নদী দখল ও দূষণ রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ চাই

  • Update Time : ০৩:২১:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০২০
  • / 164
ইমরান খান রাজ:
নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ। দেশের বিভিন্ন বিভাগ, জেলা, উপজেলার আনাচে-কানাচেতে ছড়িয়ে রয়েছে বহু নদী ও অসংখ্য খাল। নদী ও খাল আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক উপকারে আসে৷ গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ নদী বা খালে গোসল করে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন এলাকার মানুষ নদীর পানি রান্নার কাজেও ব্যবহার করে থাকে। অনেক পশুপাখি সরাসরি নদীর জল খেয়ে বেঁচে থাকে।
.
গ্রাম বাংলার কৃষকেরা নদী, খাল-বিলের পানি কৃষিকাজে ব্যবহার করে। দেশের অভ্যন্তরীণ বহু বানিজ্যিক যোগাযোগ নদীপথে হয়ে থাকে। নদী ও খাল আমাদের উপকারী বন্ধু হওয়া সত্বেও আমরা এদের উপকার স্বীকার করিনা। বরং বর্তমানে দেশের অনেক স্থানেই মানুষজন নদী ও খাল দখল, ভরাট ও দূষণ করে আসছে যা পরিবেশ রক্ষায় খুবই দুশ্চিন্তার বিষয়।
.
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হবার পর থেকে আজ অবধি দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। দেশের জনসংখ্যা দ্রুততার সাথে বৃদ্ধির ফলে মানুষের অতিরিক্ত আবাসস্থলের প্রয়োজন হয়ে পড়ছে আর যার ফলে মানুষ তাঁদের আশেপাশের নদীনালা ও খাল ভরাট করে বাসস্থান তৈরি করছে। পরিবারের ভরনপোষণ মেটাতে অনেকে নদী ড্রেজিং করে অবৈধ বালু ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে। অতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে প্রতিটি বাজারে আনাচে-কানাচে গড়ে উঠছে খাবার হোটেল, কলকারখানা। আর সেইসব খাবার হোটেল ও কলকারখানার বর্জ্য সরাসরি ফেলা হচ্ছে নদীতে।
.
এতে করে নদীর পানি দূষণ হচ্ছে, নদীর মাছ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে, নদীর পাড় ময়লা-আবর্জনা দিয়ে ভাগাড়ে রূপ নিচ্ছে। নদী এবং খাল সরকারি সম্পত্তি। এসব দেখাশোনা করার মূল দ্বায়িত্ব সরকারের হলেও সমাজের সচেতন নাগরিক হিসেবে নদী ও খাল দখল, ভরাট ও দূষণমূক্ত রাখতে আমাদের দ্বায়িত্ব পালন করতে হবে৷ নিজে নদী দখল ও দূষণ থেকে মুক্ত থাকতে হবে এবং অন্যকেউ সচেতন করতে হবে৷ প্রতিবছর নদী সংরক্ষণের জন্য সরকারিভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়ে থাকে৷ শহর, মফস্বল ও গ্রামাঞ্চলের মানুষদের মাঝে নদী ও খাল বাঁচাতে বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। তবে যারা নিজস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে নদী বা খাল দখল বা দূষণ করে থাকে তাঁদেরকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত এবং এদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে থাকবে সেটাই প্রত্যাশা।
.
সর্বোপরি নদী বা খাল আমাদের জাতীয় সম্পদ। এদের রক্ষা করা আমাদের নাগরিক দ্বায়িত্ব। মনে রাখতে হবে নদী আর খাল বাঁচলে ভালো থাকবে দেশের মানুষ আর মানুষ ভালো থাকলে ভালো থাকবে আমাদের বাংলাদেশ।
Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


নদী দখল ও দূষণ রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ চাই

Update Time : ০৩:২১:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ নভেম্বর ২০২০
ইমরান খান রাজ:
নদীমাতৃক দেশ বাংলাদেশ। দেশের বিভিন্ন বিভাগ, জেলা, উপজেলার আনাচে-কানাচেতে ছড়িয়ে রয়েছে বহু নদী ও অসংখ্য খাল। নদী ও খাল আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অনেক উপকারে আসে৷ গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ নদী বা খালে গোসল করে থাকে। তাছাড়া বিভিন্ন এলাকার মানুষ নদীর পানি রান্নার কাজেও ব্যবহার করে থাকে। অনেক পশুপাখি সরাসরি নদীর জল খেয়ে বেঁচে থাকে।
.
গ্রাম বাংলার কৃষকেরা নদী, খাল-বিলের পানি কৃষিকাজে ব্যবহার করে। দেশের অভ্যন্তরীণ বহু বানিজ্যিক যোগাযোগ নদীপথে হয়ে থাকে। নদী ও খাল আমাদের উপকারী বন্ধু হওয়া সত্বেও আমরা এদের উপকার স্বীকার করিনা। বরং বর্তমানে দেশের অনেক স্থানেই মানুষজন নদী ও খাল দখল, ভরাট ও দূষণ করে আসছে যা পরিবেশ রক্ষায় খুবই দুশ্চিন্তার বিষয়।
.
১৯৭১ সালে দেশ স্বাধীন হবার পর থেকে আজ অবধি দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে প্রতিনিয়ত। দেশের জনসংখ্যা দ্রুততার সাথে বৃদ্ধির ফলে মানুষের অতিরিক্ত আবাসস্থলের প্রয়োজন হয়ে পড়ছে আর যার ফলে মানুষ তাঁদের আশেপাশের নদীনালা ও খাল ভরাট করে বাসস্থান তৈরি করছে। পরিবারের ভরনপোষণ মেটাতে অনেকে নদী ড্রেজিং করে অবৈধ বালু ব্যবসার সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে। অতিরিক্ত জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে প্রতিটি বাজারে আনাচে-কানাচে গড়ে উঠছে খাবার হোটেল, কলকারখানা। আর সেইসব খাবার হোটেল ও কলকারখানার বর্জ্য সরাসরি ফেলা হচ্ছে নদীতে।
.
এতে করে নদীর পানি দূষণ হচ্ছে, নদীর মাছ নানাবিধ রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে, নদীর পাড় ময়লা-আবর্জনা দিয়ে ভাগাড়ে রূপ নিচ্ছে। নদী এবং খাল সরকারি সম্পত্তি। এসব দেখাশোনা করার মূল দ্বায়িত্ব সরকারের হলেও সমাজের সচেতন নাগরিক হিসেবে নদী ও খাল দখল, ভরাট ও দূষণমূক্ত রাখতে আমাদের দ্বায়িত্ব পালন করতে হবে৷ নিজে নদী দখল ও দূষণ থেকে মুক্ত থাকতে হবে এবং অন্যকেউ সচেতন করতে হবে৷ প্রতিবছর নদী সংরক্ষণের জন্য সরকারিভাবে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়ে থাকে৷ শহর, মফস্বল ও গ্রামাঞ্চলের মানুষদের মাঝে নদী ও খাল বাঁচাতে বিভিন্ন সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়। তবে যারা নিজস্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে নদী বা খাল দখল বা দূষণ করে থাকে তাঁদেরকে আইনের আওতায় এনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত এবং এদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর অবস্থানে থাকবে সেটাই প্রত্যাশা।
.
সর্বোপরি নদী বা খাল আমাদের জাতীয় সম্পদ। এদের রক্ষা করা আমাদের নাগরিক দ্বায়িত্ব। মনে রাখতে হবে নদী আর খাল বাঁচলে ভালো থাকবে দেশের মানুষ আর মানুষ ভালো থাকলে ভালো থাকবে আমাদের বাংলাদেশ।