কোটা সংস্কার আন্দোলন : ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে রাজধানীতে অচলাবস্থা

  • Update Time : ০৭:০৭:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪
  • / 52

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

সরকারি চাকরিতে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা বাতিলের দাবিতে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর শাহবাগ মোড় সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৮ জুলাই) বিকেল ৪টায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে বিকেল ৩ টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রতিটি হল ও বিভাগ থেকে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন।

এরপর গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে হলপাড়া-মুহসীন হল-ভিসি চত্বর-টিএসসি হয়ে শাহবাগে যান শিক্ষার্থীরা। সেখানে গিয়ে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।

শাহবাগ ছাড়াও একই সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্ব পয়েন্টে দ্বিতীয় দিনের মতো শিক্ষার্থীদের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি চলছে।

রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বিকেল পৌনে ৫টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে থেকে মিন্টু রোড পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের দুপাশে কয়েকশো গাড়ি আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের ‘কোটা প্রথা বাতিল চাই বাতিল চাই’; ‘আঠারোর পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে’; ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’; ‘৫২-এর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’; ‘ছাত্র সমাজের একশন ডাইরেক্ট একশন’; ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘মেধা যার, চাকরি তার’; ‘সারা বাংলায় খবর দে কোটাপ্রথা কবর দে’; ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্রসমাজ জেগেছে’; ‘সংবিধানের মূলকথা সুযোগের সমতা’; ‘লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে’; ‘৭১-এর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’; ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’; ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মোট চারটি দাবি জানাচ্ছেন। সেগুলো হলো –

১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা।

২. পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠনপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত)।

৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া।

৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


কোটা সংস্কার আন্দোলন : ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচিতে রাজধানীতে অচলাবস্থা

Update Time : ০৭:০৭:৫০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

সরকারি চাকরিতে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড) ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ ৫৬ শতাংশ কোটা বাতিলের দাবিতে এবং ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজধানীর শাহবাগ মোড় সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

সোমবার (৮ জুলাই) বিকেল ৪টায় শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে বিকেল ৩ টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রতিটি হল ও বিভাগ থেকে মিছিল নিয়ে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে জড়ো হন।

এরপর গ্রন্থাগারের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে হলপাড়া-মুহসীন হল-ভিসি চত্বর-টিএসসি হয়ে শাহবাগে যান শিক্ষার্থীরা। সেখানে গিয়ে তারা শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন।

শাহবাগ ছাড়াও একই সময়ে রাজধানীর বিভিন্ন গুরুত্ব পয়েন্টে দ্বিতীয় দিনের মতো শিক্ষার্থীদের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি চলছে।

রাজধানীর সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন ঢাকা কলেজ ও ইডেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।

বিকেল পৌনে ৫টার দিকে হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের সামনে থেকে মিন্টু রোড পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এতে সড়কের দুপাশে কয়েকশো গাড়ি আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজট সৃষ্টি হয়েছে।

বিক্ষোভ মিছিল ও অবরোধ কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের ‘কোটা প্রথা বাতিল চাই বাতিল চাই’; ‘আঠারোর পরিপত্র পুনর্বহাল করতে হবে’; ‘রক্তের বন্যায় ভেসে যাবে অন্যায়’; ‘৫২-এর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’; ‘ছাত্র সমাজের একশন ডাইরেক্ট একশন’; ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘মেধা যার, চাকরি তার’; ‘সারা বাংলায় খবর দে কোটাপ্রথা কবর দে’; ‘মুক্তিযুদ্ধের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’; ‘জেগেছে রে জেগেছে ছাত্রসমাজ জেগেছে’; ‘সংবিধানের মূলকথা সুযোগের সমতা’; ‘লেগেছে রে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে’; ‘৭১-এর হাতিয়ার গর্জে উঠো আরেকবার’; ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’; ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা মোট চারটি দাবি জানাচ্ছেন। সেগুলো হলো –

১. ২০১৮ সালে ঘোষিত সরকারি চাকরিতে কোটা পদ্ধতি বাতিল ও মেধাভিত্তিক নিয়োগের পরিপত্র বহাল রাখা।

২. পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠনপূর্বক দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরির সমস্ত গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া (সুবিধাবঞ্চিত ও প্রতিবন্ধী ব্যতীত)।

৩. সরকারি চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা সুবিধা একাধিকবার ব্যবহার করা যাবে না এবং কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্যপদগুলোতে মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া।

৪. দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা।