জিটুজির নামে সার আমদানিতে লুটপাটের অভিযোগ

  • আপডেটের সময়: ১০:৪১:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
  • / 36

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে জিটুজি পদ্ধতিতে সার আমদানিতে ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র জানায়, মরক্কো থেকে টিএসপি ও ডিএপি সার আমদানির জন্য ২০২৩ সালের অক্টোবরে একটি চুক্তি করা হয়, যার মেয়াদ ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত। ওই চুক্তির আওতায় ২০২৪ সালের জুন মাসে বিএডিসি টিএসপি প্রতি টন ৩৮০ ডলার এবং ডিএপি ৪৭৮ ডলারে ক্রয় আদেশ জারি করে। তবে তখন মরক্কো সার সরবরাহ না করায় আদেশ বাতিল করা হয়।

এরপর মেয়াদ শেষের প্রায় ছয় মাস পর, ২০২৫ সালের জুনে অজ্ঞাত কারণে প্রতিটন সার ১০০ ডলার বেশি দামে আমদানি করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, এই সার আমদানির অর্থ দুবাইয়ের একটি অফশোর অ্যাকাউন্টে পরিশোধ করা হয়েছে—যা বড় ধরনের অনিয়ম হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এছাড়া, ২০২৫ সালের জুলাইয়ে মরক্কোর সঙ্গে বিএডিসির চুক্তি নবায়ন করা হলেও আগের চুক্তিতে থাকা ১০ ডলার ডিসকাউন্ট কমিয়ে ৭ ডলার করা হয়েছে। ফলে প্রতি টন সারে ৩ ডলার করে বাড়তি খরচ হবে, যা ১০ লাখ টন সারের ক্ষেত্রে প্রায় ৩০ লাখ ডলার অতিরিক্ত ব্যয়।

কানাডার সাথেও নতুন চুক্তিতে একাধিক বিতর্কিত ধারা যোগ হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—কম সার আনলে কম ডিসকাউন্ট, বেশি আনলে বেশি ডিসকাউন্টের শর্ত। আগের চুক্তিতে বিএডিসি ৫ শতাংশ মূল্যছাড় পেত, কিন্তু এখন সেই ছাড় পেতে হলে কমপক্ষে ৫ লাখ টন সার আমদানি করতে হবে। তাছাড়া, বিএডিসির জাহাজে অন্য প্রতিষ্ঠানের সার আমদানির অনুমতিও দেওয়া হয়েছে, যা কো-শিপমেন্টের সুযোগ তৈরি করেছে।

কানাডার প্রথম লটের সারবাহী জাহাজ এমভি জেনকো মেরি (IMO 9923205) সুমাত্রায় সার খালাস করে জুলাই মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। অভিযোগ রয়েছে, এ কাজের সম্পূর্ণ সুবিধা পেয়েছে কানাডার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।

আরও জানা গেছে, আগে ডেসপেথ ডেমারেজের সেটেলমেন্ট ৬ থেকে ১২ হাজার ডলারের মধ্যে নির্ধারিত থাকলেও এখন তা ৩০ থেকে ৪০ হাজার ডলারে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সবশেষে অভিযোগ করা হয়েছে, এসব পরিবর্তন আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই করা হয়েছে।

বিএডিসির চুক্তিতে এসব অনিয়ম ও বিদেশি অ্যাকাউন্টে অর্থ পরিশোধের ঘটনা তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

ট্যাগ :

অনুগ্রহ করে এই পোস্টটি আপনার সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন


জিটুজির নামে সার আমদানিতে লুটপাটের অভিযোগ

আপডেটের সময়: ১০:৪১:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে জিটুজি পদ্ধতিতে সার আমদানিতে ব্যাপক অনিয়ম ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে।

সূত্র জানায়, মরক্কো থেকে টিএসপি ও ডিএপি সার আমদানির জন্য ২০২৩ সালের অক্টোবরে একটি চুক্তি করা হয়, যার মেয়াদ ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত। ওই চুক্তির আওতায় ২০২৪ সালের জুন মাসে বিএডিসি টিএসপি প্রতি টন ৩৮০ ডলার এবং ডিএপি ৪৭৮ ডলারে ক্রয় আদেশ জারি করে। তবে তখন মরক্কো সার সরবরাহ না করায় আদেশ বাতিল করা হয়।

এরপর মেয়াদ শেষের প্রায় ছয় মাস পর, ২০২৫ সালের জুনে অজ্ঞাত কারণে প্রতিটন সার ১০০ ডলার বেশি দামে আমদানি করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, এই সার আমদানির অর্থ দুবাইয়ের একটি অফশোর অ্যাকাউন্টে পরিশোধ করা হয়েছে—যা বড় ধরনের অনিয়ম হিসেবে দেখা হচ্ছে।

এছাড়া, ২০২৫ সালের জুলাইয়ে মরক্কোর সঙ্গে বিএডিসির চুক্তি নবায়ন করা হলেও আগের চুক্তিতে থাকা ১০ ডলার ডিসকাউন্ট কমিয়ে ৭ ডলার করা হয়েছে। ফলে প্রতি টন সারে ৩ ডলার করে বাড়তি খরচ হবে, যা ১০ লাখ টন সারের ক্ষেত্রে প্রায় ৩০ লাখ ডলার অতিরিক্ত ব্যয়।

কানাডার সাথেও নতুন চুক্তিতে একাধিক বিতর্কিত ধারা যোগ হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—কম সার আনলে কম ডিসকাউন্ট, বেশি আনলে বেশি ডিসকাউন্টের শর্ত। আগের চুক্তিতে বিএডিসি ৫ শতাংশ মূল্যছাড় পেত, কিন্তু এখন সেই ছাড় পেতে হলে কমপক্ষে ৫ লাখ টন সার আমদানি করতে হবে। তাছাড়া, বিএডিসির জাহাজে অন্য প্রতিষ্ঠানের সার আমদানির অনুমতিও দেওয়া হয়েছে, যা কো-শিপমেন্টের সুযোগ তৈরি করেছে।

কানাডার প্রথম লটের সারবাহী জাহাজ এমভি জেনকো মেরি (IMO 9923205) সুমাত্রায় সার খালাস করে জুলাই মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে আসে। অভিযোগ রয়েছে, এ কাজের সম্পূর্ণ সুবিধা পেয়েছে কানাডার সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান।

আরও জানা গেছে, আগে ডেসপেথ ডেমারেজের সেটেলমেন্ট ৬ থেকে ১২ হাজার ডলারের মধ্যে নির্ধারিত থাকলেও এখন তা ৩০ থেকে ৪০ হাজার ডলারে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সবশেষে অভিযোগ করা হয়েছে, এসব পরিবর্তন আইন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই করা হয়েছে।

বিএডিসির চুক্তিতে এসব অনিয়ম ও বিদেশি অ্যাকাউন্টে অর্থ পরিশোধের ঘটনা তদন্ত করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।