খেলাপি ঋণ আদায় এখন বড় চ্যালেঞ্জ

  • Update Time : ১২:৪০:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৩
  • / 313

নিজস্ব প্রতিবেদক

খেলাপি ঋণ আদায় করাই ব্যাংকিং খাতের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তাই ব্যাংকগুলোকে এদিকেই সর্বোচ্চ মনোযোগ দেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের। এদিকে, ইচ্ছেকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা চান ব্যাংকররা। বলছেন, খেলাপি নিয়ন্ত্রণে দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গত জুন পর্যন্ত হিসাব বলছে, দেশে মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকাই খেলাপি। যা মোট ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। এক বছর আগে অর্থাৎ ২০২২ সালের জুনে এই হার ছিল ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

তবে খেলাপি ঋণের এই হিসাব থেকে বাদ দেয়া হয়েছে অবলোপনকৃত ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ। এর বাইরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা, ঋণ পুনঃতফসিল, পুনর্গঠনসহ মেয়াদ বাড়িয়ে নেয়ায় খেলাপির ঝুঁকিতে থাকা অনেক ঋণই নিয়মিত দেখানো হচ্ছে।
ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন দৃষ্টান্তমূলক শস্তি, তবে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

এমটিবিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, “যারা প্রথম থেকে বড় বড় খেলাপী হচ্ছিলেন এবং যখন বুঝতে পাড়া যায় তখন উচিত ছিল লাগাম টানা। তখন টানতে পারেনি এখনও টানতে পারছিনা। এটা কমানোর জন্য দরকার রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা। সে যতো কাছেরই হোক না কেন খেলাপী হলেই তার শাস্তি পাওয়া উচিত।”

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ব্যাংকিং খাতের ক্ষতি যা হওয়ার আগেই হয়ে গেছে, এখন প্রকৃত চিত্রটা জানা যাচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে খেলাপি আদায়ে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে ঋণ বিতরণে।

পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “খেলাপী অনেক আগেই হয়ে গেছে। এখন আমরা জানতে পারছি খেলাপির পরিমাণ কতোটা। সেটাও ঠিক মতো পাচ্ছিলাম না, কেননা আইন করে, বিভিন্ন রি-সিডিউল করে এটা চাপিয়ে রাখা হয়। আইএমএফের চাপে সব কিছু জানা যাচ্ছে।”

ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে যারা বিদেশে পাচার করে পালিয়ে গেছে, সেগুলো পুনরুদ্ধার খুবই কঠিন বলছেন বিশ্লেষকরা।

Tag :

Please Share This Post in Your Social Media


খেলাপি ঋণ আদায় এখন বড় চ্যালেঞ্জ

Update Time : ১২:৪০:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৩

নিজস্ব প্রতিবেদক

খেলাপি ঋণ আদায় করাই ব্যাংকিং খাতের জন্য এখন বড় চ্যালেঞ্জ। তাই ব্যাংকগুলোকে এদিকেই সর্বোচ্চ মনোযোগ দেয়ার পরামর্শ অর্থনীতিবিদদের। এদিকে, ইচ্ছেকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা চান ব্যাংকররা। বলছেন, খেলাপি নিয়ন্ত্রণে দরকার রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গত জুন পর্যন্ত হিসাব বলছে, দেশে মোট বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ১৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৫৫ কোটি টাকা। এরমধ্যে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৩৯ কোটি টাকাই খেলাপি। যা মোট ঋণের ১০ দশমিক ১১ শতাংশ। এক বছর আগে অর্থাৎ ২০২২ সালের জুনে এই হার ছিল ৮ দশমিক ৯৬ শতাংশ।

তবে খেলাপি ঋণের এই হিসাব থেকে বাদ দেয়া হয়েছে অবলোপনকৃত ৫০ হাজার কোটি টাকারও বেশি ঋণ। এর বাইরে আদালতের নিষেধাজ্ঞা, ঋণ পুনঃতফসিল, পুনর্গঠনসহ মেয়াদ বাড়িয়ে নেয়ায় খেলাপির ঝুঁকিতে থাকা অনেক ঋণই নিয়মিত দেখানো হচ্ছে।
ব্যাংকিং খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে প্রয়োজন দৃষ্টান্তমূলক শস্তি, তবে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন রাজনৈতিক সদিচ্ছা।

এমটিবিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, “যারা প্রথম থেকে বড় বড় খেলাপী হচ্ছিলেন এবং যখন বুঝতে পাড়া যায় তখন উচিত ছিল লাগাম টানা। তখন টানতে পারেনি এখনও টানতে পারছিনা। এটা কমানোর জন্য দরকার রাজনৈতিক স্বদিচ্ছা। সে যতো কাছেরই হোক না কেন খেলাপী হলেই তার শাস্তি পাওয়া উচিত।”

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ব্যাংকিং খাতের ক্ষতি যা হওয়ার আগেই হয়ে গেছে, এখন প্রকৃত চিত্রটা জানা যাচ্ছে। ব্যাংকগুলোকে খেলাপি আদায়ে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিতে হবে। সতর্ক থাকতে হবে ঋণ বিতরণে।

পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, “খেলাপী অনেক আগেই হয়ে গেছে। এখন আমরা জানতে পারছি খেলাপির পরিমাণ কতোটা। সেটাও ঠিক মতো পাচ্ছিলাম না, কেননা আইন করে, বিভিন্ন রি-সিডিউল করে এটা চাপিয়ে রাখা হয়। আইএমএফের চাপে সব কিছু জানা যাচ্ছে।”

ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে যারা বিদেশে পাচার করে পালিয়ে গেছে, সেগুলো পুনরুদ্ধার খুবই কঠিন বলছেন বিশ্লেষকরা।