ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন নাছির জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৯ নেতাকর্মী নিহত হয়েছেন।

বুধবার (২১ আগস্ট) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান তিনি।

নাছির উদ্দিন নাছির বলেন, ‘দেশবাসী এবং বিজয়ী ছাত্রজনতাকে জানাচ্ছি, গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৯ জন নেতাকর্মী শাহাদাত বরণ করেছেন। এই আন্দোলনে হাজারের অধিক ছাত্রজনতা শহীদ হয়েছেন। আমি আমাদের ছাত্রদলের ৪৯ জন শহিদসহ সব শহিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছি, তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি এবং তাদের জন্য জান্নাতুল ফেরদৌসের প্রার্থনা করছি।’

তিনি বলেন, ‘ছাত্রদল ২০০৭ সাল থেকে অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছে। ২০০৯ সাল থেকে শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজপথে সক্রিয় প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে ছাত্রদল। গণতান্ত্রিক সংগ্রামে আমাদের অসংখ্য সহযোদ্ধা গুম, খুন, ক্রসফায়ারের শিকার হয়েছে, আয়নাঘরে বন্দি হয়েছে। রিমান্ডে, কারাগারে নির্যাতনের শিকার হয়েছে। শত নির্যাতনের পরেও আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত ছিল। বিগত ষোলো বছরে আমরা একটি দিনের জন্যও আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে যাইনি।’

ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এবং দেশনায়ক তারেক রহমানের নেতৃত্বে ফ্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদল অগ্র-সৈনিকের ভূমিকা পালন করেছে। জনগণের সব নায্য দাবিতেও আন্দোলন গড়ে তুলেছে। আপনারা এখন জ্বালানি খাতে নজিরবিহীন দুর্নীতির খবর প্রকাশ করা শুরু করেছেন। কিন্তু আপনাদের মনে থাকার কথা, বিদ্যুতের লোডশেডিং এবং জ্বালানি খাতে ‘অব্যবস্থাপনার’ প্রতিবাদে বিগত ৩১ জুলাই ২০২২ অনুষ্ঠিত বিএনপির সমাবেশে পুলিশের গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ২০২২ সালের ৩ আগস্ট শহিদ হয়েছেন ভোলা জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলম।’

তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কারের দাবীতে শুরু হওয়া আন্দোলনে শুরু থেকেই ছাত্রদল পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে ছাত্রদলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা সাধারণ ছাত্রদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে আন্দোলনকে বেগবান করেছে। ১৬ জুলাই রংপুরে পুলিশের গুলিতে আবু সাঈদ শহিদ হয়েছেন। তার মৃত্যু পুরো দুনিয়াকে নাড়া দিয়েছে। একইদিন অর্থাৎ সারা বাংলাদেশ দ্বিতীয় এবং ছাত্রদলের প্রথম চট্টগ্রাম কলেজ শাখা ছাত্রদলের সদস্য ওয়াসিম আকরাম শহিদ হয়েছেন। শহিদ হয়েছেন মাগুরা জেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাব্বি।’

নাছির উদ্দিন বলেন, ‘নব্বইয়ের স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন, এক এগারোর আন্দোলন এর ধারাবাহিকতায় স্বৈরশাসকের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের ভ্যানগার্ড হিসেবে ছাত্রদল এবারও পূর্ণশক্তি নিয়ে শেখ হাসিনার পতনের আন্দোলনে ছাত্রজনতার সঙ্গে শামিল হয়েছিল, যেই আন্দোলনে পরাজিত হয়ে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এই আন্দোলনে ছাত্রদলের ২১০০ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার হয়েছে, যাদের সবাই হেফাজতে পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়েছে।’