‘ধর্মীয় উগ্রবাদ যত আসবে, প্রগতির চাকা তত উল্টো দিকে ঘুরবে: রাবি উপাচার্য

  • Update Time : ১০:২৪:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর ২০২১
  • / 192

আসিফ আজাদ সিয়াম, রাবি প্রতিনিধি:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতির জনকের কন্যার যে উন্নয়ন ও অগ্রগতি সেটিকে পিছিয়ে ফেলতেই কিছু দুষ্কৃতিকারী মাঝেমধ্যে জেগে উঠে। কেন তারা সুযোগ পায়? সেটি নিয়ে আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে। শুধু রাষ্ট্রের উপর নির্ভর করলে চলবে না। আমরা সকলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হলেই এই অপশক্তিকে দূর করা সম্ভব হবে। না হলে ধর্মীয় উগ্রবাদ যত আসবে প্রগতির চাকা তত উল্টো দিকে ঘুরবে। এছাড়া ক্যাম্পাসে মধ্যে কোন ধরনের সাম্প্রদায়িকতা ছড়ালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ এর ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে উপাচার্য এসব কথা বলেন।

কর্মসূচিতে উপাচার্য বলেন, ‘আবহমান বাংলার ধর্ম, বর্ণ সামনে এনে আমাদের মাঝে যে বিভাজন তৈরি করা হচ্ছে তা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। আমাদের নিজেদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বীজ লুকায়িত আছে, এটি মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে। এটি দূর করতে হলে আমাদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। আমাদের বাড়িতে, মননে ও পাঠ্য বইয়ে অসাম্পদায়িকতার চর্চা করতে হবে।’

No description available.

উপাচার্য আরও বলেছেন, ‘সাম্প্রদায়িকতার বীজ আমাদের মাঝেই আছে। আর প্রাঞ্জল বক্তব্যে এই বীজ উপড়ে ফেলা যাবে না। আমাদের জীবনযাপনের মধ্যে অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্ম নিরপেক্ষতার চর্চা করতে না পারলে কখনোই সাম্প্রদায়িকতা থেকে বের হতে পারবো না।’

কর্মসূচিতে ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মলয় ভৌমিক বলেন, এই একবিংশ শতাব্দীতে আমরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে এক ভিন্ন উপসর্গ লক্ষ করছি। আমরা বলছি আমরা এগোচ্ছি, কিন্তু না। ভারত উপমহাদেশসহ বিশ্বের উন্নত দেশেও ধর্ম, বর্ণ, জাতি, আঞ্চলিকতা এসব বিষয়কে উসকে দিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা আমরা আমাদের তরুণ যুব সমাজকে তৈরি করতে পারছি না। সম্প্রতি যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তাতে শুধু স্থানীয়ভাবে যারা জড়িত তাদের হাতই নেই। এর সাথে সম্পৃক্ত আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্য, ভূ-রাজনৈতিক অবস্থা। এই যায়গাগুলোতে যদি আমরা উন্নতি করতে না পারি তাহলে এমন ঘটনা কিন্তু বারংবার ঘটতেই থাকবে।

কর্মসূচিতে গণযোগাযোগ ও সংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া ও অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমারা সাহা, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শাহ আজম শান্তুনু প্রমুখ।

এছাড়া বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


‘ধর্মীয় উগ্রবাদ যত আসবে, প্রগতির চাকা তত উল্টো দিকে ঘুরবে: রাবি উপাচার্য

Update Time : ১০:২৪:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অক্টোবর ২০২১

আসিফ আজাদ সিয়াম, রাবি প্রতিনিধি:

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতির জনকের কন্যার যে উন্নয়ন ও অগ্রগতি সেটিকে পিছিয়ে ফেলতেই কিছু দুষ্কৃতিকারী মাঝেমধ্যে জেগে উঠে। কেন তারা সুযোগ পায়? সেটি নিয়ে আমাদের আরো সতর্ক হতে হবে। শুধু রাষ্ট্রের উপর নির্ভর করলে চলবে না। আমরা সকলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ঐক্যবদ্ধ হলেই এই অপশক্তিকে দূর করা সম্ভব হবে। না হলে ধর্মীয় উগ্রবাদ যত আসবে প্রগতির চাকা তত উল্টো দিকে ঘুরবে। এছাড়া ক্যাম্পাসে মধ্যে কোন ধরনের সাম্প্রদায়িকতা ছড়ালে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’ এর ব্যানারে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে উপাচার্য এসব কথা বলেন।

কর্মসূচিতে উপাচার্য বলেন, ‘আবহমান বাংলার ধর্ম, বর্ণ সামনে এনে আমাদের মাঝে যে বিভাজন তৈরি করা হচ্ছে তা আমাদের জন্য লজ্জাজনক। আমাদের নিজেদের মধ্যে সাম্প্রদায়িকতার বীজ লুকায়িত আছে, এটি মাথায় রেখেই কাজ করতে হবে। এটি দূর করতে হলে আমাদের দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হবে। আমাদের বাড়িতে, মননে ও পাঠ্য বইয়ে অসাম্পদায়িকতার চর্চা করতে হবে।’

No description available.

উপাচার্য আরও বলেছেন, ‘সাম্প্রদায়িকতার বীজ আমাদের মাঝেই আছে। আর প্রাঞ্জল বক্তব্যে এই বীজ উপড়ে ফেলা যাবে না। আমাদের জীবনযাপনের মধ্যে অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্ম নিরপেক্ষতার চর্চা করতে না পারলে কখনোই সাম্প্রদায়িকতা থেকে বের হতে পারবো না।’

কর্মসূচিতে ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক মলয় ভৌমিক বলেন, এই একবিংশ শতাব্দীতে আমরা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক জীবনে এক ভিন্ন উপসর্গ লক্ষ করছি। আমরা বলছি আমরা এগোচ্ছি, কিন্তু না। ভারত উপমহাদেশসহ বিশ্বের উন্নত দেশেও ধর্ম, বর্ণ, জাতি, আঞ্চলিকতা এসব বিষয়কে উসকে দিয়ে ফায়দা লোটার চেষ্টা করা হচ্ছে। আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা আমরা আমাদের তরুণ যুব সমাজকে তৈরি করতে পারছি না। সম্প্রতি যে ঘটনাগুলো ঘটেছে তাতে শুধু স্থানীয়ভাবে যারা জড়িত তাদের হাতই নেই। এর সাথে সম্পৃক্ত আন্তর্জাতিক ব্যবসা বাণিজ্য, ভূ-রাজনৈতিক অবস্থা। এই যায়গাগুলোতে যদি আমরা উন্নতি করতে না পারি তাহলে এমন ঘটনা কিন্তু বারংবার ঘটতেই থাকবে।

কর্মসূচিতে গণযোগাযোগ ও সংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক চৌধুরী মো. জাকারিয়া ও অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম, সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আনন্দ কুমারা সাহা, মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক শাহ আজম শান্তুনু প্রমুখ।

এছাড়া বিভিন্ন বিভাগের শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।