সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আইন কঠোর করছে ফ্রান্স

  • Update Time : ০৪:৫৭:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০২০
  • / 198

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ চরমপন্থীদের মোকাবিলায় কঠিন হচ্ছে ফ্রান্স। খুব শিগগিরই পার্লামেন্টে এ-সংক্রান্ত বিল আনা হবে। সেই বিলে যেসব প্রস্তাব আনা হয়েছে তার কয়েকটির কথা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

নতুন বিলে মসজিদগুলোতে অর্থের উৎস খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এছাড়া ধর্মীয় সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও আরোপ করা হবে কড়াকড়ি।

ফ্রান্স ইতোমধ্যে চরমপন্থী মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন।

প্রস্তাবিত বিলের বিষয়ে তিনি একটি সংবাদপত্রকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কোনো পুরুষ যদি চিকিৎসকের কাছে যান এবং বলেন, মহিলা চিকিৎসকের কাছে তিনি চিকিৎসা করাবেন না, তাহলে তার পাঁচ মাসের কারাদণ্ড ও ৭৫ হাজার ইউরো জরিমানা করা হবে। একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে মেয়েদের ক্ষেত্রেও। কোনো সরকারি কর্মকর্তার ওপর চাপ সৃষ্টি করলে বা কোনো শিক্ষকের কাছে পড়তে না চাইলেও শাস্তি হবে।

তার এ বক্তব্যের পরপরই সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে সমালোচনা। বিশেষ করে চিকিৎসক বা নার্সের কাছে চিকিৎসা নিতে না চাইলে কারাদণ্ড ও জরিমানার বিধানের সমালোচনা করেছেন নেটিজেনরা।

জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন বলছে, ডিসেম্বরে আনা হবে এই বিল। ১৯০৫ সালে রাষ্ট্র থেকে চার্চকে আলাদা করতে আইন আনা করা হয়েছিল। সেই আইনকেই সংশোধন করে নতুন প্রস্তাবগুলো ঢোকানো হবে।

তবে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্য নতুন নয়। স্যামুয়েল প্যাটির হত্যার পর তিনি বলেছিলেন, সুপারমার্কেটে হালাল ও কোশার খাবার দেখে তিনি অবাক হয়ে যান। তার কাছে, এটাও বিচ্ছিন্নতাবাদের উদাহরণ।

স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাক-স্বাধীনতার ব্যাপারে আলোচনা করতে গিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের উপকণ্ঠের একটি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কার্টুন প্রদর্শন করেন। এ ঘটনার পর গত ১৬ অক্টোবর ১৮ বছর বয়সী এক চেচেন কিশোর স্যামুয়েলকে শিরশ্ছেদ করে হত্যা করেন।

স্যামুয়েল হত্যাকাণ্ডের পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কার্টুন প্রদর্শনী অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। এ নিয়ে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ফ্রান্সের।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় আইন কঠোর করছে ফ্রান্স

Update Time : ০৪:৫৭:২০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ নভেম্বর ২০২০

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ চরমপন্থীদের মোকাবিলায় কঠিন হচ্ছে ফ্রান্স। খুব শিগগিরই পার্লামেন্টে এ-সংক্রান্ত বিল আনা হবে। সেই বিলে যেসব প্রস্তাব আনা হয়েছে তার কয়েকটির কথা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।

নতুন বিলে মসজিদগুলোতে অর্থের উৎস খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। এছাড়া ধর্মীয় সংগঠন ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও আরোপ করা হবে কড়াকড়ি।

ফ্রান্স ইতোমধ্যে চরমপন্থী মুসলিমদের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করে দিয়েছে বলে মন্তব্য করছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেরাল্ড ডারমানিন।

প্রস্তাবিত বিলের বিষয়ে তিনি একটি সংবাদপত্রকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, কোনো পুরুষ যদি চিকিৎসকের কাছে যান এবং বলেন, মহিলা চিকিৎসকের কাছে তিনি চিকিৎসা করাবেন না, তাহলে তার পাঁচ মাসের কারাদণ্ড ও ৭৫ হাজার ইউরো জরিমানা করা হবে। একই নিয়ম প্রযোজ্য হবে মেয়েদের ক্ষেত্রেও। কোনো সরকারি কর্মকর্তার ওপর চাপ সৃষ্টি করলে বা কোনো শিক্ষকের কাছে পড়তে না চাইলেও শাস্তি হবে।

তার এ বক্তব্যের পরপরই সামাজিক মাধ্যমে শুরু হয়েছে সমালোচনা। বিশেষ করে চিকিৎসক বা নার্সের কাছে চিকিৎসা নিতে না চাইলে কারাদণ্ড ও জরিমানার বিধানের সমালোচনা করেছেন নেটিজেনরা।

জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন বলছে, ডিসেম্বরে আনা হবে এই বিল। ১৯০৫ সালে রাষ্ট্র থেকে চার্চকে আলাদা করতে আইন আনা করা হয়েছিল। সেই আইনকেই সংশোধন করে নতুন প্রস্তাবগুলো ঢোকানো হবে।

তবে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিতর্কিত মন্তব্য নতুন নয়। স্যামুয়েল প্যাটির হত্যার পর তিনি বলেছিলেন, সুপারমার্কেটে হালাল ও কোশার খাবার দেখে তিনি অবাক হয়ে যান। তার কাছে, এটাও বিচ্ছিন্নতাবাদের উদাহরণ।

স্কুলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বাক-স্বাধীনতার ব্যাপারে আলোচনা করতে গিয়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের উপকণ্ঠের একটি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক স্যামুয়েল প্যাটি হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কার্টুন প্রদর্শন করেন। এ ঘটনার পর গত ১৬ অক্টোবর ১৮ বছর বয়সী এক চেচেন কিশোর স্যামুয়েলকে শিরশ্ছেদ করে হত্যা করেন।

স্যামুয়েল হত্যাকাণ্ডের পর ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ তার ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কার্টুন প্রদর্শনী অব্যাহত রাখার ঘোষণা দেন। এ নিয়ে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন শুরু হয়েছে ফ্রান্সের।