বিএনপি নেতাকর্মীদের কাছে অপ্রিয়, মানুষের কাছে কীভাবে প্রিয় হবে?

- Update Time : ০২:৪০:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ অক্টোবর ২০২০
- / 173
নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘বিএনপির নেতারা তাদের নেতাকর্মীদের কাছে অপ্রিয়, তারা দেশের মানুষের কাছে কীভাবে প্রিয় হবে’- প্রশ্ন রেখেছেন তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
রোববার (১১ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে চট্টগ্রাম বিভাগ সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত করোনাকালীন মৃত্যুবরণকারী চট্টগ্রাম বিভাগের ৬ সাংবাদিকের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতা শেষে তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপির নেতা নজরুল ইসলাম খানের মন্তব্য- ‘ফাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হবে’ এবং ‘মির্জা ফখরুলের বাসায় পচা ডিম নিক্ষেপ’ বিষয়ে সাংবাদিকরা দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি তো আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকেই বলে আসছে- এই সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, এই সরকারকে সময় দেয়া যাবে না। আর আমরা দেখছি, বিএনপি যখন সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের কথা বলছে, তখন তাদের দলের মধ্যেই আন্দোলন শুরু হয়ে গেছে।’
‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবের বাসায় নেতাকর্মীরা ঢিল আর পচা ডিম ছুঁড়েছে, উত্তরবঙ্গে মিটিং করতে গিয়ে তাদের দুই পক্ষ মারামারি করে মিটিং পণ্ড করে দিয়েছে- এভাবে যারা নিজেদের দলই সামলাতে পারে না, যারা নিজেদের কর্মীদের কাছে অপ্রিয়, তারা দেশের মানুষের কাছে কীভাবে প্রিয় হবে’ প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, ‘সুতরাং তাদের (বিএনপি) এ সমস্ত আন্দোলনের বুলি হচ্ছে ফাঁকা বুলি। আর মির্জা ফখরুল সাহেব আরও বলেছেন, সরকারকে আর কোনো সময় দেয়া হবে না। কিন্তু সরকারকে সময় দেয়ার মালিক হচ্ছে জনগণ। ফখরুল ইসলাম কোনোদিন সময় দিতে চাননি, কিন্তু জনগণ পরপর তিনবার শেখ হাসিনাকে সময় দিয়েছে এবং প্রায় ১২ বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতায় আছেন।’
‘বিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনে ৩০০ আসনে প্রায় ৯০০ নমিনেশন দিয়েছিল। এই ঘটনা বাংলাদেশের ইতিহাসে কখনও ঘটেনি এবং ভবিষ্যতেও ঘটবে কি না- সন্দেহ আছে’ উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের এ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘পত্র-পত্রিকার খবরে জানা গেছে, ৯০০ নমিনেশন দেয়ার কারণ হচ্ছে যার কাছ থেকে বেশি চাঁদা পাওয়া গেছে, তাকে নমিনেশন দেয়া হয়েছে। আবার সেই চাঁদার থেকে বেশি যে দিয়েছে, আগেরটা বাদ দিয়ে তাকে দেয়া হয়েছে। এবার উপনির্বাচনেও নিশ্চয় এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে, যার জন্য মনোনয়ন বঞ্চিতরা, পদ বঞ্চিতরা তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।’
‘আমি বিএনপিকে পরামর্শ দেব, আগে নিজের দলটা গোছানোর জন্য, নিজেদের কর্মীদের মধ্যে যে বিশৃঙ্খলা, যে বিক্ষোভ, সেটি আগে সামলানোর জন্য’, বলেন হাছান মাহমুদ।
এর আগে সভায় তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ এবং আমন্ত্রিত বক্তারা চট্টগ্রাম বিভাগে প্রয়াত ৬ সাংবাদিক- গেদুচাচা নামে খ্যাত আজকের সূর্যোদয় পত্রিকার প্রধান সম্পাদক খোন্দকার মোজাম্মেল হক, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার সাবেক প্রধান সম্পাদক ভাষাসৈনিক ডি পি বড়ুয়া, দৈনিক দেশবাংলার সাবেক সম্পাদক ও প্রকাশক ড. ফেরদৌস আহমেদ কোরেশী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি আব্দুস শহিদ, দৈনিক ইত্তেফাকের সম্পাদনা বিভাগের সাবেক প্রধান আবুল কালাম ও দৈনিক সময়ের আলোর সাবেক প্রধান প্রতিবেদক হুমায়ুন কবির খোকনের সাংবাদিকতায় অবদান স্মরণ করে তাদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান ও তাদের আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনায় অংশ নেন। তাদের স্মরণে সভায় এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
চট্টগ্রাম বিভাগ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মো. মোস্তফা কামালের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব শাহীন উল ইসলাম চৌধুরীর সঞ্চালনায় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ও দৈনিক যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে মহাসচিব শাবান মাহমুদ, জাতীয় প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ওমর ফারুক, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়া, দৈনিক স্বদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রতন, ৬ প্রয়াত জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকের পরিবারের সদস্যরা ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ সভায় অংশ নেন।