মঙ্গলবার সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- আল আমিন প্রধান (এমডি ও সিইও), মো. জসীম (নির্বাহী কর্মকর্তা), মো. মানিক মিয়া (ম্যানেজার-হিসাব), মো. তানভীর আহম্মেদ (ম্যানেজার-প্রোডাক্টস), মো. পাভেল সরকার (সহকারী ম্যানেজার- প্রোডাক্টস), নাদিম ও অফিস সহকারী মো. ইয়াসির উল্লাহ।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, ‘এসপিসি ওয়ার্ল্ড লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি ই-কমার্সের নামে লাইসেন্সবিহীন পিরামিড আকৃতির অনলাইনভিত্তিক মাল্টিলেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) পরিচালনা করে সাধারণ মানুষকে অধিক কমিশনের প্রলোভন দেখিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৬ অক্টোবর রাজধানীর কলাবাগান থানা এলাকার এফ হক টাওয়ারে অবস্থিত এসপিসি ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনা ডিবি। এ সময় চারজনকে আটক করা হয়। পরে কলাবাগান থানায় এ সংক্রান্ত একটি মামলা দায়ের করা হয়। মামলায় আটক চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।’
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার চারজনের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য মোতাবেক গতকাল সোমবার রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে এসপিসি ওয়ার্ল্ড লিমিটেডের ‘মূলহোতা’ আল আমিন প্রধান ও মো. জসীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি হ্যারিয়ার গাড়ি, দুটি পিকআপভ্যান, সার্ভারে ব্যবহৃত ছয়টি ল্যাপটপ, দুটি রাওটার, দুটি পাসপোর্ট ও বিভিন্ন কাগজপত্র জব্দ করা হয়।
ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের দেওয়া তথ্য ও কোম্পানির সার্ভারের তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে জানা যায়, এসপিসি ওয়ার্ল্ড লিমিটেড কোম্পানি চলতি বছরের প্রথম দিন ই-কমার্স লাইসেন্স নিয়ে যাত্রা শুরু করে। কোম্পানির এমডি ও সিইও আল আমিন প্রধান একসময় ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড কোম্পানিতে সক্রিয় ছিলেন। ডেসটিনি বন্ধ হয়ে গেলে দীর্ঘদিন গবেষণা করে সেটির ব্যবসা পদ্ধতি অনুসরণ করে এসপিসি ওয়ার্ল্ড লিমিটেড কোম্পানির মাধ্যমে প্রতারণা শুরু করেন।
এ কে এম হাফিজ আক্তার বলেন, ‘এ কোম্পানির প্রধান, ডিএমডি, ডিরেক্টর, অফিসার সম্মিলিতভাবে মাত্র ১০ মাস সময়ের মধ্যে সাধারণ মানুষের সরলতাকে পুঁজি করে উচ্চ কমিশনের প্রলোভন দেখিয়ে মোট ২২ লাখ ২৬ হাজার ৬৬৮ মেম্বার আইডি থেকে প্রায় ২৬৮ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ব্যবসা কার্যক্রম অনলাইন অ্যাপভিত্তিক হওয়ায় বাংলাদেশের বাইরেও ১৭টি দেশে তাদের প্রবাসী ও বিদেশি মিলিয়ে মোট পাঁচ লাখ মেম্বার রয়েছে বলেও তথ্য পাওয়া যায়।’
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) আরো বলেন, ‘কোম্পানির এমডি আল আমিন প্রধান ও কোম্পানির নামে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পাঁচটি গাড়ি, বিভিন্ন ব্যাংকে মোট আটটি অ্যাকাউন্ট রয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। তারা ই-কমার্সের কথা বলে সাধারণ জনগণকে লোভনীয় কমিশনের লোভ দেখিয়ে প্রতারণার ফাঁদে ফেলতেন।’