নাইজেরিয়ায় বিক্ষোভে গুলি, ২০ জনের মৃত্যু

  • Update Time : ০৬:১৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ অক্টোবর ২০২০
  • / 137

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে ২০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। দেশটির বৃহত্তম শহর লাগোসে ওই বিক্ষোভ চলছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তিনি প্রায় ২০টি মৃতদেহ দেখেছেন এবং কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে। বিক্ষোভে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে সেনাবাহিনী। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, বিক্ষোভে মৃত্যুর বিশ্বাসযোগ্য রিপোর্ট পেয়েছে তারা।

এদিকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে যে, তারা এই গোলাগুলির ঘটনার তদন্ত করবে। লাগোস এবং অন্যান্য শহরে ২৪ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

দু’সপ্তাহ ধরে দেশটির বড় শহরগুলোয় পুলিশের বিতর্কিত বিশেষ বাহিনী স্পেশাল অ্যান্টি-রবারি স্কোয়াডের (সার্স) বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। হতাহত ছাড়াও অনেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

লাগোসে ওই গোলাগুলির ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। তিনি নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি এবং দেশটির সেনাবাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের হত্যা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

নিজের দেশের জনগণকে হত্যায় নাইজেরিয়া সরকারকে দায়ী করেছেন দেশটির ফুটবলার ওডিয়ন জুড ইগহালো। টুইটারে এক ভিডিও বার্তা পোস্ট করে তিনি বলেন, ‘আমি এই সরকারকে নিয়ে খুবই লজ্জিত।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লাগোসের লেকিতে সামরিক পোশাকে থাকা লোকজন এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছে। বিক্ষোভকারীদের প্রতিহত করতে বিভিন্ন স্থানে বেরিকেড দিতে দেখা গেছে সেনা সদস্যদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ঠিক ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের দিকে সরাসরি গুলি ছুড়তে শুরু করে। সে সময় বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। তিনি জানান, তার পাশে থাকা একজনের গায়ে গুলি লাগলে তিনি ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন।

ওই প্রত্যক্ষদর্শী আরও বলেন, ‘তারা গুলি চালিয়েই যাচ্ছিল। এটা প্রায় এক বা দেড় ঘণ্টা চলেছে। সেনাবাহিনীর ব্যারিকেডের কারণে অ্যাম্বুলেন্স বিক্ষোভকারীদের কাছে পৌঁছাতে পারেনি।’

প্রসঙ্গত, সার্স হলো নাইজেরিয়া পুলিশের একটি বিতর্কিত শাখা। এই শাখার বর্বরতার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরুর পর এই শাখাটি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

নাইজেরিয়ায় বিক্ষোভে গুলি, ২০ জনের মৃত্যু

Update Time : ০৬:১৮:৫৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২১ অক্টোবর ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ পশ্চিম আফ্রিকার দেশ নাইজেরিয়ায় পুলিশি বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভে গুলি চালিয়ে ২০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। দেশটির বৃহত্তম শহর লাগোসে ওই বিক্ষোভ চলছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

এক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, তিনি প্রায় ২০টি মৃতদেহ দেখেছেন এবং কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়েছে। বিক্ষোভে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে সেনাবাহিনী। মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল জানিয়েছে, বিক্ষোভে মৃত্যুর বিশ্বাসযোগ্য রিপোর্ট পেয়েছে তারা।

এদিকে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দিয়েছে যে, তারা এই গোলাগুলির ঘটনার তদন্ত করবে। লাগোস এবং অন্যান্য শহরে ২৪ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।

দু’সপ্তাহ ধরে দেশটির বড় শহরগুলোয় পুলিশের বিতর্কিত বিশেষ বাহিনী স্পেশাল অ্যান্টি-রবারি স্কোয়াডের (সার্স) বর্বরতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ চলছে। হতাহত ছাড়াও অনেক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতারও করা হয়েছে।

লাগোসে ওই গোলাগুলির ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। তিনি নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুহাম্মাদু বুহারি এবং দেশটির সেনাবাহিনীকে বিক্ষোভকারীদের হত্যা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।

নিজের দেশের জনগণকে হত্যায় নাইজেরিয়া সরকারকে দায়ী করেছেন দেশটির ফুটবলার ওডিয়ন জুড ইগহালো। টুইটারে এক ভিডিও বার্তা পোস্ট করে তিনি বলেন, ‘আমি এই সরকারকে নিয়ে খুবই লজ্জিত।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লাগোসের লেকিতে সামরিক পোশাকে থাকা লোকজন এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছে। বিক্ষোভকারীদের প্রতিহত করতে বিভিন্ন স্থানে বেরিকেড দিতে দেখা গেছে সেনা সদস্যদের।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, ঠিক ৬টা ৪৫ মিনিটের দিকে তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের দিকে সরাসরি গুলি ছুড়তে শুরু করে। সে সময় বিশৃঙ্খলা শুরু হয়। তিনি জানান, তার পাশে থাকা একজনের গায়ে গুলি লাগলে তিনি ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন।

ওই প্রত্যক্ষদর্শী আরও বলেন, ‘তারা গুলি চালিয়েই যাচ্ছিল। এটা প্রায় এক বা দেড় ঘণ্টা চলেছে। সেনাবাহিনীর ব্যারিকেডের কারণে অ্যাম্বুলেন্স বিক্ষোভকারীদের কাছে পৌঁছাতে পারেনি।’

প্রসঙ্গত, সার্স হলো নাইজেরিয়া পুলিশের একটি বিতর্কিত শাখা। এই শাখার বর্বরতার বিরুদ্ধে দেশজুড়ে বিক্ষোভ শুরুর পর এই শাখাটি বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেয় দেশটির সরকার।