রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকা থেকে মুঠোফোন ছিনতাই হওয়া একটি নিয়মিত ঘটনা। আর এসব মুঠোফোন উদ্ধারের ঘটনাও নিয়মিত। গত এক মাসে নিউ মার্কেট থানার পুলিশ ছিনতাই হওয়া এমন ৩৫টি মুঠোফোন উদ্ধার করে মালিককে ফেরত দিয়েছে।
মুঠোফোন ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়মিত হওয়ায় নিউ মার্কেট থানা একটি আলাদা টিম গঠন করেছে। এর তদারকি করেন নিউ মার্কেট জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আবুল হাসান।
শুক্রবার রাতে বিডি সমাচারকে আবুল হাসান এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘অক্টোবর মাসে আমরা ৩৫টি ফোন উদ্ধার করেছি। ছিনতাই হওয়া বা হারিয়ে যাওয়া ফোনের ব্যাপারে যতগুলো সাধারণ ডায়েরি (জিডি) হয়েছে তার অর্ধেক আমরা উদ্ধার করেছি। এসব ফোন উদ্ধার করা বেশ ঝামেলাযুক্ত ব্যাপার, তবু আমরা মানুষের জন্য কাজ করার চেষ্টা করছি। এবং যারা এই ছিনতাইয়ের কাজগুলো করে তাদেরকেও আমরা শান্তিতে থাকতে দিচ্ছি না। নিয়মিত আটকও করছি।’
৩৫টি মুঠোফোন উদ্ধারের জন্য চেষ্টা করেছেন নিউ মার্কেট থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মাসুদ রানা। তিনি বলেন, ‘এই ফোনগুলো উদ্ধার করা অনেক কষ্টের। তবু আমি চেষ্টা করেছি। এ নিয়ে ডিবিতে বারবার যোগাযোগ করতে হয়। কারণ, ডিবিই ফোনগুলো ট্র্যাকিং করে আমাদেরকে ফোনের অবস্থান জানিয়ে দেয়। সঙ্গে ওই ফোনে কোন নম্বর ব্যবহার করা হচ্ছে সেটাও জানিয়ে দেয়। আমি এগুলো কাজ করে আরাম পাই। তাই চেষ্টা করছি মানুষের জন্য কিছু করার।’
উদ্ধার হওয়া ৩৫টি মুঠোফোনের মধ্যে ১৯টি গতকাল বৃহস্পতিবার এবং আজ শুক্রবার ১৬টি মুঠোফোন মূল মালিককে ফেরত দেয় নিউ মার্কেট থানা পুলিশ। এদের ভেতরে একজন ইয়াসির আরাফাত। মাস পাঁচেক আগে তাঁর মুঠোফোনটি ছিনতাইকারীরা টান দিয়ে নিয়ে যায়। তখন তিনি বাসে ছিলেন।
ইয়াসির আরাফাত বলেন, ‘ফোনটি হারিয়ে যাওয়ার পর আশা ছেড়ে দিয়েছিলাম যে, আর পাওয়া যাবে না। কিন্তু এএসআই মাসুদ ভাই অনেক আন্তরিকতা দেখিয়ে ফোনটি উদ্ধার করেছেন। পুলিশের এই সেবা আমার ভালো লেগেছে। তাদের অনেক ধন্যবাদ।’
নিউ মার্কেট থেকে রিকশায় চড়ে যাচ্ছিলেন নাফিসা ইয়াসমিন। তিনি মার্কিন দূতাবাসে কর্মরত। তিনি বলেন, ‘আমি রিকশায় করে যাচ্ছিলাম। এমন সময় মোটরসাইকেলে করে দুজন এসে আমার ব্যাগ টান দিয়ে নিয়ে যায়। পরে রিকশা থেকে পড়ে আমার মাথা ফেটে যায়। ঘটনাটি ১১ সেপ্টেম্বরের। তারপর নিউ মার্কেট থানায় জিডি করি। পুলিশ খুবই আন্তরিকতা দেখিয়েছে এ ব্যাপারে।’
মুঠোফোন ছিনতাই হলে মানুষকে নিউ মার্কেট থানায় গিয়ে জিডি করার আহ্বান জানান এএসআই মাসুদ রানা। তিনি আরো বলেন, ‘কারো ফোন ছিনতাই হলে আমাদেরকে জানাবেন। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা চালাব। উদ্ধার করতে পারবোই সেকথা বলছি না, তবে আমরা চেষ্টা চালিয়ে দেখব। অনেক ক্ষেত্রে ছিনতাই করার পর ফোনগুলোর আইএমই নম্বর পরিবর্তন করে ফেলে চোর। তখন আর ট্র্যাকিং করে পাওয়া যায় না।’