বর্তমানে কক্সবাজার বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমান, নভোএয়ার ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের ৯-১০টি উড়োজাহাজ দৈনিক আসা-যাওয়া করে। এর মধ্যে বোয়িং ৭৩৭ বিমানও রয়েছে। এ ছাড়া আসা-যাওয়া করে ৫ থেকে ৬টি কার্গো বিমানও।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৬ সালে কক্সবাজার বিমানবন্দরের উত্তরে নাজিরারটেক উপকূলের অদূরে বঙ্গোপসাগরে একটি কার্গো উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে বিদেশি পাইলটসহ তিনজনের মৃত্যু হয়। কার্গো উড়োজাহাজটি কক্সবাজার থেকে চিংড়ি পোনা নিয়ে যশোর যাচ্ছিল। এ ছাড়া ২০১৭ সালে একটি বেসরকারি উড়োজাহাজের চাকায় পিষ্ট হয়ে রানওয়েতে মারা যায় তিনটি কুকুর।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

বিমানের ধাক্কায় গরুর মৃত্যু, ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি

Update Time : ১২:২১:১৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ ডিসেম্বর ২০২১

নিজস্ব প্রতিবেদক:

উড্ডয়নের সময় কক্সবাজার বিমানবন্দরে বিমানের পাখার ধাক্কায় দুটি গরুর মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে বুধবার ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রত্যাহার করা হয়েছে আনসারের ৪ জন সদস্যকে। ওই বিমানবন্দরের রানওয়েতে চলে যাওয়া ওই গরু দুটির মালিককেও খোঁজা হচ্ছে। তবে কেউ এখনো গরুগুলোর মালিকানার দাবি নিয়ে আসেনি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যার ওই ঘটনায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পান বিমানটির ৯৪ জন যাত্রী।

কক্সবাজার বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক মো. গোলাম মোর্তুজা হোসেন জানান, উড়োজাহাজের সঙ্গে গরুর ধাক্কা লাগার সময় রানওয়ের দায়িত্বে ছিলেন আনসার বাহিনীর চারজন সদস্য। দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে এই চারজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, এ ঘটনায় সংশ্লিষ্টদের গাফিলতি খুঁজতে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। বিমানবন্দরের কয়েকটি পয়েন্টে সীমানাপ্রাচীর সংস্কারের কাজ চলছে। দ্রুত কাজ শেষ হলে জন ও প্রাণী প্রবেশ বন্ধ হয়ে যাবে। কেটে যাবে নিরাপত্তাঝুঁকিও।

উড়োজাহাজের সঙ্গে গরুর ধাক্কা লাগার সময় রানওয়ের দায়িত্বে ছিলেন আনসার বাহিনীর চারজন সদস্য। দায়িত্ব পালনে অবহেলার অভিযোগে এই চারজনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে এপিবিএন সদস্যরা বলেন, উড়োজাহাজ উড্ডয়নের সময় কয়েকটি গরু রানওয়ের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ দুটি গরু রানওয়ের ওপর চলে এলে উড়োজাহাজ সামনে পড়ে যায়। কুয়াশার কারণে গরুগুলো ঠিকমতো দেখা যাচ্ছিল না। বিমানের ডান পাশের পাখার ধাক্কা লেগে গরু দুটি ঘটনাস্থলেই মারা গেছে।

ব্রিটিশ আমলে তৈরি কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণ প্রকল্প শুরু হয় ২০১৫ সালের ২ জুলাই। পুরোপুরি কাজ শেষ না হলেও ২০১৭ সালের ৬ মে থেকে রানওয়েটিতে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ওঠানামা করছে।

রোহিঙ্গা শরণার্থী ব্যবস্থাপনাসহ নানা কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হিসেবে এর উদ্বোধন করেন।

পর্যটন ও রোহিঙ্গা শরণার্থীদের কেন্দ্র করে প্রতিদিনই আকাশপথে কক্সবাজার আসছেন দেশি-বিদেশি বিভিন্ন সংস্থার অগণিত কর্মকর্তা। এমন অবস্থায় মঙ্গলবার উড্ডয়নের সময় উড়োজাহাজের ধাক্কায় দুটি গরুর মৃত্যুর ঘটনা সাধারণ যাত্রীদের মনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে।

বর্তমানে কক্সবাজার বিমানবন্দরে বাংলাদেশ বিমান, নভোএয়ার ও ইউএস-বাংলা এয়ারলাইনসের ৯-১০টি উড়োজাহাজ দৈনিক আসা-যাওয়া করে। এর মধ্যে বোয়িং ৭৩৭ বিমানও রয়েছে। এ ছাড়া আসা-যাওয়া করে ৫ থেকে ৬টি কার্গো বিমানও।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৬ সালে কক্সবাজার বিমানবন্দরের উত্তরে নাজিরারটেক উপকূলের অদূরে বঙ্গোপসাগরে একটি কার্গো উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে বিদেশি পাইলটসহ তিনজনের মৃত্যু হয়। কার্গো উড়োজাহাজটি কক্সবাজার থেকে চিংড়ি পোনা নিয়ে যশোর যাচ্ছিল। এ ছাড়া ২০১৭ সালে একটি বেসরকারি উড়োজাহাজের চাকায় পিষ্ট হয়ে রানওয়েতে মারা যায় তিনটি কুকুর।