ঢাবিতে প্রত্যয় স্কিম প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি
- Update Time : ০২:৩৮:১২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪
- / 56
জাননাহ, ঢাবি প্রতিনিধি
সর্বজনীন পেনশন স্কিম সংক্রান্ত ‘বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন’ প্রত্যাহার ও পূর্বের পেনশন স্কিম চালু রাখার দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি শুরু করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ।
রোববার (৩০ জুন) সকাল থেকেই তারা এ কর্মবিরতি শুরু করেন । কর্মবিরতির অংশ হিসেবে আজ সারাদিন জরুরি কাজ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের দাপ্তরিক কাজ বন্ধ রাখবেন।
কর্মবিরতির শুরুতেই সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিতে থাকেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর আগে প্রশাসনিক ভবনের বিভিন্ন দপ্তরের সামনে মিছিল করেন তারা। পরে বেলা সোয়া ১১টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে অপরাজেয় বাংলার সামনে আসেন।
এসময় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে- ‘বঙ্গবন্ধুর বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’, ‘বৈষম্যের প্রজ্ঞাপন বাতিল করো করতে হবে’, ‘সর্বজনীন পেনশন, মানি না মানবো না’, ‘শেখ হাসিনার বাংলায়, প্রত্যয়ের ঠাঁই নাই’ স্লোগান দিতে থাকেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক ও অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আব্দুল মোতালেব বলেন, যেখানে আমাদের জন্য নতুন পে স্কিম দেবে সেখানে উল্টো চাপিয়ে দেওয়া হলো প্রত্যয় নামের বৈষম্যমূলক স্কিম। এটা মানুষ যাতাকলে মারার মতো। আমরা সরকারের সার্বজনীন পেনশনকে স্বাগত জানিয়েছিলাম। কারণ যারা জনসাধারণ, প্রবাসী, দিনমজুর তারা শেষ বয়সে কিছু টাকা হাতে পেলে তাদের সুবিধা হবে। কিন্তু এই প্রত্যয় স্কিমের মাধ্যমে আমাদের উপর জুলুম চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমরা এই স্কিম বাতিলের আগ পর্যন্ত আন্দোলন ছাড়বো না।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদের নেতারা বলেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন সব শ্রেণির কর্মচারীর মধ্যে যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে, তা সবকিছুকে বাজে পরিস্থিতির দিকে নিয়ে যাবে। এমন একটি বৈষম্যমূলক প্রজ্ঞাপন জারির ফলে সারাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের মধ্যে চরম হতাশা ও অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হয়েছে তা কেবল আমাদের যৌক্তিক দাবি তথা প্রত্যয় স্কিম বাতিলের মধ্য দিয়েই নিরসন সম্ভব। অন্যথায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আরও কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
তারা বলেন, এই প্রজ্ঞাপন কার্যকর হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত কর্মচারী চরম বৈষম্যের শিকার হবেন। একই বেতন স্কেলের আওতাধীন কর্মচারীদের জন্য ভিন্ন নীতি সংবিধানের মূল চেতনার সঙ্গেও সাংঘর্ষিক। কর্মচারীদের প্রতি এই বৈষম্যমূলক পদক্ষেপের ফলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নত রাষ্ট্র গঠনের স্বপ্ন বাস্তবায়ন ব্যাহত হবে। কেননা, এর ফলে যোগ্য ও দক্ষ জনবল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চাকরি করতে আগ্রহী হবেন না। সুতরাং এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে অবিলম্বে আমাদের দাবি মেনে নিয়ে প্রত্যয় স্কিম বাতিল করতে হবে।
পরিষদের নেতাকর্মীরা বলেন, আজ বিকেল ৫টা পর্যন্ত আমরা অবস্থান, বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাবো। এরপরও দাবি না মানা হলে আমরা আরও কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো। আমরা এই বৈষম্যমূলক প্রত্যয় স্কিম বাতিল চাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারী সমিতি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কারিগরি কর্মচারী সমিতি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ’ সম্মিলিতভাবে এই প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।