নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

কবি মোহাম্মদ রফিক আর নেই। রোববার বরিশাল থেকে ঢাকা ফেরার পথে তার মৃত্যু হয় বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। তার বয়স হয়েছিল ৮০ বছর।

বরিশালে বোনের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখান থেকে ঢাকা ফেরার পথে মাদারীপুরের রাজৈরের কাছে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে সেখানকার একটি হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

পারিবারিক ওই সূত্রটি জানায়, কবিকে ঢাকা আনা হবে না। তার মরদেহ বাগেরহাটে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে দাফনের ব্যবস্থা করা হবে।

মোহাম্মদ রফিকের জন্ম ২৩ অক্টোবর ১৯৪৩ সালে বাগেরহাটে। ২০১০ সালের একুশে পদকপ্রাপ্ত এ কবি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ছিলেন।

মননশীল আধুনিক কবি হিসেবে পরিচিতি পাওয়া মোহাম্মদ রফিক খুলনা জেলা স্কুল থেকে ১৯৫৮ সালে মাধ্যমিক পাস করেন। ঢাকার নটরডেম কলেজ থেকে ১৯৬১ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর রাজশাহী সরকারি কলেজে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন এবং স্নাতক শেষ করেন।

১৯৬০-এর দশকে রফিকের আত্মপ্রকাশ। পাকিস্তান আমলে ছাত্র আন্দোলন ও কবিতায় এবং স্বাধীন বাংলাদেশে আশির দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে কাব্যিক রসদ যুগিয়ে তিনি বিখ্যাত হন।

১৯৭০ সালে তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘বৈশাখি পূর্ণিমা’ প্রকাশিত হয়। ১৯৭৬ সালে প্রকাশ পায় তার দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘ধুলার সংসারে এই মাটি’।

কবির উল্লেখযোগ্য অন্য কাব্যগ্রন্থগুলো হলো- কীর্তিনাশা (১৯৭৯), খোলা কবিতা ও কপিলা (১৯৮৩), গাওদিয়ায় (১৯৮৬), স্বদেশী নিশ্বাস তুমিময় (১৯৮৮), মেঘে এবং কাদায় (১৯৯১), রূপকথা কিংবদন্তি (১৯৯৮), মৎস্য গন্ধ্যা (১৯৯৯), মাতি কিসকু (২০০০), বিষখালি সন্ধ্যা (২০০৩), নির্বাচিত কবিতা (২০০৩), কালাপানি (২০০৬), নির্বাচিত কবিতা (২০০৭), নোনাঝাউ (২০০৮), দোমাটির মুখ (২০০৯), ত্রয়ী (২০০৯), মোহাম্মদ রফিক রচনাবলী-১ (২০০৯), মোহাম্মদ রফিক রচনাবলী-২ (২০১০)।

কবিতার পাশাপাশি তার গদ্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ভালোবাসার জীবনানন্দ (২০০৩), আত্মরক্ষার প্রতিবেদন (২০০১), স্মৃতি বিস্মৃতির অন্তরাল (২০০২)।