কঠোর অবস্থানে জনতা ব্যাংক, আরও ৫ ঋণখেলাপি গ্রেফতার

  • Update Time : ০৪:৫৭:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ অগাস্ট ২০২২
  • / 199

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দীর্ঘ সময় ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করে নানা ছলচাতুরিতে সময় ক্ষেপণ করা গ্রাহকদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক লিমিটেড। ইচ্ছাকৃত এসব ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে ব্যাংকটি। এরই ধারাবাহিকতায় আরও পাঁচ ঋণখেলাপিকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিসের গ্রাহক ইউসুফ ট্যানারির কাছে ৪৭ কোটি ২৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা দীর্ঘদিন ধরে অনাদায়ী ছিল। ব্যাংকের শাখা হতে ঋণ আদায়ে বারবার যোগাযোগ করেও গ্রাহকের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঋণ আদায়ে অর্থ ঋণ আদালতে মামলা (নম্বর ৪৩৮/২০২০) দায়ের করে। আদালত মামলার নথি পর্যালোচনা করে ইউসুফ ট্যানারির আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

এরই প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত রোববার অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গ্রেফতাররা হলেন- ইউসুফ ট্যানারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বশির উল্লাহ, পরিচালক মো. অজিউল্লাহ, বন্ধকদাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বশির উল্লাহর তিন ছেলে মো. ইউসুফ আলী, মো. হারুণ অর রশিদ ও মো. আবু সুফিয়ান।

এর আগে ব্যাংকের ৩২৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা পরিশোধ না করে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় নুরজাহান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ রতন এবং পরিচালক টিপু সুলতান ও ফরহাদ মনোয়ারকে ৫ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন অর্থ ঋণ আদালত। পাশাপাশি রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (আরএসআরএম) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুর রহমানকে ৩১২ কোটি ৮২ লাখ টাকা ঋণখেলাপির দায়ে পাসপোর্ট জব্দসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত।

এছাড়া মতিঝিল করপোরেট শাখায় গোল্ডেন রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের সাড়ে ছয় কোটি টাকা অনাদায়ে (মামলা নম্বর ১৮০/১৭) খেলাপি গ্রাহক মো. আবুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। বৈদেশিক বাণিজ্য করপোরেট শাখার আব্দুস সামাদ প্যাকেজিংয়ের আড়াই কোটি টাকা অনাদায়ে প্রতিষ্ঠানটির তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গাজীপুর করপোরেট শাখার খেলাপি গ্রাহক মেসার্স হাসান স মিলের এক কোটি এক লাখ টাকা অনাদায়ে মিলটির মালিক খন্দকার জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে জনতা ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার বিষয়ে আমরা অত্যন্ত আন্তরিক। এজন্য যেসব খেলাপি গ্রাহক দীর্ঘ সময় ধরে ঋণ পরিশোধে সময় ক্ষেপণ করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু দৃষ্টান্ত সবাই দেখতে পেয়েছেন।

তিনি বলেন, দেশে শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরও বেগবান করতে হলে অধিক সংখ্যক মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনা জরুরি। এর ফলে দেশে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সরকারের এ নীতির সাথে মিল রেখে কাজ করছে জনতা ব্যাংক।

Please Share This Post in Your Social Media

কঠোর অবস্থানে জনতা ব্যাংক, আরও ৫ ঋণখেলাপি গ্রেফতার

Update Time : ০৪:৫৭:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ অগাস্ট ২০২২

নিজস্ব প্রতিবেদক:

দীর্ঘ সময় ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করে নানা ছলচাতুরিতে সময় ক্ষেপণ করা গ্রাহকদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত জনতা ব্যাংক লিমিটেড। ইচ্ছাকৃত এসব ঋণখেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নিচ্ছে ব্যাংকটি। এরই ধারাবাহিকতায় আরও পাঁচ ঋণখেলাপিকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, জনতা ব্যাংকের লোকাল অফিসের গ্রাহক ইউসুফ ট্যানারির কাছে ৪৭ কোটি ২৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা দীর্ঘদিন ধরে অনাদায়ী ছিল। ব্যাংকের শাখা হতে ঋণ আদায়ে বারবার যোগাযোগ করেও গ্রাহকের কাছ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। পরে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ঋণ আদায়ে অর্থ ঋণ আদালতে মামলা (নম্বর ৪৩৮/২০২০) দায়ের করে। আদালত মামলার নথি পর্যালোচনা করে ইউসুফ ট্যানারির আটজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে।

এরই প্রেক্ষিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গত রোববার অভিযান চালিয়ে পাঁচজনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে। আদালত তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। গ্রেফতাররা হলেন- ইউসুফ ট্যানারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বশির উল্লাহ, পরিচালক মো. অজিউল্লাহ, বন্ধকদাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. বশির উল্লাহর তিন ছেলে মো. ইউসুফ আলী, মো. হারুণ অর রশিদ ও মো. আবু সুফিয়ান।

এর আগে ব্যাংকের ৩২৫ কোটি ৮৪ লাখ টাকা পরিশোধ না করে আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় নুরজাহান গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহির আহমেদ রতন এবং পরিচালক টিপু সুলতান ও ফরহাদ মনোয়ারকে ৫ মাসের কারাদণ্ডের নির্দেশ দেন অর্থ ঋণ আদালত। পাশাপাশি রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের (আরএসআরএম) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুর রহমানকে ৩১২ কোটি ৮২ লাখ টাকা ঋণখেলাপির দায়ে পাসপোর্ট জব্দসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দেন চট্টগ্রাম অর্থঋণ আদালত।

এছাড়া মতিঝিল করপোরেট শাখায় গোল্ডেন রি-রোলিং মিলস লিমিটেডের সাড়ে ছয় কোটি টাকা অনাদায়ে (মামলা নম্বর ১৮০/১৭) খেলাপি গ্রাহক মো. আবুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। বৈদেশিক বাণিজ্য করপোরেট শাখার আব্দুস সামাদ প্যাকেজিংয়ের আড়াই কোটি টাকা অনাদায়ে প্রতিষ্ঠানটির তিন কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গাজীপুর করপোরেট শাখার খেলাপি গ্রাহক মেসার্স হাসান স মিলের এক কোটি এক লাখ টাকা অনাদায়ে মিলটির মালিক খন্দকার জাকির হোসেনকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে জনতা ব্যাংক লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার বিষয়ে আমরা অত্যন্ত আন্তরিক। এজন্য যেসব খেলাপি গ্রাহক দীর্ঘ সময় ধরে ঋণ পরিশোধে সময় ক্ষেপণ করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে। এরই মধ্যে বেশ কিছু দৃষ্টান্ত সবাই দেখতে পেয়েছেন।

তিনি বলেন, দেশে শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক কার্যক্রম আরও বেগবান করতে হলে অধিক সংখ্যক মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনা জরুরি। এর ফলে দেশে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। সরকারের এ নীতির সাথে মিল রেখে কাজ করছে জনতা ব্যাংক।