জলবায়ু জরুরি অবস্থা জারির আহ্বান

  • Update Time : ০৫:৪৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২০
  • / 213

জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে জলবায়ু জরুরি অবস্থা জারির আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শনিবার (১২ ডিসেম্বর) ‘ক্লাইমেট অ্যামবিশন’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

এতে অংশ নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে না পারলে তা ভবিষ্যতে করোনা মহামারির চেয়েও ভয়াবহতা ডেকে আনবে। যুক্তরাজ্য, চীন ও ফ্রান্সসহ ৭০ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
.
শিল্পকারখানা ধোঁয়া বাড়াচ্ছে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা, গলছে হিমবাহ, নানা দেশে বাড়ছে বন্যা, ডুবে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চল, দাবানলে পুড়ছে বনাঞ্চল। আর এসবই হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে। পরিবর্তন মোকাবিলায় ২০১৫ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে স্বাক্ষরিত হয় প্যারিস জলবায়ু চুক্তি। এই চুক্তি অনুযায়ী দেশগুলো বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে লক্ষ্য নির্ধারণ করে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি স্বাক্ষরের পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে শনিবার ‘ক্লাইমেট অ্যামবিশন’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
.
এর উদ্বোধনী বক্তব্যে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে জলবায়ু জরুরি অবস্থা জারির আহ্বান জানান। জাতিসংঘ বলছে, এ শতকে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক কার্বন নিঃসরণের হার ৭ দশমিক ৬ শতাংশ কমাতে হবে। তবে এই লক্ষ্য অর্জনে এ পর্যন্ত অগ্রগতি খুব কমই হয়েছে জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, চুক্তির লক্ষ্য অনুযায়ী এগোতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি ভঙ্গুর গ্রহে রেখে যেতে হবে।
.
এ সময় গুতেরেস বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ না করলে চলতি শতকেই গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হবে, যার পরিণতি হবে ভয়াবহ। বায়ুমণ্ডলে কার্বন জমা পড়ার হার শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত এই জরুরি অবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে।
.
এতে যোগ দিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা না গেলে তা করোনা মহামারির চেয়ে আরও বেশি ভয়াবহতা ডেকে আনবে।
.
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলও সবাইকে আহ্বান জানান জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ভূমিকা রাখার জন্য। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, সবাই মিলে চেষ্টা করলে সফল হওয়া সম্ভব, এতে সবাই লাভবান হবে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এ সময় কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমাতে নেওয়া নিজের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
.
এ ছাড়া এতে যোগ দেন ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশসহ ৭০ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। এতে যোগ দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়ংকর পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে উন্নত বিশ্বকে আর্থিক সহায়তা ও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে তার দেশ। আর ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, তার দেশ প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা ইতোমধ্যে পূরণ করে ফেলেছে।
.
এদিকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে আবারও যোগ দেওয়ার অঙ্গীকার করার জন্য ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে স্বাগত জানান। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ চুক্তি থেকে সরে এসেছিলেন।

Please Share This Post in Your Social Media


জলবায়ু জরুরি অবস্থা জারির আহ্বান

Update Time : ০৫:৪৭:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২০

জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে জলবায়ু জরুরি অবস্থা জারির আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। শনিবার (১২ ডিসেম্বর) ‘ক্লাইমেট অ্যামবিশন’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

এতে অংশ নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে না পারলে তা ভবিষ্যতে করোনা মহামারির চেয়েও ভয়াবহতা ডেকে আনবে। যুক্তরাজ্য, চীন ও ফ্রান্সসহ ৭০ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
.
শিল্পকারখানা ধোঁয়া বাড়াচ্ছে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা, গলছে হিমবাহ, নানা দেশে বাড়ছে বন্যা, ডুবে যাচ্ছে নিম্নাঞ্চল, দাবানলে পুড়ছে বনাঞ্চল। আর এসবই হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে। পরিবর্তন মোকাবিলায় ২০১৫ সালে ফ্রান্সের প্যারিসে স্বাক্ষরিত হয় প্যারিস জলবায়ু চুক্তি। এই চুক্তি অনুযায়ী দেশগুলো বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে লক্ষ্য নির্ধারণ করে। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি স্বাক্ষরের পাঁচ বছর পূর্তি উপলক্ষে শনিবার ‘ক্লাইমেট অ্যামবিশন’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
.
এর উদ্বোধনী বক্তব্যে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে জলবায়ু জরুরি অবস্থা জারির আহ্বান জানান। জাতিসংঘ বলছে, এ শতকে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে হলে ২০৩০ সালের মধ্যে বার্ষিক কার্বন নিঃসরণের হার ৭ দশমিক ৬ শতাংশ কমাতে হবে। তবে এই লক্ষ্য অর্জনে এ পর্যন্ত অগ্রগতি খুব কমই হয়েছে জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, চুক্তির লক্ষ্য অনুযায়ী এগোতে না পারলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি ভঙ্গুর গ্রহে রেখে যেতে হবে।
.
এ সময় গুতেরেস বলেন, প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ না করলে চলতি শতকেই গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হবে, যার পরিণতি হবে ভয়াবহ। বায়ুমণ্ডলে কার্বন জমা পড়ার হার শূন্যে নামিয়ে আনার লক্ষ্য অর্জিত না হওয়া পর্যন্ত এই জরুরি অবস্থা অব্যাহত রাখতে হবে।
.
এতে যোগ দিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করা না গেলে তা করোনা মহামারির চেয়ে আরও বেশি ভয়াবহতা ডেকে আনবে।
.
জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলও সবাইকে আহ্বান জানান জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ভূমিকা রাখার জন্য। চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেন, সবাই মিলে চেষ্টা করলে সফল হওয়া সম্ভব, এতে সবাই লাভবান হবে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো এ সময় কার্বন নিঃসরণের মাত্রা কমাতে নেওয়া নিজের নানা পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন।
.
এ ছাড়া এতে যোগ দেন ইতালি, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া বাংলাদেশসহ ৭০ দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। এতে যোগ দিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনের ভয়ংকর পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে উন্নত বিশ্বকে আর্থিক সহায়তা ও প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের তাগিদ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, প্যারিস জলবায়ু চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছে তার দেশ। আর ভুটানের প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছেন, তার দেশ প্যারিস চুক্তির লক্ষ্যমাত্রা ইতোমধ্যে পূরণ করে ফেলেছে।
.
এদিকে প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতে আবারও যোগ দেওয়ার অঙ্গীকার করার জন্য ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে স্বাগত জানান। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এ চুক্তি থেকে সরে এসেছিলেন।