সামান্য মোবাইল ফোনের জন্য খুন হয়েছিলো জাককানইবির শিক্ষার্থী তৌহিদুর

  • Update Time : ০১:১৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১
  • / 229

 

মো: শুভ ইসলাম, (জাককানইবি প্রতিনিধি):

সামান্য একটি মোবাইল ফোনের জন্য খুন করা হয়েছিলো জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) ফিন্যান্স বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী তৌহিদুর ইসলাম।

গতবছর (২০২০সালের) ১মে রাতে সেহরির সময় এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীকে।ঘটনার এক বছর পর অথাৎ ২০২১ এ এসে জাককানইবির এই শিক্ষার্থীর হত্যার জট খুলেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মোবাইল চুরি দেখে ফেলায় খুন করা হয়েছিলো তৌহিদুল কে।

এ ঘটনা তদন্ত করে গতকাল শনিবার (১০ জুলাই) দুই যুবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারের পর দুই আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

তৌহিদুল ইসলাম বসবাস করতো ময়মনসিংহ শহরের গোহাইলকান্দি তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকার একটি মেসে। তিনি ছিলেন নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম খানের ছেলে৷ হত্যার পর নিহতের বাবা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যাক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।

এ ঘটনার পর পুলিশ গোহাইলকান্দি এলাকার সোহেল মিয়ার ছেলে আতিকুজ্জামান আশিককে গ্রেফতার করলে আদালতে স্বীকারোক্তি দেয় আশিক। এরপর কোতোয়ালি থানার পুলিশ মামলাটি দুই মাস তদন্ত করে এক আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। তবে নিহত তৌহিদের বাবা সাইফুল ইসলামের নারাজির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি অধিকতর তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) দায়িত্ব পেয়েই সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে নগরীর জামতলা পোড়াবাড়ি এলাকার হারুন অর রশিদের ছেলে মো: রিফাত (২৩) এবং আউটার স্টেডিয়াম এলাকার মৃত আবদুল রাজ্জাকের ছেলে মহসিন মিয়াকে আটক করে।

জিজ্ঞাসাবাদে রিফাত ও মহসিন পিবিআইকে জানায়, রংমিস্ত্রি রিফাত, আশিক, মহসিন ও অন্তর একসঙ্গে চলাফেরা করত। গত বছরের ১ মে রাতে তারা মহসিনের বাসায় ইয়াবা সেবন করে। আশিক তাদের ইয়াবা খাওয়া শেখায়। ইয়াবা খাওয়া শেষ হলে আশিক একটি মোবাইল ফোন চুরির পরিকল্পনা করে। এর পর তিনজন মিলে তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকার সোলায়মানের বাসায় যায়। ওই বাসার নিচতলার মেসের রুমে তৌহিদুল তখন সেহরি খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। জানালা দিয়ে স্মার্টফোনটি নেওয়ার সময় তৌহিদুল তাদের দেখে ফেলে। তখন মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে তিনজনের একজনকে জাপটে ধরে তৌহিদুল। এ সময় আরেকজন দেড় হাত লম্বা লোহার রড দিয়ে তৌহিদুলের বুকে আঘাত করে।

শনিবার (১০ জুলাই) রিফাতকে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট মোহাম্মদ আব্দুল হাইয়ের আদালতে হাজির করা হলে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানান মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক দেলোয়ার হোসাইন। তিনি বলেন, অপর আসামি মহসিনের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বিডিসমাচার কে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তৌহিদুল হত্যা মামলার তদন্তভার পেয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

Please Share This Post in Your Social Media


সামান্য মোবাইল ফোনের জন্য খুন হয়েছিলো জাককানইবির শিক্ষার্থী তৌহিদুর

Update Time : ০১:১৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১২ জুলাই ২০২১

 

মো: শুভ ইসলাম, (জাককানইবি প্রতিনিধি):

সামান্য একটি মোবাইল ফোনের জন্য খুন করা হয়েছিলো জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাককানইবি) ফিন্যান্স বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী তৌহিদুর ইসলাম।

গতবছর (২০২০সালের) ১মে রাতে সেহরির সময় এলোপাতাড়ি ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থীকে।ঘটনার এক বছর পর অথাৎ ২০২১ এ এসে জাককানইবির এই শিক্ষার্থীর হত্যার জট খুলেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মোবাইল চুরি দেখে ফেলায় খুন করা হয়েছিলো তৌহিদুল কে।

এ ঘটনা তদন্ত করে গতকাল শনিবার (১০ জুলাই) দুই যুবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেফতারের পর দুই আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

তৌহিদুল ইসলাম বসবাস করতো ময়মনসিংহ শহরের গোহাইলকান্দি তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকার একটি মেসে। তিনি ছিলেন নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলার রামেশ্বরপুর গ্রামের সাইফুল ইসলাম খানের ছেলে৷ হত্যার পর নিহতের বাবা অজ্ঞাতপরিচয় ব্যাক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।

এ ঘটনার পর পুলিশ গোহাইলকান্দি এলাকার সোহেল মিয়ার ছেলে আতিকুজ্জামান আশিককে গ্রেফতার করলে আদালতে স্বীকারোক্তি দেয় আশিক। এরপর কোতোয়ালি থানার পুলিশ মামলাটি দুই মাস তদন্ত করে এক আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। তবে নিহত তৌহিদের বাবা সাইফুল ইসলামের নারাজির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি অধিকতর তদন্তভার পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) দায়িত্ব পেয়েই সন্দেহভাজন আসামি হিসেবে নগরীর জামতলা পোড়াবাড়ি এলাকার হারুন অর রশিদের ছেলে মো: রিফাত (২৩) এবং আউটার স্টেডিয়াম এলাকার মৃত আবদুল রাজ্জাকের ছেলে মহসিন মিয়াকে আটক করে।

জিজ্ঞাসাবাদে রিফাত ও মহসিন পিবিআইকে জানায়, রংমিস্ত্রি রিফাত, আশিক, মহসিন ও অন্তর একসঙ্গে চলাফেরা করত। গত বছরের ১ মে রাতে তারা মহসিনের বাসায় ইয়াবা সেবন করে। আশিক তাদের ইয়াবা খাওয়া শেখায়। ইয়াবা খাওয়া শেষ হলে আশিক একটি মোবাইল ফোন চুরির পরিকল্পনা করে। এর পর তিনজন মিলে তিনকোনা পুকুরপাড় এলাকার সোলায়মানের বাসায় যায়। ওই বাসার নিচতলার মেসের রুমে তৌহিদুল তখন সেহরি খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। জানালা দিয়ে স্মার্টফোনটি নেওয়ার সময় তৌহিদুল তাদের দেখে ফেলে। তখন মোবাইল ফোন উদ্ধার করতে দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে তিনজনের একজনকে জাপটে ধরে তৌহিদুল। এ সময় আরেকজন দেড় হাত লম্বা লোহার রড দিয়ে তৌহিদুলের বুকে আঘাত করে।

শনিবার (১০ জুলাই) রিফাতকে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট মোহাম্মদ আব্দুল হাইয়ের আদালতে হাজির করা হলে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানান মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক দেলোয়ার হোসাইন। তিনি বলেন, অপর আসামি মহসিনের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।

পিবিআই ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস বিডিসমাচার কে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী তৌহিদুল হত্যা মামলার তদন্তভার পেয়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।