কুমিল্লায় মজুত ৪ লাখ ২৭ হাজার ডিম জব্দ, নিলামে ৬ টাকায় বিক্রি

  • Update Time : ১২:২৯:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪
  • / 52

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ, কুমিল্লা

কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বরল এলাকায় একটি হিমাগারে অবৈধভাবে মজুত ৪ লাখ ২৭ হাজারটি ডিম জব্দের পর নিলামে বিক্রি করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে জব্দ করা এসব ডিম শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে নিলামে তোলা হয়।

লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ডিম বিক্রির ২৭ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।

ইউএনও বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় বিভিন্ন কোল্ডস্টোরেজে অবৈধ মজুত আছে কী না জানতে- অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরই অংশ হিসেবে গত ৪ জুন সন্ধ্যায় লালমাই উপজেলার বরল এলাকার মেঘনা কোল্ডস্টোরেজে অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ ডিমের মজুত সন্ধান পান ভ্রাম্যমাণ আদালত। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারজানা আক্তার তাৎক্ষণিকভাবে অবৈধভাবে মজুতকৃত ডিম নিলামে বিক্রি করেন এবং অবৈধ মজুতদারির দায়ে কোল্ডস্টোরেজকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী, ডিমের ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ দিন মজুত রাখা যায়। এখানে গিয়ে দেখা গেছে, মাসের পর মাস ধরে মজুত করা হয়েছে। তার মানে এসব অবৈধ মজুত। এর আগেও এই কোল্ডস্টোরেজ থেকে ২১ লাখ ডিমের বিশাল অবৈধ মজুত জব্দ করে বাজারে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।’

সকালে মেঘনা কোল্ডস্টোরেজে গিয়ে দেখা যায়, নির্দেশনামতো বিক্রয়কৃত ডিম নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ৪ লাখ ২৭ হাজার ডিম ২৬ লাখ ৯৮ হাজার টাকা মূল্যে নিলামে বিক্রি করা হয়। হিসেব মতে, প্রতিটি ডিমের দাম প্রায় ৬ টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে।

ডিম সংরক্ষণকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, ডিম নিলামের আগে বিক্রেতাদের জানানো হয়নি। নোয়াখালী জেলার মাইজদী বড় বাজারের ব্যবসায়ী ইমরান হোসেন বলেন, ‘আগে জানালে আমরা ডিমগুলো সরিয়ে নিতাম। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালত এসেই ডিম জব্দ করে নিলাম করে দেওয়ায় এখন আমরা পথে বসার মতো অবস্থায়। গরমের কারণে কোল্ডস্টোরেজে ডিম বেশি মজুদ হয়। শীতকালে এত পরিমাণ ডিম মজুত হয় না।’

মো. মাইনুল ইসলাম নামে অপর এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমার ৫২ হাজার ৮০ পিস ডিম ছিল। আমাকে না ডেকেই এসব ডিম নিলাম করা হলো। আমি ধারে টাকা এনে এসব ডিম কিনে সংরক্ষণ করছিলাম।’

প্রকাশ্য নিলামে ভ্যাট-ট্যাক্সসহ প্রায় ৬ টাকা পিস দরে ৪ লাখ ২৭ হাজার পিস ডিম কিনে নেন লালমাই উপজেলার ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন। এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রকাশ্য নিলামে ডিম বিক্রি করেন। আমি ৪ লাখ ২৭ হাজার ডিমের টাকা জমা দিয়ে নিলাম থেকে ডিম কিনেছি।’

উল্লেখ্য, গত ১৬ মে মেঘনা কোল্ডস্টোরেজ থেকে ২১ লাখ ডিমের অবৈধ মজুত জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেসময় এই কোল্ডস্টোরেজটিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জব্দকৃত ডিম বাজারজাত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media

কুমিল্লায় মজুত ৪ লাখ ২৭ হাজার ডিম জব্দ, নিলামে ৬ টাকায় বিক্রি

Update Time : ১২:২৯:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জুলাই ২০২৪

