ঢাবিতে চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ শিক্ষার্থীদের

  • Update Time : ০৮:৫২:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুন ২০২৪
  • / 68

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।  
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে কলাভবন, মল চত্বর, ভিসি চত্বর, টিএসসি হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।

বিক্ষোভ মিছিলে ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক’, ‘স্বাধীনতার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ সহ নানা স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।  

সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ হোসেন বলেন, কোনো বৈষম্যহীন রাষ্ট্রে ৫৬ শতাংশ কোটা থাকতে পারে না। তীব্র আন্দোলনের মুখে সরকার যেখানে কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছিল, হাইকোর্ট কেন সেই কোটাকে আবার পুনর্বহাল করল; আমরা জানি না।

সরকারের সিদ্ধান্তকে হাইকোর্ট বাতিল করেছে। আমরা চাইব সরকারের পক্ষ থেকে যেন আপিল বিভাগে আপিল করা হয়। নয়তো আন্দোলন চলবে।  

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ২০১৮ সালের রক্তের দাগ আজও শুকায় নাই। আমাদের সেই সংগ্রাম ব্যর্থ হওয়ার পথে। আমাদের ওপর হাইকোর্ট যে রায় চাপিয়ে দিয়েছেন, সেই রায় মানি না। যারা কোটাধারী মেধাবী পরিচয় দিতে চান তাদেরকে বলতে চাই, এই পরিচয় খুবই লজ্জার।  

শিক্ষার্থী সারজিস আলম বলেন, ৭১ এর আগে পাকিস্তান সরকার যে বৈষম্য বাঙালিদের সঙ্গে করেছিল, সেই বৈষম্য আমরা মেনে নিতে পারিনি বলেই বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছি। আজ স্বাধীন বাংলাদেশে দুই শতাংশ মানুষের জন্য ৫৬ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটাও চরম বৈষম্য। এই বৈষম্য আমরা মানি না।  

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে।

এদিকে গত বুধবার (৫ জুন) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


ঢাবিতে চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ শিক্ষার্থীদের

Update Time : ০৮:৫২:১২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুন ২০২৪

জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি

সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা সহ ৫৬ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের আদেশের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা।  
বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিকেল ৫টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে থেকে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে কলাভবন, মল চত্বর, ভিসি চত্বর, টিএসসি হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনারে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন দুই হাজারের বেশি শিক্ষার্থী।

বিক্ষোভ মিছিলে ‘কোটা প্রথা নিপাত যাক’, ‘স্বাধীনতার বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই’ সহ নানা স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।  

সমাবেশে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ হোসেন বলেন, কোনো বৈষম্যহীন রাষ্ট্রে ৫৬ শতাংশ কোটা থাকতে পারে না। তীব্র আন্দোলনের মুখে সরকার যেখানে কোটা পদ্ধতি বাতিল করেছিল, হাইকোর্ট কেন সেই কোটাকে আবার পুনর্বহাল করল; আমরা জানি না।

সরকারের সিদ্ধান্তকে হাইকোর্ট বাতিল করেছে। আমরা চাইব সরকারের পক্ষ থেকে যেন আপিল বিভাগে আপিল করা হয়। নয়তো আন্দোলন চলবে।  

ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ২০১৮ সালের রক্তের দাগ আজও শুকায় নাই। আমাদের সেই সংগ্রাম ব্যর্থ হওয়ার পথে। আমাদের ওপর হাইকোর্ট যে রায় চাপিয়ে দিয়েছেন, সেই রায় মানি না। যারা কোটাধারী মেধাবী পরিচয় দিতে চান তাদেরকে বলতে চাই, এই পরিচয় খুবই লজ্জার।  

শিক্ষার্থী সারজিস আলম বলেন, ৭১ এর আগে পাকিস্তান সরকার যে বৈষম্য বাঙালিদের সঙ্গে করেছিল, সেই বৈষম্য আমরা মেনে নিতে পারিনি বলেই বাংলাদেশকে স্বাধীন করেছি। আজ স্বাধীন বাংলাদেশে দুই শতাংশ মানুষের জন্য ৫৬ শতাংশ কোটার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটাও চরম বৈষম্য। এই বৈষম্য আমরা মানি না।  

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন করপোরেশনে চাকরিতে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে (৯ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত) মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে।

এদিকে গত বুধবার (৫ জুন) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটাসহ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেছেন।