বৃহস্পতিবার থেকে আবার ইলিশ ধরা শুরু

  • Update Time : ১২:৫৪:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর ২০২০
  • / 208
নিজস্ব প্রতিবেদক:

ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে বুধবার (৪ নভেম্বর)। পরদিন বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) থেকে আবার ইলিশ ধরা শুরু। সারাদেশে ২২ দিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার থেকে সাগর ও নদনদীতে আবারও ইলিশ ধরার কার্যক্রম শুরু করবে জেলেরা। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে (১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত) মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ ছিল। সরকারের এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিলো মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ২২ দিনের সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে বুধবার (৪ নভেম্বর)।

বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশের নদনদীতে ইলিশের জাল ফেলতে কোনও প্রকার আইনি বাধা থাকছে না।
সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নৌ-পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও মৎস্য অধিদফতর সম্মিলিতভাবে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ৩৬টি জেলার ১৫২ উপজেলায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। জেলাগুলো হচ্ছে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, নরসিংদী, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, জামালপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর. চাঁদপুর, কক্সবাজার, খুলনা, বাগেরহাট, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা ও ঝালকাঠি।

ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময়ে সরকারের মানবিক খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় জেলেদের জন্য ১০ হাজার ৫৬৬ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ করা হয়। ৩৬টি জেলার ১৫২টি উপজেলায় মা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা ৫ লক্ষ ২৮ হাজার ৩৪২টি জেলে পরিবারের জন্য ২০ কেজি হারে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম শুরুর পূর্বেই এ বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে কোনওভাবেই দেশের জলসীমায় ইলিশ আহরণের অবৈধ প্রচেষ্টা সফল হতে দেওয়া হয়নি। ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্রে কোনওভাবেই মা ইলিশ আহরণ করতে দেওয়া হয়নি। মা ইলিশ থাকতে পারে এমন নদীতেও জেলেদের নামতে দেওয়া হয়নি।

মন্ত্রী বলেন, এ বছর বিশ্বে উৎপাদিত মোট ইলিশের ৮০ ভাগের বেশি বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়েছে। ইলিশের আকার ও স্বাদ অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক ভালো। সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে এবছর ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। এ উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি।

জানা গেছে, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়নে বিভিন্ন সময়ে মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসময় কারেন্ট জালসহ অবৈধ জাল আটক করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী জেলেদের বিভিন্ন মেয়াদে জেল প্রদান করা হয়েছে এবং জরিমানা করা হয়েছে। মামলা করা হয়েছে। ইলিশ মাছ আটক করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মোট উৎপাদিত মাছের প্রায় ১২ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে। দেশের জিডিপি’তে ইলিশের অবদান এক শতাংশেরও বেশি। সম্প্রতি পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদফতর বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশের ভৌগলিক নিবন্ধন প্রদান করেছে।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


বৃহস্পতিবার থেকে আবার ইলিশ ধরা শুরু

Update Time : ১২:৫৪:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ নভেম্বর ২০২০
নিজস্ব প্রতিবেদক:

ইলিশ আহরণে নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে বুধবার (৪ নভেম্বর)। পরদিন বৃহস্পতিবার (৫ নভেম্বর) থেকে আবার ইলিশ ধরা শুরু। সারাদেশে ২২ দিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার থেকে সাগর ও নদনদীতে আবারও ইলিশ ধরার কার্যক্রম শুরু করবে জেলেরা। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে (১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত) মোট ২২ দিন সারাদেশে ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুত, বাজারজাতকরণ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ ছিল। সরকারের এ উদ্যোগ বাস্তবায়নে প্রজ্ঞাপন জারি করেছিলো মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ২২ দিনের সেই নিষেধাজ্ঞা শেষ হবে বুধবার (৪ নভেম্বর)।

বৃহস্পতিবার থেকে সারাদেশের নদনদীতে ইলিশের জাল ফেলতে কোনও প্রকার আইনি বাধা থাকছে না।
সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের সঙ্গে নৌ-পুলিশ, কোস্ট গার্ড ও মৎস্য অধিদফতর সম্মিলিতভাবে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। ৩৬টি জেলার ১৫২ উপজেলায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করেছে। জেলাগুলো হচ্ছে ঢাকা, মানিকগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, নরসিংদী, শরিয়তপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, জামালপুর, চট্টগ্রাম, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর. চাঁদপুর, কক্সবাজার, খুলনা, বাগেরহাট, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, বরিশাল, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা ও ঝালকাঠি।

ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞার সময়ে সরকারের মানবিক খাদ্য সহায়তা কর্মসূচির আওতায় জেলেদের জন্য ১০ হাজার ৫৬৬ মেট্রিক টন ভিজিএফ চাল বরাদ্দ করা হয়। ৩৬টি জেলার ১৫২টি উপজেলায় মা ইলিশ আহরণে বিরত থাকা ৫ লক্ষ ২৮ হাজার ৩৪২টি জেলে পরিবারের জন্য ২০ কেজি হারে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম শুরুর পূর্বেই এ বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এ প্রসঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ইলিশ আহরণ নিষিদ্ধকালে কোনওভাবেই দেশের জলসীমায় ইলিশ আহরণের অবৈধ প্রচেষ্টা সফল হতে দেওয়া হয়নি। ইলিশের প্রজনন ক্ষেত্রে কোনওভাবেই মা ইলিশ আহরণ করতে দেওয়া হয়নি। মা ইলিশ থাকতে পারে এমন নদীতেও জেলেদের নামতে দেওয়া হয়নি।

মন্ত্রী বলেন, এ বছর বিশ্বে উৎপাদিত মোট ইলিশের ৮০ ভাগের বেশি বাংলাদেশে উৎপাদিত হয়েছে। ইলিশের আকার ও স্বাদ অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক ভালো। সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করে এবছর ইলিশ উৎপাদন হয়েছে। এ উৎপাদনের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি।

জানা গেছে, মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান বাস্তবায়নে বিভিন্ন সময়ে মোবাইল কোর্ট ও অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এসময় কারেন্ট জালসহ অবৈধ জাল আটক করা হয়েছে। নিষেধাজ্ঞা অমান্যকারী জেলেদের বিভিন্ন মেয়াদে জেল প্রদান করা হয়েছে এবং জরিমানা করা হয়েছে। মামলা করা হয়েছে। ইলিশ মাছ আটক করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের মোট উৎপাদিত মাছের প্রায় ১২ শতাংশ আসে ইলিশ থেকে। দেশের জিডিপি’তে ইলিশের অবদান এক শতাংশেরও বেশি। সম্প্রতি পেটেন্ট, ডিজাইন ও ট্রেডমার্কস অধিদফতর বাংলাদেশের জাতীয় মাছ ইলিশের ভৌগলিক নিবন্ধন প্রদান করেছে।