সোহাইবুল ইসলাম সোহাগ, কুমিল্লা

কুমিল্লার লালমাই উপজেলার বরল এলাকায় একটি হিমাগারে অবৈধভাবে মজুত ৪ লাখ ২৭ হাজারটি ডিম জব্দের পর নিলামে বিক্রি করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে জব্দ করা এসব ডিম শুক্রবার (৫ জুলাই) সকালে নিলামে তোলা হয়।

লালমাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, ডিম বিক্রির ২৭ লাখ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে।

ইউএনও বলেন, ‘জেলা প্রশাসকের নির্দেশনায় বিভিন্ন কোল্ডস্টোরেজে অবৈধ মজুত আছে কী না জানতে- অভিযান পরিচালনা করা হয়। এরই অংশ হিসেবে গত ৪ জুন সন্ধ্যায় লালমাই উপজেলার বরল এলাকার মেঘনা কোল্ডস্টোরেজে অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ ডিমের মজুত সন্ধান পান ভ্রাম্যমাণ আদালত। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মারজানা আক্তার তাৎক্ষণিকভাবে অবৈধভাবে মজুতকৃত ডিম নিলামে বিক্রি করেন এবং অবৈধ মজুতদারির দায়ে কোল্ডস্টোরেজকে ১ লাখ টাকা জরিমানা করেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘কৃষি বিপণন আইন অনুযায়ী, ডিমের ক্ষেত্রে সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ দিন মজুত রাখা যায়। এখানে গিয়ে দেখা গেছে, মাসের পর মাস ধরে মজুত করা হয়েছে। তার মানে এসব অবৈধ মজুত। এর আগেও এই কোল্ডস্টোরেজ থেকে ২১ লাখ ডিমের বিশাল অবৈধ মজুত জব্দ করে বাজারে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল।’

সকালে মেঘনা কোল্ডস্টোরেজে গিয়ে দেখা যায়, নির্দেশনামতো বিক্রয়কৃত ডিম নিয়ে যাচ্ছেন ক্রেতারা। উপজেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, ৪ লাখ ২৭ হাজার ডিম ২৬ লাখ ৯৮ হাজার টাকা মূল্যে নিলামে বিক্রি করা হয়। হিসেব মতে, প্রতিটি ডিমের দাম প্রায় ৬ টাকা দরে বিক্রি করা হয়েছে।

ডিম সংরক্ষণকারী ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা জানান, ডিম নিলামের আগে বিক্রেতাদের জানানো হয়নি। নোয়াখালী জেলার মাইজদী বড় বাজারের ব্যবসায়ী ইমরান হোসেন বলেন, ‘আগে জানালে আমরা ডিমগুলো সরিয়ে নিতাম। কিন্তু ভ্রাম্যমাণ আদালত এসেই ডিম জব্দ করে নিলাম করে দেওয়ায় এখন আমরা পথে বসার মতো অবস্থায়। গরমের কারণে কোল্ডস্টোরেজে ডিম বেশি মজুদ হয়। শীতকালে এত পরিমাণ ডিম মজুত হয় না।’

মো. মাইনুল ইসলাম নামে অপর এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমার ৫২ হাজার ৮০ পিস ডিম ছিল। আমাকে না ডেকেই এসব ডিম নিলাম করা হলো। আমি ধারে টাকা এনে এসব ডিম কিনে সংরক্ষণ করছিলাম।’

প্রকাশ্য নিলামে ভ্যাট-ট্যাক্সসহ প্রায় ৬ টাকা পিস দরে ৪ লাখ ২৭ হাজার পিস ডিম কিনে নেন লালমাই উপজেলার ব্যবসায়ী লোকমান হোসেন। এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রকাশ্য নিলামে ডিম বিক্রি করেন। আমি ৪ লাখ ২৭ হাজার ডিমের টাকা জমা দিয়ে নিলাম থেকে ডিম কিনেছি।’

উল্লেখ্য, গত ১৬ মে মেঘনা কোল্ডস্টোরেজ থেকে ২১ লাখ ডিমের অবৈধ মজুত জব্দ করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেসময় এই কোল্ডস্টোরেজটিকে ২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জব্দকৃত ডিম বাজারজাত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।