কেউ কেউ আইন ভেঙেছেন, তদন্ত করে তাদেরও বিচার হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
- Update Time : ০৮:৩৯:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ অগাস্ট ২০২৪
- / 33
তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেছেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের কেউ কেউ আইন ভেঙেছে; তদন্ত করে তাদেরও বিচারের আওতায় আনা হবে।
বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) সচিবালয়ে তার মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
আরাফাত আরও বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে, পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও অন্যান্য যারা আছে, কারোই গুলি করার পারমিশন ছিল না। সংবিধান ও আইনের অধীনে তাদের কাজ করতে হয়েছে। তাই বলে আমি এটা অস্বীকার করছি না, ক্ষেত্র বিশেষে কেউ কেউ আইন ভাঙেননি, অন দ্যা গ্রাউন্ডে। আমরা এটা তদন্ত করে তাদেরও বিচারের আওতায় আনব।
তিনি আরও বলেন, আমেরিকাতেও আপনারা দেখেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেকেই আইন ভেঙে ফেলে। সরকার থেকে তো তাদেরকে আইন ভাঙার নির্দেশ দেয়া হয় না। কিন্তু তারা এই ঘটনা ঘটিয়ে ফেলে। আমাদের দায়িত্ব হল যারা আইন ভেঙেছেন, যারা অন্যায় করেছেন, সে যেই হোন; আমরা তদন্ত করে বিচারের মুখোমুখি করব।
সহিংসতায় হতাহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, সহিংসতায় যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে সেটা দেশ জাতির জন্য বিশেষ করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের জন্য খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এই হতাহতের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি, গভীর নিন্দা জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠিত হয়েছে। তারা স্বাধীনভাবে প্রতিটি হতাহতের ঘটনার তদন্ত করবে, এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে। প্রয়োজনে আমরা বিদেশি বিশেষজ্ঞদের সম্পৃক্ত করব। কারণ হচ্ছে, আমরা এখানে পুরোপুরি স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতায় থাকতে চাই।
তিনি আরও বলেন, সহিংসতা প্রতিটি মৃত্যুর জন্য আমরা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত তেমনি দেশ ও দেশের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। হয়তো কোনো একটি তৃতীয় পক্ষ এটার সুবিধা নিচ্ছে। আর এই মৃত্যু নিয়ে প্রথম থেকেই অপপ্রচার করা হচ্ছে। এই ক্ষতির যেমন আপনারা একটা অংশ আমরাও একটা অংশ। আপনারা যেমন এটার বিচার চান আমরাও এটার বিচার চাই।
কোনো মৃত্যুই কাম্য ছিল না দাবি করে আরাফাত বলেন, একই সঙ্গে প্রতিটি দায়ী ব্যক্তিকে আমরা বিচারের মুখোমুখি করব। একটি মৃত্যুও আমাদের কাম্য ছিল না। প্রতিটি মৃত্যু আমাদের বুকের ওপরে ভারি হয়ে আটকে আছে। শিক্ষার্থী আন্দোলনকারী যারা তাদের যে দাবি ছিল, তার মধ্যে তৃতীয় পক্ষ ঢুকে অন্য উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য যে ভয়াবহ ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, আপনাদের চোখের সামনে তার প্রমাণ রয়েছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে তৃতীয় পক্ষ ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চেয়েছে বলে অভিযোগ করে তথ্য প্রতিমন্ত্রী বলেন, জেল ভেঙে জঙ্গিদের নিয়ে যাওয়াসহ যত ধরনের ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড, এগুলো কী শিক্ষার্থীরা করেছে? করেছে তৃতীয় পক্ষ, অনুপ্রবেশকারী। তারা কিন্তু এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে, যাতে হতাহতের ঘটনা ঘটে। যাতে তারা ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে পারে। কিন্তু তারা সরাসরি মুখোমুখি হয়নি, শিক্ষার্থীদেরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করেছে।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে আরাফাত বলেন, আইনের প্রয়োগ ঘটবে শুধু সন্ত্রাসীদের ওপরে৷ সুনির্দিষ্ট প্রমাণসাপেক্ষে যাদের সম্পৃক্ততা পাওয়া যাবে, তাদের গ্রেপ্তার করা হবে। কোনো সাধারণ শিক্ষার্থী যেন হয়রানির শিকার না হয়। আমি পুলিশ প্রশানকে বলতে চাই, যে সকল শিক্ষার্থী আন্দোলন করেছে, পানি বিতরণ করেছে; তাদের পরিবারের কোনো সদস্যকে যেন কোনো ধরনের হয়রানি করা না হয়।